টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া ভালো মনে হচ্ছে মুমিনুলের

দলীয় স্কোর আরও বড় না হওয়ার আফসোস মুমিনুল হকের। ছবি: এএফপি
দলীয় স্কোর আরও বড় না হওয়ার আফসোস মুমিনুল হকের। ছবি: এএফপি

পচেফস্ট্রুমের ন্যাড়া উইকেটে টস জিতে বাংলাদেশের ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে গত দুই দিন কম সমালোচনা হয়নি। ফ্ল্যাট উইকেট আর বাংলাদেশের বোলারদের নখদন্তহীন বোলিংয়ের সুযোগে দক্ষিণ আফ্রিকা রানের পাহাড় গড়ার পর মুশফিকের সিদ্ধান্ত আরও বেশি সমালোচিত হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় দিনের খেলা শেষে মুমিনুল হক বললেন অন্য কথা। তাঁর কাছে প্রথম ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত ভালো মনে হচ্ছে!

পচেফস্ট্রুমের যে উইকেট তাতে বোলারদের তেমন সহায়তা নেই। ব্যাটসম্যানরা আত্মাহুতি না দিলে এই উইকেটে দুর্দান্ত ইনিংস উপহার দেওয়া যে কঠিন কিছু নয়, সেটি মুমিনুল ভালোই বুঝেছেন। গত দুই দিনে প্রশ্নটা ঘুরেফিরে এসেছে। বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৭৭ রান আসা মুমিনুলকেও করা হলো একই প্রশ্ন। এই উইকেটে টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত কেমন মনে হয়েছে তাঁর? ‘আমার কাছে তো মনে হয় ভালোই হয়েছে’—মুমিনুলের ত্বরিত জবাব।
আসলেই তা-ই? প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত কতটা যৌক্তিক ছিল, সেটি তো স্কোরই বলে দিচ্ছে। বাংলাদেশ যে রানচাপায় পিষ্ট, সেটি থেকে এখনো বের হতে পারেনি। কোনোমতে ফলো অন এড়ালেও প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে ২৩০ রানে। মুমিনুল মানছেন, প্রথম ইনিংসে অন্তত আরও ১০০ রান করা যেত, ‘সবাই যেহেতু সেট হয়ে আউট হয়েছি, আমার কাছে মনে হয় ৩০০ রান কম হয়ে গেছে। ৪০০-৪৫০ রান হতে পারত। যদি আমি-রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) আউট না হতাম। রিয়াদ ভাই সেঞ্চুরি করতে পারতেন, পরে যদি একটা বড় জুটি হতো তাহলে ৪০০-৪৫০ হতো।’
থিতু হয়ে আউট হওয়ার অপরাধে কাঠগড়ায় সবার আগে উঠবেন মুমিনুল। দলের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে বেশিক্ষণ উইকেটে ছিলেন। মুমিনুল সর্বশেষ সেঞ্চুরি করেছেন ২০১৪ সালের নভেম্বরে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে। পরের ১১ টেস্টে ১৯ ইনিংস খেললেও তিন অঙ্কের দেখা পাননি আর। পচেফস্ট্রুমে পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরির হাতছানি ছিল তাঁর সামনে। কিন্তু কেশব মহারাজের বল যতটা টার্ন আশা করেছিলেন তেমনটি হয়নি। শর্ট লেগে ক্যাচ তুলে দিয়েছেন মার্করামের হাতে। মুমিনুল অবশ্য বললেন, তাঁর ভাবনায় সেঞ্চুরি ছিল না, ‘সেঞ্চুরি নিয়ে চিন্তা করছিলাম না। ওরা প্রায় ৫০০ করেছে। আমাদের লক্ষ্য ছিল সেশন ধরে খেলার। লক্ষ্য ছিল ওই সেশনটা (লাঞ্চের পরে) শেষ করব। এভাবে খেলতে পারলে দিন শেষে আপনার ১০০-১৫০ রান হয়ে যেত।’
সেঞ্চুরিটা না হলেও আল শাহরিয়ারের ৭১ রানকে টপকে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ রানটা করতে পেরেছেন মুমিনুল। তার চেয়ে বড় স্বস্তি, গত কয়েক মাসে দলে থাকা না-থাকা নিয়ে তাঁর মনে যে ক্ষত তৈরি হয়েছে, ইনিংসটা হয়তো সেটি উপষমের ওষুধ হিসেবে কাজ করবে। কঠিন সময়টা পার হওয়ার পর কী পরিবর্তন এসেছে তাঁর ব্যাটিংয়ে, স্থানীয় এক সাংবাদিক জানতে চাইলে মুমিনুল বললেন, ‘মনে করি না খুব একটা পরিবর্তন এসেছে আমার ব্যাটিংয়ে। শুধু মানসিক কিছু বিষয়ে পরিবর্তন এসেছে। এই সময়ে আপনাকে মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে। যদি এটা মাথায় আটকে যায় দ্বিধায় পড়ে যাবেন। আমি শুধু মনস্তাত্ত্বিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করেছি। এই পর্যায়ে এসে আপনাকে টিকে থাকতে হলে মানসিকভাবে শক্ত থাকতে হবে।’