ডি ভিলিয়ার্সদের হতাশার ম্যাচ

এবি ডি ভিলিয়ার্স
এবি ডি ভিলিয়ার্স

৬ বলে ৭ রান দরকার। হাতে ৫ উইকেট। ক্রিজে এমন দুই ব্যাটসম্যান, যাঁরা টি-টোয়েন্টি বিশেষজ্ঞ বলে পরিচিত। এখনকার যুগে কোনো দল এমন ম্যাচ হারে? হারে, যদি দলটার নাম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। সাউদাম্পটনের রোজ বোলে আরও একবার স্নায়ুচাপে ভেঙে পড়ে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেটা নাটকীয়ভাবে ২ রানে হারল প্রোটিয়ারা। ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ায় সিরিজও জিতে নিল ইংল্যান্ড। এখানেই শেষ নয়, ম্যাচ শেষে আবার বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগেও জড়িয়ে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
সিরিজের প্রথম ম্যাচেও চাপে ভেঙে পড়েই হেরেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে পরশুর ম্যাচে হারটা আসলেই অবিশ্বাস্য। ৩৩১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় ওভার থেকেই ইংল্যান্ডের চেয়ে রান তোলায় এগিয়ে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। একবারও মনে হয়নি ম্যাচটি তারা হারবে। শেষ ৩ ওভারে ৩৩ রান দরকার ছিল, কিন্তু ৪৮ আর ৪৯তম ওভার মিলিয়ে ২৬ রান নিয়ে শেষ ওভারে লক্ষ্যটা মাত্র ৭ রানে নামিয়ে আনেন ক্রিস মরিস ও ডেভিড মিলার। কিন্তু এই দুই ব্যাটসম্যান মার্ক উডের শেষ ওভারে নিতে পারলেন মাত্র ৪ রান! ২০১৫ সালে বাংলাদেশের কাছে সিরিজ হারের পর ওয়ানডেতে এত তেতো স্বাদ আর কেউ দিতে পারেনি প্রোটিয়াদের। নিউজিল্যান্ড ও ভারতে গিয়েও সিরিজজয়ী দক্ষিণ আফ্রিকা থামল ইংল্যান্ডে গিয়ে।
আইসিসির টুর্নামেন্ট মানেই প্রোটিয়াদের তীরে এসে তরি ডোবানো। দুই দিন পরেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, এ সময়েই কিনা দক্ষিণ আফ্রিকার চোকার রূপটা দেখা দিতে শুরু করল! তার সঙ্গে আবার বল টেম্পারিংয়ের বিতর্ক মিলিয়ে রাতটা খুব বাজে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার।
ঘটনাটা ইংল্যান্ডের ইনিংসের ৩৩তম ওভারের পর। টেলিভিশনে দেখে মনে হচ্ছিল, আম্পায়ার ক্রিস গ্যাফেনি ও রব বেইলিকে বল পরিবর্তনের অনুরোধ করছেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। পরে অবশ্য ডি ভিলিয়ার্স জানিয়েছেন, তিনি বল বদলানোর অনুরোধ করেননি। বরং আম্পায়াররা তাঁকে বল টেম্পারিংয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করছিলেন। এ নিয়ে আম্পায়ার ও ডি ভিলিয়ার্সের মধ্যে কথা-কাটাকাটিও হয়েছে। শেষ পর্যন্ত আম্পায়াররাও আর বল বদলাননি।
গত বছর নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগে আইসিসি ডু প্লেসির ম্যাচ ফি কেটে নিয়েছিল। আরও একবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ওঠায় খুবই হতাশ ডি ভিলিয়ার্স, ‘আম্পায়াররা মনে করেছেন, বলের আকৃতি বদলে গেছে। এক অর্থে, তাঁরা বুঝিয়েছেন, এর জন্য আমরাই দায়ী। আমি এ নিয়ে খুবই হতাশ। পরে অবশ্য ব্যাপারটা মিটমাট হয়েছে। আমাদের জরিমানা বা ও রকম কিছু করা হয়নি।’
আর যেহেতু জরিমানা করা হয়নি, ডি ভিলিয়ার্স মনে করছেন তাঁরা নির্দোষ, ‘দোষী মনে করলে সাধারণত সতর্ক করা হয় বা শাস্তি দেওয়া হয়। এসবের কিছুই করা হয়নি। তাই আমরা মনে করছি, তাঁরা বুঝতে পেরেছেন, এ ক্ষেত্রে আমরা নির্দোষ।’
কিন্তু বারবার তাঁর দলের বিরুদ্ধেই কেন বল টেম্পারিংয়ের অভিযোগ উঠবে? আত্মপক্ষ সমর্থন করে ডি ভিলিয়ার্স বললেন, ‘আমি সত্যিই মনে করি, আজ বলটাই খারাপ ছিল। মাঝেমধ্যে আসলেই কিছু বাজে বল পড়ে যায়, যেগুলোর চামড়া উঠে আসে।’ এএফপি