শুধুই পেছাচ্ছে প্রিমিয়ার লিগ

কয়েক বছর ধরেই টাকা উড়ছিল ঢাকা প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগে। ছোটখাটো দলেরও বাজেট থাকত দেড়-দুই কোটি টাকা। তিন-চার কোটির কম বাজেটে শিরোপা লড়াইয়ের কথা ভাবাই যেত না। কিন্তু এবার মূল্যহ্রাসের বছর। যত ভালো দলই করুন, স্থানীয় খেলোয়াড় নিতে ক্লাবের খরচ হবে সর্বোচ্চ সাড়ে ৮৬ লাখ টাকা।

তবে বিস্ময়কর, এত অল্প বাজেটেরও প্রায় অর্ধেকটা বিসিবির কাছে অনুদান চায় ক্লাবগুলো! ক্লাবগুলোর প্রস্তাবিত গ্রেডিং পদ্ধতি রেখে দিলে বিসিবির কাছ থেকে খরচের অর্ধেকটারও বেশি পেয়ে যেতে পারত তারা। ক্লাবগুলো অনুদান চায় ৪০ লাখ টাকা করে, আর তাদের দেওয়া গ্রেডিং পদ্ধতি রেখে দিলে দল গঠনে ক্লাবপ্রতি খরচ হতো মাত্র ৭৮ লাখ টাকা।

নির্বাচকদের ঠিক করে দেওয়া গ্রেডিং পদ্ধতি অনুযায়ী ১৫ লাখ টাকা মূল্যের ‘এ’ শ্রেণীর ১২ ক্রিকেটারের মধ্য থেকে প্রতিটি দল নিতে পারবে ১ জন করে, ২৪ জন ‘বি’ প্লাস ক্রিকেটারের দুজন করে ১০ লাখ টাকা দামে। ‘বি’ শ্রেণীর ৩৬ ক্রিকেটারের দাম ৮ লাখ টাকা করে, প্রতি ক্লাবে বরাদ্দ ৩ জন করে। ‘সি’ শ্রেণীর ২৪ খেলোয়াড়ের ২ জন করে নেওয়া যাবে ৫ লাখ টাকা মূল্যে। ‘ডি’ শ্রেণীর মূল্য আড়াই লাখ টাকা, ক্রিকেটার আছেন ৩৬ জন। ক্লাবপ্রতি ৩ জন। ‘ই’ শ্রেণীতে খেলোয়াড়সংখ্যা ৫১, চারজন করে ১২ ক্লাব নেবে ৪৮ জনকে। বাকি তিনজনকেও দল পাইয়ে দিতে সাহায্য করবে সিসিডিএম। সর্বশেষ শ্রেণীর ক্রিকেটারদের মূল্য ক্লাব ও ক্রিকেটারদের বোঝাপড়ার ওপর ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেছিল ক্লাবগুলো। তবে সিসিডিএমের নির্দেশনা, ‘ই’ শ্রেণীর ক্রিকেটারদেরও দিতে হবে অন্তত ১ লাখ টাকা করে। এ ছাড়া ‘এ’ প্লাস শ্রেণীর চার ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালনাসির হোসেনকে পেতে হলে ক্লাবগুলোকে দিতে হবে ২২ লাখ টাকা করে।

গ্রেডিং চূড়ান্ত, খেলোয়াড়েরাও এটা মেনে খেলতে রাজি। তাহলে কি ৩ জুলাই থেকেই লিগ শুরু? না, বাধা আছে। এত কম দামে খেলোয়াড় নেওয়ার সুযোগ পেয়েও নাকি লিগ না খেলার পাঁয়তারা করছে অনেক ক্লাব! ৩ জুলাই থেকে লিগ শুরুর পূর্বশর্ত ২৩ জুনই খেলোয়াড়দের লটারি ‘প্লেয়ার্স বাই চয়েজ’ শেষ হতে হবে। কিন্তু পরশু ৯টি ক্লাব সিসিডিএমকে চিঠি দিয়ে বলেছে, বাইলজ হাতে পাওয়ার পর সেটা বোঝার জন্য সময় দরকার। সে সময়টা শুরু হবে কাল থেকে কারণ, আগে দেওয়া বাইলজে আরও কিছু পরিবর্তন আনছে সিসিডিএম। এই হিসাবে ক্লাবগুলো নাকি চায় ৩ জুলাই লটারি ও ১২-১৩ জুলাই থেকে লিগ শুরু হোক।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের কণ্ঠেই তো লিগ পেছানোর সুর। পরশু সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি বলেছেন, বিপিএল ফিক্সিং নিয়ে আকসুর তদন্ত প্রতিবেদন হাতে না আসা পর্যন্ত খেলোয়াড়দের লটারি আয়োজনই কঠিন। বোর্ড সদস্যদের সঙ্গে এক আলোচনায় নাকি তিনি মত দিয়েছেন, ২৭-২৮ জুন তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেয়ে গেলে ৩০ জুন বা ১ জুলাই লটারি আয়োজন এবং ৭-৮ জুলাই থেকে লিগ শুরু করা হতে পারে।

বিরাজমান পরিস্থিতিতে ৩ জুলাই থেকে লিগ শুরু করা নিয়ে সংশয়ে সিসিডিএম চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসও, ‘আমি সন্দিহান। আকসুর তদন্ত রিপোর্টের বিষয়টি এখন সামনে চলে এসেছে। ক্লাবগুলোও আরেকটু সময় চেয়েছে। বাইলজে কিছু পরিবর্তন আনতে সময়টা দরকারও।’

পেছাতে পেছাতে ‘বর্ষাকালীন’ ক্রিকেটটা কি শেষ পর্যন্ত হবে?