স্পিনাররা ইংল্যান্ডে 'তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক'

সোয়ানের অভিযোগ, মঈনদের উন্নতিতে কোনো অবদান নেই ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের। ছবি: প্রথম আলো
সোয়ানের অভিযোগ, মঈনদের উন্নতিতে কোনো অবদান নেই ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের। ছবি: প্রথম আলো

কঠিন এক পরীক্ষা দিতে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। ভারতের বিপক্ষে ৫ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু হচ্ছে ৯ তারিখ। ভারতের স্পিন-বান্ধব পিচে ইংল্যান্ড লড়াই করতে পারবে তো? বাংলাদেশ তাদের টেস্টেও যেভাবে ভোগাল, অনেকেরই ধারণা, ধবল ধোলাই হতে চলেছে ইংল্যান্ড। সাবেক ইংলিশ অফ স্পিনার গ্রায়েম সোয়ানও তা-ই ভাবছেন। কারণও ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। উপমহাদেশে এসে ভালো করতে হলে স্পিন ভালো করতে ও খেলতেই হবে। অথচ ইংল্যান্ডে স্পিনারদের গুরুত্বই নাকি দেওয়া হয় না।
গত কয়েক দশকে ইংলিশ সংস্কৃতিতে গ্রায়েম সোয়ান একটি ব্যতিক্রমী নাম। পেস-নির্ভর ইংল্যান্ড দলে অফ স্পিনার হয়েও অসংখ্য বার জয়ের নায়ক হয়েছেন। ৬০ টেস্টে ২৫৫ উইকেটই বলে দিচ্ছে কতটা দুর্দান্ত ছিলেন। ২০১২ সালে ভারতে এসে ২-১ ব্যবধানে ইংল্যান্ডের সিরিজও জিতে গেছে। জয়ের‍ বড় কারণ ছিলেন সোয়ান ও মন্টি পানেসার। দুজনে মিলে ৩৭ উইকেট পেয়েছিলেন সেবার।
কিন্তু ইংল্যান্ড দলে এখন ভালো কোনো স্পিনার নেই। সোয়ান এতে ইংল্যান্ডের ক্রিকেট সংস্কৃতির দোষ দেখছেন, ‘আমি আর মন্টি (পানেসার) একেবারেই ব্যতিক্রম। আমরা নর্দাম্পটনশায়ারে বড় হয়েছি, যেখানকার পিচে বল অনেক স্পিন হয়। কিন্তু আমি নটিংহ্যাম্পশায়ারে চলে এসেছিলাম পেস-বান্ধব উইকেটেও ভালো বোলার হতে চেয়েছি বলে। আমাদের দেশে স্পিনকে গুরুত্বই দেওয়া হয় না। আবার যখন উপমহাদেশে যাই তখন কান্নাকাটি করি বিশ্বমানের স্পিনার নেই বলে।’
সদ্য সমাপ্ত বাংলাদেশ সিরিজেও স্পিনাররা ভুগিয়েছে ইংল্যান্ডকে। সোয়ানের ধারণা, ভারতেও সেটাই ঘটবে এবং ৫-০ ব্যবধানেই হারবে ইংলিশরা, ‘আমাদের দারুণ সব খেলোয়াড়ে ভরা দুর্দান্ত এক দল আছে, তবু ভারতে হারব আমরা ঠিক ২০ বছর আগের মতো (১৯৯৩ সালে ভারত সফরে ৩ টেস্টের সিরিজে ধবল ধোলাই হয়েছিল ইংল্যান্ড)।’
ইংল্যান্ডের সমস্যা হলো স্পিনারদের ঠিকভাবে পরিচর্যা করছে না তারা। পেসারদের দিকে বেশি নজর দিতে গিয়ে স্পিনারদের উন্নতির কোনো ব্যবস্থাই রাখছে না ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড। এমনটাই মনে করেন সোয়ান, ‘সমস্যাটা হলো, স্পিনারদের সঙ্গে তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকের মতো আচরণ করি আমরা। স্পিনারদের সমর্থন দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই সেখানে। কাউন্টি ক্রিকেট খেলার শুরু থেকে যেদিন তারা টেস্ট খেলে—সেখানেও। ব্যাটিংয়ের জন্য আছে, বোলিং, ফিল্ডিং, ফিটনেস, পুষ্টি—সবকিছুর জন্যই কিছু না কিছু আছে, শুধু স্পিনারদের জন্য কিছু নেই। এ কারণেই আমরা স্পিন বাজে খেলি।’
তাই সিরিজ শুরুর আগেই নিজের দলকে হারিয়ে দিচ্ছেন সোয়ান। কারণ তাঁর দল স্পিনারদের গুরুত্ব না দিলেও ভারত তো আর সে ভুল করছে না। ভারতের বোলিং আক্রমণটা তো সাজানো হচ্ছে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজাকে ঘিরে। এ দুজনের ফর্ম সোয়ানকে ভীতই করে তুলছে, ‘অশ্বিন ও জাদেজা যেভাবে বল করছে, মনে হয় না আমাদের কোনো সুযোগ আছে।’