বিস্ময় বালক

খুব বেশি চাওয়া নেই সরফরাজ খানের। বাবার কাছে একটা মোবাইল ফোন চায় সে। এমন কীর্তির পর স্রেফ একটা মোবাইল! বাবা কথা দিয়েছেন, শিগগিরই কিনে দেবেন পুত্রধনকে।কী এমন করেছে সরফরাজ? বড় কিছুই করেছে। ভারতের ১১৩ বছরের পুরোনো স্কুল ক্রিকেটের টুর্নামেন্ট হ্যারিস শিল্ডে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছে। সরফরাজ করেছে ৪৩৯ রান। ৪২১ বলের এই ইনিংসটায় ছিল ৫৬টি চার ও ১২টি ছয়। এই টুর্নামেন্টে আগের সর্বোচ্চ ইনিংসের রেকর্ড ছিল রমেশ নাগদেবের, সেটিও ১৯৬৩-৬৪ মৌসুমের। নাগদেব করেছিলেন অপরাজিত ৪২৭ রান।তবে নাগদেব নয়, এ টুর্নামেন্ট আলোচিত শচীন টেন্ডুলকারের কারণে। স্কুল ক্রিকেটে এ টুর্নামেন্টেই বন্ধু বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে ৬৬৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়েছিলেন টেন্ডুলকার। কাম্বলি অপরাজিত ছিলেন ৩৪৯ রানে, ৩২৬ রানে টেন্ডুলকার। ১৯৮৮ সালে আজাদ ময়দানে সেন্ট জেভিয়ার্সের বিপক্ষে সারদাশ্রম বিদ্যামন্দিরের টেন্ডুলকার-কাম্বলির এই কীর্তির গল্প ছড়িয়ে গিয়েছিল মানুষের মুখে-মুখে। টেন্ডুলকারকে ক্রিকেট বিশ্ব প্রথম চিনেছে সেই ইনিংস দিয়েই। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৫ বছর। পরের বছরই হয়ে গিয়েছিল আন্তর্জাতিক অভিষেক। ওয়াসিম জাফরও নিজেকে প্রথম চেনান এ টুর্নামেন্টে ৪০০ রান করে।টেন্ডুলকারের চেয়ে তিন বছর কম বয়সেই, বারোতেই টেন্ডুলকার তো বটেই, ঐতিহ্যবাহী এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টে সবার রেকর্ড ছাড়িয়ে গেল সরফরাজ। তবে রিজভি স্প্রিংফিল্ড স্কুলের এই কিশোর জানিয়েছে, টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে যাওয়াতেই সবচেয়ে আনন্দ তার। পরশু ২৩৫ রানে অপরাজিত থেকে দিন শুরু করা সরফরাজকে টেন্ডুলকারের ইনিংসটার কথা জানিয়েছিলেন তার বাবা নওশাদ খান। ‘বাবা আমাকে বলেছিলেন, টেন্ডুলকারের ওই স্কোর ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত আমার। আমি ২৩৫ রানে অপরাজিত ছিলাম। তা ছাড়া ক্রস ময়দানের একটা দিকের বাউন্ডারি সীমানা ছোটই ছিল। আমার মনে হয়েছিল, এটা সম্ভব’—রেকর্ড ভাঙার পর বলেছে মুম্বাইয়ের এ কিশোর।সেই সম্ভবটা পরশু দিনের প্রথম সেশনেই করে দেখায় সরফরাজ। লাঞ্চের পর পরই পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে নিজের নামের পাশে যোগ করে আরও ২০৪ রান। পুত্রের এই কীর্তিতে গর্বে ভেসে যাওয়া বাবা নওশাদ জানিয়েছেন, ‘ও আমাকে গর্বিত করেছে। আমি ওর চাওয়া পূরণ করে দেব।’সবচেয়ে বিস্ময়কর তথ্য দিলেন সরফরাজের দলের কোচ রাজু পাঠক, ‘হ্যারিস শিল্ডে এটাই ছিল সরফরাজের অভিষেক ম্যাচ। বিশ্বাস করা যায়?’বিশ্বাস করতে কষ্টই হয় বৈকি! ওয়েবসাইট।