'ইউসেবিওর কীর্তি চিরঅম্লান'

রুই ক্যাপেলা
রুই ক্যাপেলা

স্বদেশি ফুটবল কিংবদন্তি ইউসেবিওর মৃত্যুর খবরটা তখনো তিনি জানতেন না। কাল বিকেলে মোহামেডানকে নিয়ে অনুশীলনের পর এই প্রতিবেদকের কাছে প্রথম শুনলেন। তারপর ’৬৬ বিশ্বকাপ তারকাকে নিয়ে নিজের সব আবেগ ঢেলে দিলেন রুই ক্যাপেলা। প্রাসঙ্গিকভাবে পর্তুগালের বর্তমান তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আর লিওনেল মেসির তুলনাও করলেন মোহামেডানের পর্তুগিজ কোচ
: ইউসেবিও মারা গেছেন, শুনেছেন?
রুই ক্যাপেলা: মানে! কী বলছেন, আমি বুঝতে পারছি না।
: আপনার স্বদেশি ফুটবল কিংবদন্তি ইউসেবিও আর নেই। একটু আগে তিনি পরলোকে পাড়ি জমিয়েছেন। মানে হি হ্যাজ ডায়েড...
ক্যাপেলা: ডায়েড...ডায়েড...বুঝতে পারছি না। ও আচ্ছা, আপনি বলছেন, ইউসেবিও জীবিত নেই! হিজ লাইফ ফিনিশ! কী বলেন এটা! আমি তো শুনিনি। এখন শুনলাম। এমন কিছু ঘটলে সেটা খুবই বেদনার।
: হ্যাঁ, খানিক আগে ইউসেবিওর মৃত্যুর খবর এসেছে...
ক্যাপেলা: আমি খুব ব্যথিত, দুঃখিত। ইউসেবিও বিগ বিগ প্লেয়ার, গ্রেট। অসাধারণ ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ। পর্তুগালে অসম্ভব জনপ্রিয়। সবাই তাঁকে খুব শ্রদ্ধা করে।

: ইউসেবিওর সঙ্গে কখনো আপনার দেখা হয়েছে? কথা হয়েছে?
ক্যাপেলা: দু-একবার দেখা হয়েছে, কথা হয়নি। একবার হাত মিলিয়েছিলাম। তিনি এক শহরে থাকতেন, আমি অন্য শহরে। কাজেই ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগ আমার হয়নি। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, ফিগোর জন্মও পর্তুগালে। তবে ইউসেবিওর সঙ্গে কারও তুলনা করব না। তিনি অন্য রকম। ’৬৬ বিশ্বকাপের নায়ক।
: ’৬৬ সালে আপনার জন্মই হয়নি। ওই বিশ্বকাপে ইউসেবিও সর্বোচ্চ গোলদাতা (৯ গোল), পর্তুগালকে তৃতীয় করেছেন...
ক্যাপেলা: সবই জানি। ফিফার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছিলেন ’৬৫ সালে। পরের বছর ইংল্যান্ড বিশ্বকাপ মাতিয়ে দিলেন। ইউসেবিওর কীর্তি চিরঅম্লান। আমি দেশে থাকলে তাঁর শেষকৃত্যে থাকতে চাইতাম। পর্তুগালের মানুষ ওর জন্য নিশ্চয়ই কাঁদছে। ’৬৬ বিশ্বকাপের পর ’৬৯ সালে আমার জন্ম। কাজেই মানুষটার খেলা দেখার সৌভাগ্য হয়নি। ভিডিওতে দেখেছি, দুর্দান্ত এক খেলোয়াড় ছিলেন।
: এখন তো রোনালদো দারুণ খেলছেন। যদি প্রশ্ন করি, ইউসেবিও না রোনালদো, কে পর্তুগালের সেরা?
ক্যাপেলা: এটা সাধারণ মানুষের জন্য ভালো প্রশ্ন। তবে আমার জন্য উত্তর দেওয়া কঠিন। রোনালদো এখন বিশ্বের এক নম্বর। ওর গতি, শট, হেড সবই দেখার মতো। আমি ভীষণ ভক্ত রোনালদোর। শুধু পর্তুগাল নয়, সারা বিশ্বেই ওর কোটি কোটি ভক্ত। সবাই ওর খেলা পছন্দ করে। ইউসেবিওর সময়টা আমি দেখিনি। ইউসেবিওর পাশে ওকে রাখব না কারণ, দুজন দুই সময়ের খেলোয়াড়।
: তার পরও যদি তুলনা করতে বলি...
ক্যাপেলা: দেখুন, ইউসেবিও নিজের অর্জনে কিংবদন্তি। রোনালদোকে সেই জায়গায় যেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে। ওঁর ক্যারিয়ার শেষে আমরা ওঁকে কিংবদন্তি হয়তো বলতে পারব। এখন রোনালদোকে কিংবদন্তি বলার সময় হয়নি।
: এখন তো বিতর্ক মেসি না রোনালদো? কে এগিয়ে?
ক্যাপেলা: দুজন আসলে দুই রকম খেলোয়াড়। রোনালদো সব দিক দিয়েই পরিপূর্ণ, যেটা আমি আগেই বললাম। মেসি আলাদা রকমের। ওর টেকনিক দারুণ। আসলে রোনালদো, মেসি দুজনই মাঠে দর্শক টানতে পারে। ফুটবলের জন্য ওঁরা সম্পদ, এই দুজন এখন ফুটবলে আলো ছড়াচ্ছে। তবে মেসির ওপরেই রোনালদোকে রাখছি আমি।
: স্বদেশি বলেই কি রোনালদোকে এগিয়ে রাখছেন মেসির চেয়ে? নাকি আসলেই বিশ্বাস করেন, রোনালদোই সেরা?
ক্যাপেলা: না, না, স্বদেশি বলে নয়। রোনালদো আসলেই এখনকার সেরা।
: পর্তুগালের আরেক বড় তারকা ফিগো সম্পর্কে কী বলবেন? ফিগোর সঙ্গে নাকি আপনার বন্ধুত্ব আছে?
ক্যাপেলা: হ্যাঁ, ফিগো আমার বন্ধু। ওর চেয়ে আমি অবশ্য দুই বছরের বড়। আমার বয়স এখন ৪৪। কিশোর বয়স থেকেই ওকে জানি, চিনি। একসঙ্গে অনেক সময় কাটিয়েছি।