ইউসিবি-বিসিবির রুদ্ধশ্বাস জয়

নুরুল ছুটছেন রানআউট থেকে বাঁচতে, সৌম্য ছুটছেন তাঁকে রানআউট করতে। মিরপুরে কাল দুই উদীয়মান ক্রিকেটারের এ লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী নুরুল। নুরুলের অপরাজিত ৭৯ রানে জিতেছে তাঁর দল মোহামেডানও। প্রথম আলো
নুরুল ছুটছেন রানআউট থেকে বাঁচতে, সৌম্য ছুটছেন তাঁকে রানআউট করতে। মিরপুরে কাল দুই উদীয়মান ক্রিকেটারের এ লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জয়ী নুরুল। নুরুলের অপরাজিত ৭৯ রানে জিতেছে তাঁর দল মোহামেডানও। প্রথম আলো

পৌষের শীতের জন্যই হোক কিংবা ‘২৯ ডিসেম্বরের’ উত্তাপের কারণে, ঢাকায় কাল সিলেটের মতো দর্শক পেল না বিজয় দিবস টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। তবে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারির হাজার খানেক দর্শক টি-টোয়েন্টির শিহরণ মেখেই বাড়ি ফিরেছেন। প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব-ইউসিবি বিসিবি একাদশের মধ্যে হওয়া দিনের দ্বিতীয় ম্যাচটাই উপহার দিল রোমাঞ্চ। শেষ ওভারে ৭ রানের চ্যালেঞ্জ জিতে নাটকীয়ভাবে ৫ উইকেটে জিতেছে ইউসিবি-বিসিবি একাদশ।

দিনের প্রথম ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে ৮ উইকেটে হারিয়েছে মোহামেডান। কালকের দুই ম্যাচের পর প্রাইম ব্যাংক, মোহামেডান ও ইউসিবি-বিসিবি একাদশ তিন দলেরই পয়েন্ট ৬ করে। এই তিন দলের কোন দুই দল ফাইনাল খেলবে, সেটি ঠিক হবে আজকের দুই ম্যাচের ফলে। মোহামেডান ও ইউসিবি-বিসিবি ম্যাচে যে জিতবে সেই উঠবে ফাইনালে। আবাহনীকে হারালে ফাইনালে উঠবে প্রাইম ব্যাংকও। কিন্তু প্রাইম ব্যাংক হারলে অন্য ম্যাচের পরাজিত দলের সঙ্গে সম্মুখ সমরে জয়-পরাজয়ের হিসাবে বসতে হবে তাদের। তাতে সমাধান না এলে ধরা হবে রানরেট।

রুদ্ধশ্বাস দ্বিতীয় ম্যাচে ইউসিবি-বিসিবিকে বলতে গেলে একাই জিতিয়েছেন ইমরুল কায়েস। চার ছক্কা আর আট বাউন্ডারিতে ৫৪ বলে অপরাজিত ৮২—দলের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ডই ছিল তাঁর ইনিংস। ১৯ রানে ২ উইকেট হারানোর পর তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনের (৪৪) সঙ্গে ৮৭ ও পঞ্চম উইকেটে মার্শাল আইয়ুবের (২৫) সঙ্গে গড়েছেন ৫২ রানের জুটি। তিনবার জীবন ফিরে পাওয়া ইমরুল অবশ্য এ জন্য ভাগ্যকেও ধন্যবাদ দিতে পারেন।

তার পরও প্রাইম ব্যাংকের ১৭৩ রান টপকাতে শেষ তিন ওভারে ৩২ রান দরকার হয় ইউসিবি-বিসিবির। তাপস বৈশ্যের করা প্রথম পাঁচ বলে এল ৫ রান, শেষ বলে ছক্কা মেরে দিলেন ইমরুল। সাকিব আল হাসানের পরের ওভারের প্রথম বলে এক্সট্রা কাভার দিয়ে মার্শাল আইয়ুবের বাউন্ডারি। পরের চার বলে একটি ওয়াইডসহ ৬ রান, শেষ বলে ইমরুলের ব্যাট থেকে আবারও চার। রুবেলের করা ম্যাচের শেষ ওভারে দরকার ছিল ৭ রান। প্রথম বলে মার্শাল আউট হলেও দ্বিতীয় ও চতুর্থ বলে দুই বাউন্ডারিতে ম্যাচ জিতিয়ে দেন মুক্তার আলী।

এর আগে সাব্বির রহমানের ফিফটি (৫৭) ও সৈকত আলীর ৪১ রানের সুবাদে প্রাইম ব্যাংক লড়াই করার মতো স্কোরই জমা করেছিল বোর্ডে। ৪৫ বলে ৫৭ রান করা সাব্বিরের এটি টুর্নামেন্টে তৃতীয় ফিফটি। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি রানও (২১৭) তাঁরই। আগের ম্যাচে ডাবল হ্যাটট্রিকসহ এক ওভারে ৫ উইকেট নেওয়া ইউসিবি-বিসিবি একাদশের পেসার আল আমিন কালও ছিলেন স্বরূপে। আরও একবার হ্যাটট্রিকের সুযোগ তৈরি করেও পাননি, তবে ৪৫ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট।

প্রিমিয়ার লিগের পর বিজয় দিবস টি-টোয়েন্টি থেকেও আবাহনীকে ফিরতে হচ্ছে হতাশা নিয়ে। পাঁচ ম্যাচে জয় মাত্র একটি। আরেক ম্যাচ বাকি থাকলেও কালকের পরাজয়েই টুর্নামেন্ট থেকে তাদের বিদায় নিশ্চিত হয়ে গেছে। আবাহনীর ৬ উইকেটে করা ১৭১ রান এক ওভার বাকি থাকতেই টপকে গেছে মোহামেডান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

আবাহনী: ২০ ওভারে ১৭১/৬ (সৌম্য ৫২, মিজান ৪১, মাহমুদউল্লাহ ২৯; সাব্বির ৩/৪১, ইলিয়াস ১/১১, শরীফউল্লাহ ১/১৯, আলাউদ্দিন ১/৩২)। মোহামেডান: ১৯ ওভারে ১৭২/২ (নুরুল ৭৯*, হামিদুল ৪১, মুমিনুল ২২*, জহুরুল ২২; সৌম্য ১/১৯, নাবিল ১/২৫)। ফল: মোহামেডান ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নুরুল হাসান।

প্রাইম ব্যাংক সিসি: ২০ ওভারে ১৭৩/৮ (সাব্বির ৫৭, সৈকত ৪১, মেহরাব জুনিয়র ৩৯; আল আমিন ৩/৪৫, এনামুল জুনিয়র ২/৩২, শহীদ ১/৩৪, মুক্তার ১/৩৪)। ইউসিবি-বিসিবি একাদশ: ১৯.৪ ওভারে ১৭৫/৫ (ইমরুল ৮২, মিঠুন ৪৪, মার্শাল ২৫; সাকিব ২/২৮, রুবেল ২/৪৫, তাইজুল ১/২৪)। ফল: ইউসিবি-বিসিবি একাদশ ৫ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: ইমরুল কায়েস।