সেমির আনন্দ রহমতগঞ্জের

তাঁর জোড়া গোলেই কোয়ার্টার ফাইনালেই বিদায় হলো মুক্তিযোদ্ধার। আলাদাভাবেই সবার নজর কাড়লেন শারহান হাওলাদার (মাঝে)। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সতীর্থদের সঙ্গে কাল উদ্‌যাপনের মধ্যমণি হয়ে রইলেন রহমতগঞ্জের তরুণ মিডফিল্ডার l প্রথম আলো
তাঁর জোড়া গোলেই কোয়ার্টার ফাইনালেই বিদায় হলো মুক্তিযোদ্ধার। আলাদাভাবেই সবার নজর কাড়লেন শারহান হাওলাদার (মাঝে)। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সতীর্থদের সঙ্গে কাল উদ্‌যাপনের মধ্যমণি হয়ে রইলেন রহমতগঞ্জের তরুণ মিডফিল্ডার l প্রথম আলো

খেলোয়াড়-কর্মকর্তা-কোচ সবাই খুব খুশি। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ হামিদ, কর্মকর্তা ইকবাল উদ্দিনসহ অন্যরা খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন। ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে উঠেই অবশ্য থামতে চায় না রহমতগঞ্জ। চোখ রাখছে ৫ জুনের ফাইনালেও।
পুরান ঢাকার দলটি শেষ কবে মৌসুমসূচক এই টুর্নামেন্টের শেষ চারে উঠেছে, তা কেউই তাৎক্ষণিকভাবে মনে করতে পারছিলেন না। কেউ কেউ ফিরে গেলেন নব্বইয়ের দশকে, যখন দু-একবার এই দলটি ফেডারেশন কাপের সেমিফাইনালে খেলার স্বাদ নিয়েছে।
গতবার লিগের প্রথম পর্বে চমক দেখানো সেই রহমতগঞ্জের কুড়িজন ফুটবলারই এবার নেই। প্রায় নতুন একটা দল নিয়েই এ মৌসুমে যাত্রা করেছে রহমতগঞ্জ। কিন্তু প্রশ্ন ছিল, গত লিগের প্রথম পর্বের প্রায় পুরোটা সময় অবিশ্বাস্যভাবে শীর্ষে থাকার পর দ্বিতীয় পর্বে ভেঙে পড়া সেই রহমতগঞ্জ নতুন উদ্যমে দাঁড়াতে পারবে? উত্তরটা কিছুটা হলেও পাওয়া গেছে কাল। রহমতগঞ্জ কোচ কামাল বাবু আবারও বার্তা দিলেন অনেক দূর যাওয়ার।
মুক্তিযোদ্ধাকে রীতিমতো ধ্বংস করে দিল রহমতগঞ্জ। লাল জার্সিধারীরা একটা গোল শোধ করেছে অন্তিম সময়ে। ততক্ষণে ৩ গোল করে বড় জয়ই পকেটে পুরে ফেলে রহমতগঞ্জ। অথচ শক্তির বিচারে সমান লড়াই-ই হওয়ার কথা। অনেকে মুক্তিযোদ্ধাকেই এগিয়ে রাখেন। কিন্তু গতি, বুদ্ধি আর সুযোগ কাজে লাগিয়ে কাল রহমতগঞ্জ টেক্কা দিল মুক্তিযোদ্ধাকে।
মিডফিল্ডার শারহান হাওলাদার দুটি গোল করলেন। প্রথম ও তৃতীয়টি। দুটিই দারুণ শটে। ৩৩ মিনিটে প্রথম, ৬৯ মিনিটে ২-০। ৬৩ মিনিটে ইসমাইল বাঙ্গুরা করেন ৩-০। ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হওয়ার পর মুক্তিযোদ্ধার মতিউর করেছেন ৩-১।
চারটি গোল একপাশে রাখলে, প্রচণ্ড গরমে দুই দলই প্রচুর দৌড়ে খেলেছে। মুক্তিযোদ্ধার ফুটবলাররা প্রথম গোলটা খাওয়ার পরই ‘গোল শোধ করতে হবে’ তাড়াহুড়ো করে নিজেদের ওপর চাপটা নিয়ে নিয়েছে। সেটাই ম্যাচের পর বলছিলেন দলটির কোচ মাসুদ পারভেজ, ‘আমরা আসলে প্রথম গোল খেয়ে একটু এলোমেলো হয়ে যাই। যে কারণে আর ম্যাচে ফেরা যায়নি।’
রহমতগঞ্জ এগিয়ে গিয়েও ক্রমাগত চাপ তৈরির চেষ্টা করে গেছে। একজনের কথা আলাদা করে না বললেই নয়, গতবার মোহামেডানে খেলা নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার বাঙ্গুরা। রহমতগঞ্জের জার্সিতে শুধু স্ট্রাইকার হিসেবেই খেলেননি, অ্যাটাকিং থার্ডে বল পায়ে রাখতে পেরেছেন, যেটা বাংলাদেশের স্থানীয় ফুটবলাররা কমই পারেন। যার ফলে প্রচুর জায়গা বেরিয়েছে রক্ষণে। আর সেটাই রহমতগঞ্জ কাজে লাগিয়েছে। বাঙ্গুরাসহ তিনজন স্ট্রাইকার খেলিয়েছেন কামাল বাবু। দুই উইঙ্গার সিফাত ও ইলিয়াস চোটে পড়ায় উইং দিয়ে আক্রমণ হয়েছে খুবই কম। মাঝখান দিয়েই বেশি আক্রমণে গেছে রহমতগঞ্জ এবং তাতেই বড় জয়।
আর সেই জয়ে রহমতগঞ্জ কোচ কামাল বাবু ভীষণ উচ্ছ্বসিত, ‘ছেলেরা কিছু করে দেখাতে চায়। সেটাই কাজে এসেছে।’
সেমিফাইনাল লাইনআপ
২ জুন, প্রথম সেমিফাইনাল
চট্টগ্রাম আবাহনী-রহমতগঞ্জ

৩ জুন, দ্বিতীয় সেমিফাইনাল
ঢাকা আবাহনী-শেখ জামাল
* ভেন্যু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম। শুরু সন্ধ্যা ৭-১৫ মি.