চলে গেলেন ক্রুইফ সতীর্থ কাইজার

পিট কাইজার ১৯৪৩–২০১৭
পিট কাইজার ১৯৪৩–২০১৭

হঠাৎ বিদায় নেওয়াই যেন তাঁর অভ্যাস। ১৯৭৪-এর অক্টোবরে সে সময়ের আয়াক্স কোচ হ্যানস ক্রের সঙ্গে ট্যাকটিকস নিয়ে একটু লেগে গিয়েছিল, সেই অভিমানে মাত্র ৩১ বছর বয়সে হুট করে অবসর! কিন্তু পিট কাইজার জীবনের মঞ্চ থেকেও এভাবে হঠাৎ বিদায় নেবেন, কে ভেবেছিল! গত পরশু সবার অগোচরেই ৭৩ বছর বয়সে পরলোকে পাড়ি জমান আয়াক্স ও হল্যান্ড কিংবদন্তি।
ফুসফুসের ক্যানসারে ভুগছিলেন অনেক দিন ধরে। কিন্তু সেটি যে এত গুরুতর পর্যায়ে চলে গেছে, পরিবারের বাইরে খুব বেশি মানুষকে সেটি টের পেতে দেননি। কাইজারের মৃত্যুর পর যা জানা গেল সাবেক হল্যান্ড গোলকিপার এডউইন ফন ডার সারের কাছ থেকে, ‘এক সপ্তাহ আগেই আমরা অল্প কয়েকজন জানতে পারি ক্যানসারে আক্রান্ত পিটের শেষ সময় এসে গেছে। পিট ও তাঁর পরিবারের অনুরোধেই কাউকে জানাইনি।’
হয়তো তিনি এমনই। খ্যাতির আড়ালে থাকাই তাঁর পছন্দ। যে কারণে হয়তো ক্রুইফের পাশে আলো ছড়ানোর পরও ক্রুইফের মতো করে আলোচনায় তিনি থাকেন না। কিন্তু ফুটবল ইতিহাসে যতবার ক্রুইফের নাম আসবে, কাইজারের নামও ততবারই আসবে। ষাটের দশকে কিংবদন্তি কোচ রাইনাস মিশেলের মস্তিষ্কপ্রসূত যে ‘টোটাল ফুটবল’ আয়াক্সের মাঠে সৌরভ ছড়িয়েছিল, যে সৌরভ পরে হল্যান্ড জাতীয় দল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বজুড়ে...ক্রুইফের পাশাপাশি সেটিতে প্রাণের সঞ্চার করেছেন কাইজারও। দুই উইংয়ে কাইজার ও সিয়াক সোয়ার্ত, সঙ্গে ক্রুইফ—গড়ে উঠেছিল বিধ্বংসী এক ত্রয়ী। ১৯৭০-৭৩—টানা তিন বছর আয়াক্সকে তিনটি ইউরোপিয়ান কাপও জেতানো ত্রিমূর্তি।

ওই সময় ক্রুইফ না কাইজার—কে বেশি ভালো সেই তর্কও হতো। এ নিয়ে ডাচ লেখক নিকো শিপমেকারের একটা কথাও কিংবদন্তি হয়ে আছে, ‘ইয়োহান ক্রুইফ সেরা, কিন্তু পিট কাইজার তাঁর চেয়েও ভালো!’ সর্বদাই তুলনা চলে যে দুজনের, ঘটনাচক্রে সেই দুজনকেই কেড়ে নিল ক্যানসার। শুধু এক বছর এদিক-ওদিক। ক্রুইফকে গত বছরের মার্চে, কাইজারকে পরশু।

কে জানে, হয়তো ফুটবল মাঠের সঙ্গীকে স্বর্গে বেশি মিস করছিলেন ক্রুইফ! ফোরফোরটু।