যে প্রেক্ষাপটে ক্রাইস্টচার্চে বাংলাদেশের বিপক্ষে নামছে নিউজিল্যান্ড, সেটা সাম্প্রতিক সময়ে পরিচিত নয় তাদের কাছে। দেশের মাটিতে ১-০–তে পিছিয়ে থেকে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে তারা নেমেছিল সর্বশেষ ২০১৬ সালে, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে ঘরের মাঠে সিরিজ হেরেছিল নিউজিল্যান্ড, তবে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সেবার তিন টেস্ট সিরিজের প্রথমটি হয়েছিল ড্র।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে উইকেটে সেভাবে ঘাস ছিল না, গতি থাকলেও বাউন্সের দেখা মেলেনি সেভাবে। হ্যাগলি ওভালে অবশ্য উইকেটে সবুজের অভাব থাকবে না বলেই মনে হচ্ছে। এখনো উইকেট না দেখলেও বাংলাদেশের হেড কোচ রাসেল ডমিঙ্গো বলছেন, এ ম্যাচের আগে চাপে থাকবে নিউজিল্যান্ড। এবার কন্ডিশন একটু আলাদা হলেও সবুজ উইকেটে বাংলাদেশ ভীত নয়, বরং পেসাররা সেখানে বোলিং করতে মুখিয়ে আছেন বলেই জানিয়েছেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডকে এমন পরিস্থিতিতে দেখে ডমিঙ্গোর পর্যবেক্ষণ, ‘নিউজিল্যান্ড মানসম্পন্ন দল, তারা এই পরাজয়ে আহত। তবে দ্বিতীয় ম্যাচের আগে একটু নার্ভাস থাকবে। বিরতিও খুব বেশি পায়নি, এক-দুটি পরিবর্তন নিয়ে হয়তো মাঠে নামবে। তবে তাদের সেরা খেলাটাই খেলতে হবে। জয় নিয়ে সিরিজ ড্র করতে চাইবে। অবশ্য ঘরের মাঠ বলে একটু চাপেও থাকবে।’
নিউজিল্যান্ড চাপে থাকলেও বাংলাদেশ আছে উজ্জীবিতই। প্রথম টেস্টে ইবাদত হোসেনের দুর্দান্ত বোলিং তাঁকে এনে দিয়েছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। হ্যাগলি ওভালেও ইবাদতদের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় আছেন ডমিঙ্গো, ‘আমার মনে হয় না তিন দিন ধরে ইবাদতের হাসি থেমেছে। সে দারুণ একটা ছেলে। সে যা অর্জন করেছে, তার জন্য আমি খুবই খুশি। তবে তারা (পেসাররা) অনেক উজ্জীবিত। তারা জানে, ঘরের মাঠে খুব একটা সুবিধা পাবে না এবং সেখানে স্পিনাররাই ৯০ শতাংশ বল করে। এই কন্ডিশনে খেলার জন্য তাই তারা অনেক উন্মুখ হয়ে আছে। আশা করি ভালো করবে।’
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে গুরুত্বপূর্ণ টসে জিতেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক। ক্রাইস্টচার্চের এ মাঠেও টসটাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করছেন ডমিঙ্গো, ‘টস অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। পরিসংখ্যান বলে, গত ১০ ম্যাচে মাত্র ১টি ম্যাচ জিতেছে আগে ব্যাট করা দল (৮ ম্যাচে ২ বার জিতেছে আগে ব্যাটিং করা দল, তবে টসে জিতে এখন পর্যন্ত কেউ ব্যাটিং নেয়নি)। এখানে প্রথম ইনিংসে ২৬০-২৭০ (২৮২) রান হয়। নতুন বল ব্যবহারের জন্য প্রথম দিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ। নিউজিল্যান্ড টস জিতলে বোলিং করতে চাইবে, আমরাও চাইব।’
তবে পেসারদের নিয়ে বেশ আত্মবিশ্বাসী ডমিঙ্গো, ‘আমি এখনো পিচ দেখিনি। ডানেডিন, ওয়েলিংটন ও হ্যামিল্টনে এর আগে গেলেও ক্রাইস্টচার্চে কোনো টেস্টের জন্য আমার আসাও হয়নি আগে। এই উইকেটে পেসাররা অনেক বেশি সুবিধা পায়, হয়তো তাউরাঙ্গার চেয়ে বেশি সহায়তা পাবে। এটাও আমাদের সুবিধা দেবে। আমাদের কয়েকজন মানসম্পন্ন পেসার আছে। খুব কম সময়ই বাংলাদেশ ঘাসের উইকেটে সুবিধা নেওয়ার কথা ভাবতে পারে। আমাদের তিন পেসার অনেক উঁচু মানের, তারা আত্মবিশ্বাসী। শুরুতে বোলিং করে কিছু উইকেট নিতে পারলে আশা করি, তাদের ঘায়েল করতে পারব।’
এদিকে মাউন্ট মঙ্গানুইয়ের সঙ্গে আবহাওয়ার পার্থক্যটা টের পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ফাস্ট বোলার তাসকিন আহমেদ, ‘গতকাল বৃষ্টির জন্য আমাদের অনুশীলন সেশনটি হয়নি। তবে আমরা ভালো জিম সেশন করেছি। আজকের অনুশীলনটা ভালো ছিল। আর আবহাওয়া একটু আলাদা। ঠান্ডাটা একটু বেশি, বাতাসটা একটু শক্তিশালী। তবে আজ অনুশীলনে আমরা যতটুকু পেরেছি মানিয়ে নিয়েছি। এখন আমরা আশাবাদী।’