নিজেদের রেকর্ডটা ভাঙতে দিল না বাংলাদেশ

ব্লুমফন্টেইন টেস্টেও বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে বাজে। ছবি: এএফপি
ব্লুমফন্টেইন টেস্টেও বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছে বাজে। ছবি: এএফপি

পচেফস্ট্রুম টেস্টে ৩৩৩ রানে হারের পর বোলারদের কড়া সমালোচনা করেছিলেন মুশফিকুর রহিম। তবে বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের আশা ছিল, ব্লুমফন্টেইনে ভালো কিছু করে দেখাবেন তাঁর সতীর্থ বোলাররা। ব্লুমফন্টেইন টেস্টের প্রথম দিনে যে বোলিং করেছেন মোস্তাফিজ-রুবেলরা, তাতে মুশফিকের হতাশা আরও বাড়ার কথা। বাংলাদেশের নির্বিষ বোলিংয়ের সুযোগে ৩ উইকেটে ৪২৮ রান তুলে দিন শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

টেস্টের প্রথম দিনে এত রান! না, এটিও বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। ২০০৫ সালে কলম্বো টেস্টের প্রথম দিনে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৭ উইকেটে ৪৪৯ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। সেটিই বাংলাদেশের লজ্জার রেকর্ড হয়ে আছে। আজ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলেও শেষ পর্যন্ত তা ভাঙেনি। অবশ্য টেস্টের প্রথম দিনে ৪৯৪ রান তোলার রেকর্ড আছে, সেটি ১৯১০ সালের ঘটনা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া করেছিল সিডনি টেস্টে।
দক্ষিণ আফ্রিকা নিজে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টের প্রথম দিনে ৪৫০ রান তুলেছিল, ১৯২১ সালে। সেটিই তাদের রেকর্ড। আজকেরটি তৃতীয় সর্বোচ্চ। যাক, বাংলাদেশ তো এই সব রেকর্ডও অক্ষুণ্ন রাখতে পারল!
এসব ছাড়া ইতিবাচক কিছু লেখার নেই ব্লুমফন্টেইন টেস্টের প্রথম দিনে। আজও টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছেন মুশফিক। মানগাউং ওভালের উইকেটে শুরুর দিকে বল একটু এদিক-সেদিক করতে পারে, এমনকি ভালো বাউন্স পেতে পারেন বোলাররা—এই ভাবনায় হয়তো ফিল্ডিং নিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু অধিনায়কের টস জয়ের যৌক্তিকতা প্রমাণ করতে পারলেন কোথায় বোলাররা? নখদন্তহীন, এলোমেলো বোলিংয়ের মধ্যে বাংলাদেশের বোলাররা যা একটু সাফল্য পেয়েছেন চা বিরতির খানিক আগে-পরে। দক্ষিণ আফ্রিকার যে তিনটি উইকেটে পড়েছে, সেটি ৫৪ থেকে ৬৮ ওভারের মধ্যে।
চা বিরতির ২ ওভার আগে ১১৩ রান করা ডিন এলগারকে আউট করে প্রথম ব্রেক থ্রুটা যখন এনে দিলেন শুভাশিস রায়, ততক্ষণে স্কোরবোর্ডে ২৪৩ রান জমা করে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এ বছরে সবার আগে টেস্টে ১ হাজার রান করলেন এলগার। চা বিরতির তিন ওভার পর ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতির ভেতরে ঢোকা বলে বোল্ড করে রুবেল ফিরিয়েছেন এইডেন মার্করামকে। আগের টেস্টে ৩ রানের জন্য সেঞ্চুরি হাতছাড়া করা প্রোটিয়া ওপেনার আজ অবশ্য ভুল করেননি, ফেরার আগে করেছেন ১৪৩ রান। খানিক পরে টেম্বা বাভুমাকেও আউট করেন শুভাশিস। ৪৫ রানের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার ৩ উইকেট ফেলে দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি নেমে আসে বাংলাদেশ দলে।
কিন্তু খুশিটা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। অবিচ্ছিন্ন চতুর্থ উইকেটে হাশিম আমলা-ফাফ ডু ফ্লেসি ১৪০ রান যোগ করে দিনটা পুরোই নিজেদের করে নিয়েছেন। টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির অপেক্ষায় থাকা আমলা অপরাজিত ৮৯ রানে। ডু প্লেসি উইকেটে আছেন ৬২ রানে। ওভার–প্রতি প্রায় ৫ রান করে তোলা দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম দিনেই বিশাল রানের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের কাঁধে। কাল মোস্তাফিজদের ভাগ্যে কী আছে, কে জানে!