শুধু টেস্টেই কেন বিশ্রাম নিলেন সাকিব

টানা খেলার ক্লান্তি ঘোচাতে টেস্ট ক্রিকেট থেকে ছয় মাসের বিশ্রাম চেয়েছেন সাকিব আল হাসান। তাঁকে আপাতত দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এই সময়টা টেস্ট না খেললেও সাকিব কিন্তু ঠিকই সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ব্যস্ত থাকবেন। তিনি শুধু টেস্টেই কেন ছুটি চাইলেন?

সাকিবের কথা, একটা টেস্ট সিরিজ নিয়ে যত দিন ব্যস্ত থাকতে হয়, সীমিত ওভারে ক্রিকেটে তা নয়। তাঁর যুক্তি, ‘সীমিত ওভারের ক্রিকেট একদিন কিংবা তিন ঘণ্টার হয়। টেস্ট পাঁচ দিনের হয়। এটার জন্য প্রস্তুতি আরও ১০-১৫ দিনের। একটা টেস্ট সিরিজ যদি বিশ্রাম নেন, এক মাসের বিরতি পাবেন। টি-টোয়েন্টি সিরিজ থেকে বিশ্রাম নিলে তিন দিনের বিরতি। আর ওয়ানডে সিরিজ থেকে সাত দিনের বিরতি। আমার একটু বড় বিরতি দরকার। টেস্টে বিরতি নেওয়াটা সে কারণেই।’

টেস্টে আপাতত দেখা যাবে না সাকিব আল হাসানকে। ছবি : প্রথম আলো
টেস্টে আপাতত দেখা যাবে না সাকিব আল হাসানকে। ছবি : প্রথম আলো

টেস্ট থেকে দূরে থাকার দৃষ্টান্ত ক্রিকেটে যথেষ্ট আছে। ক্রিস গেইল কিংবা এবি ডি ভিলিয়ার্স সবচেয়ে বড় উদাহরণ। ওয়ানডে, আন্তর্জাতিক ও ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি নিয়ে ব্যস্ত অথচ বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেট থেকে দূরে থাকায় তাঁদের নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। সাকিবও একই পথে হাঁটছেন কি না, এ প্রশ্নও উঠছে। বাঁহাতি অলরাউন্ডার অবশ্য তাতে অবাকই হচ্ছেন, ‘আমার শরীর আমিই ভালো বুঝব। এই যে ওয়ানডে, টি-টোয়েন্টিতে বিশ্রাম নিলাম না বা বাইরের কোনো টি-টোয়েন্টিতে কেন বিশ্রাম নিলাম না, এই প্রশ্নগুলো যখন আসে অবাকই লাগে। বাইরের টি-টোয়েন্টিতে কোনো চাপ নেই। অনেকটা ছুটি কাটানোর মতো। সঙ্গে একটা অভিজ্ঞতাও হয়ে যায়। আর্থিক দিকটা অবশ্যই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। টেস্টে যেহেতু ব্যাটিং-বোলিং দুটিই করি। চার ইনিংসেই আমাকে অবদান রাখতে হয়। অর্ধেক দিলাম, অর্ধেক দিলাম না। তাহলে দলের চাহিদা পূরণ করতে পারলাম না। যখন চারটি ইনিংসে দুইবার বোলিং দুইবার ব্যাটিংয়ে ভালো করতে পারব, তখনই সেরা সময় খেলার। আমি চাইলেই খেলতে পারি। ম্যাচ ফি পাব, বেতন পাব। কিন্তু এই খেলাটা মনে হয় না আমার কাছে খুব গুরুত্ব বহন করে।’
টেস্টে যেহেতু ক্লান্তি এসে গেছে সাকিবের, আবার এই সংস্করণে ফিরবেন কি না, সে প্রশ্নটিও উঠছে। সাকিবের কথায় অবশ্য সংশয়টা দূর হয়ে যাবে, ‘এমন তো নয় যে আমি আর ক্রিকেটই খেলব না! অবশ্যই খেলব। কেন খেলব না? আমার ইচ্ছে আছে, সবার পরে টেস্ট থেকে অবসর নেব। তার আগে টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডে। কিন্তু আমার মনের কথা সব সময় সবাইকে বলার দরকার আছে বলে মনে হয় না। আমার ভেতরে কী আছে, আমি জানি। মানুষ যেমন সচেতন, আমিও সচেতন। কী করলে ভালো হয়, কী করা যায়। আমি ওভাবেই চেষ্টা করব।’