কে সেধে বাঘকে নিজের বাসায় নিমন্ত্রণ করে?
না চাইলেও সেল্টিককে সেটাই করতে হচ্ছে। এ মুহূর্তে বার্সেলোনা যেমন খেলছে, তাতে যেকোনো দলই তাদের এড়িয়ে যেতে চাইবে। কিন্তু আজ সেল্টিককে নিজেদের মাঠে আতিথ্য দিতে হচ্ছে বার্সেলোনাকে। দুই সপ্তাহ বিরতির পর আজ চ্যাম্পিয়নস লিগের এই পর্বে আরও বেশ কিছু আগ্রহ-জাগানিয়া ম্যাচ আছে। একসময়কার দুই পরাশক্তি এসি মিলান ও আয়াক্স আজ মুখোমুখি। তবে দিনের সবচেয়ে জমজমাট ম্যাচের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে আর্সেনাল-নাপোলি।
নিজেদের কীর্তিই অনেক সময় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়ায়। সেল্টিক কোচ নিল লেননের ক্ষেত্রেও হয়েছে তা-ই। গত বছর সেল্টিক বিশ্বকে চমকে দিয়ে বার্সাকে হারিয়ে দিয়েছিল ২-১ গোলে। সেই জয়টা এক দিকে যেমন প্রেরণার, আরেক দিকে আবার আশঙ্কার চোরাস্রোতের উৎসও বটে।
লেনন তাই বলেই ফেললেন, ‘সম্ভবত (বার্সা) এই বছর আরও ভালো, এখনো অপরাজিত। একটা পাল্টা চড়ের ভয় আমার মাথায় তাই পুরোপুরিই আছে। গত বছর কী হয়েছিল, এটা নিশ্চয়ই ওদের মাথায়ও আছে।’ গোলরক্ষক ফ্রেজার ফরস্টার অতিমানব হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বলেই বার্সা-বধের কাব্য লিখতে পেরেছিল সেল্টিক। এবারও সে রকম কিছুর প্রত্যাশা থাকলেও সেটি মনেই রাখছেন লেনন।
সেল্টিক কোচের কথাটা নিজেদের ভারমুক্ত রাখার কোনো কৌশলও হয়তো হতে পারে। কারণ এরপরই যে লেনন বলছেন, ‘বেশির ভাগ মানুষ মনে করে, আমরা এটা (বার্সাকে হারানো) করতে পারব না, কারণ বাজ দুবার কারও মাথায় পড়ে না। কিন্তু আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে এই ম্যাচ থেকে আমরা কিছু একটা পেতে পারি।’ একটা ‘সুখবর’ কিন্তু এর মধ্যেই পেয়ে গেছেন, চোটের কারণে নামছেন না লিওনেল মেসি।
পরের রাউন্ডে উঠতে হলে এই ম্যাচে ‘কিছু একটা’ প্রয়োজনও সেল্টিকের। প্রথম ম্যাচে যে মিলানের কাছে হারতে হয়েছে। মিলানের আজকের প্রতিপক্ষ আয়াক্স। একসময় দুই ক্লাবের খেলা মানেই ছিল মহারণের আমেজ। ইতালি ও হল্যান্ডের দুই পরাশক্তি মিলে জিতেছে ১১টি ইউরোপিয়ান শিরোপা। আয়াক্সের সর্বশেষ ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের সুখস্মৃতিটা তো মিলানের ‘কল্যাণে’ই। ১৯৯৫ সালের ফাইনালে মিলানকে ১-০ গোলে হারিয়েই শিরোপা জিতেছিল আয়াক্স। সেই ম্যাচে আয়াক্সের খেলোয়াড় ফ্রাঙ্ক ডি বোর এখন ডাচ ক্লাবটির কোচ।
মিলানের বিপক্ষে অবশ্য এর চেয়েও টাটকা একটা সুখস্মৃতি আছে ডি বোরের। তিন বছর আগে মিলানের মাঠে ২-০ গোলে জিতেছিল ডি বোরের আয়াক্স। আজ নিজেদের মাঠে খেলা, সেই স্মৃতি গায়ে মেখে আয়াক্স তাই উজ্জীবিতই থাকবে। প্রথম ম্যাচে বার্সার কাছে ৪-০ গোলের বিশাল ব্যবধানে হারলেও সেটি সেই ম্যাচের গতিপ্রকৃতির প্রকৃত প্রতিফলন নয়।
ইউরোপিয়ান অঙ্গনে নামে বড় হতে না পারে, তবে আজ সবচেয়ে বেশি রোমাঞ্চ ছড়াতে পারে আর্সেনাল-নাপোলি দ্বৈরথ। দুই দলই আছে দুর্দান্ত ফর্মে। ইংল্যান্ডে আর্সেনাল সবার ওপরে, ইতালিতে নাপোলি দুইয়ে। অনেকবারের মতো আবারও ডাগ-আউটে মুখোমুখি ওয়েঙ্গার-বেনিতেজ। এমিরেটসে হাত মেলানোর সময় মেসুত ওজিল ও গঞ্জালো হিগুয়েইনকে নিশ্চয়ই ছুঁয়ে যাবে পুরোনো স্মৃতি। গত মৌসুমেও দুজন ছিলেন রিয়াল মাদ্রিদ সতীর্থ। আজ ওজিল আর্সেনালের, হিগুইয়েন নাপোলির। এএফপি।
আ জ মু খো মু খি
বাসেল : শালকে
স্টুয়া বুখারেস্ট : চেলসি
ডর্টমুন্ড : মার্শেই
আর্সেনাল : নাপোলি
জেনিত : অস্ট্রিয়া ভিয়েনা
পোর্তো : অ্যাটলেটিকো
আয়াক্স : মিলান
সেল্টিক : বার্সেলোনা
* আগে স্বাগতিক দল