ফাইনালেও গেইলের তাণ্ডব!

ভয়ংকর গেইলের তাণ্ডব দেখল ঢাকা।
ভয়ংকর গেইলের তাণ্ডব দেখল ঢাকা।

টি-টোয়েন্টি এশিয়া কাপে রোহিত শর্মার একটা ক্যাচ ফেলেছিলেন সাকিব আল হাসান। সেদিন বাংলাদেশের নাগাল থেকে ম্যাচটা নিয়ে গিয়েছিলেন রোহিত। আজ যেন সেটারই পুনরাবৃত্তি হলো। ক্রিস গেইলের ক্যাচ ফেলেছিলেন সাকিব। বাকি ১৪ ওভারে ১২৪ রান তুলে প্রতিদান দিলেন গেইল। গেইলের রেকর্ডভাঙা ১৪৬ রানে ২০৬ রানের পাহাড় গড়েছে রংপুর রাইডার্স।

পাওয়ার প্লের ষষ্ঠ ওভার তখন। গেইল মাত্র নিজ মূর্তি দেখানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগের বলেই মোসাদ্দেককে বাউন্ডারি–ছাড়া করার পর এক্সট্রা কভারে শূন্যে ভাসিয়ে দিয়েছেন বল। সে বল হাতে জমানোর কাজটা পড়েছিল ঢাকা অধিনায়ক সাকিবের ঘাড়ে। বলটাকে কোনোভাবেই বলে আটকাতে পয়ারলেন না অধিনায়ক। বলটা ফেলে দিলেন সাকিব, ম্যাচটাও কি? ৬৯ বলে ১৮ ছক্কা ও ৪ চারে ১৪৬ রান করে অপরাজিত থাকলেন গেইল। ক্যাচ মিসের পর ৫৩ বলেই তুলেছেন ১২৪ রান। একটা ক্যাচের মূল্য হিসেবে একটু বেশিই!

কারণ, তখনো পর্যন্ত এক ছক্কা মারা গেইল তখন ছিলেন ২২ রানে। রংপুরের রান ২৮। স্কোরটা তখন ২৮/২ হয়ে গেলেই এ ম্যাচ নিয়ে আর চিন্তা করতে হতো না বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের। এ উইকেটে স্পিনাররা যা করছিলেন, তাতে গেইল-চার্লসকে হারানো রংপুরের ব্যাটিং আসলেই কত দূর যেতে পারত, সেটা কৌতূহল জাগানোর জন্য যথেষ্ট। রংপুরের সৌভাগ্য যে আজ অন্তত সে কৌতূহলের উত্তর মেটাতে হয়নি। সাকিবকে যন্ত্রণা বাড়াতেই গেইল সে ওভারে মারলেন দুই ছক্কা। প্রথম ১০ ওভারে অবশ্য আর কোনো সাড়াশব্দ নেই তাঁর।

একাদশ ওভারে খালেদ আহমেদ আসতেই নড়েচড়ে বসলেন। যাঁকে ফাইনালের একাদশে দেখেই চমকে উঠেছেন অনেকে। খালেদের প্রথম তিন বল দেখলেন গেইল। চতুর্থ বলে মিসহিটে ছক্কা। পঞ্চম বলের ছক্কাকে মিসহিট বলা না গেলেও ঠিক গেইল-ছক্কা নয়। শেষ বলে শুধু শক্তিতে মারা চারে পেয়ে গেলেন ফিফটি। ৩৩ বলে গেইলের ফিফটি। দলের রান তখন ৮১।

৩০ বল পরেই সেঞ্চুরি উদ্‌যাপন করে ফেললেন গেইল। এই ৩১ বলের মধ্যে ২৪ বল খেলেছেন গেইল। কোনো চারটার মারার চেষ্টা করেননি। ৬টা ছক্কা মেরে রান তোলার কাজ সেরে নিয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ওসব কাণ্ড দেখছিলেন ম্যাককালাম। ৫৭ বলে সেঞ্চুরি করা গেইলের পাশে ৩২ বলে ৩৩ রান ম্যাককালামের! পরের ১১ বলে ১৮ রান করে কিছুটা দায় মেটালেন ম্যাককালাম। আর গেইল তো ছিলেনই। সেঞ্চুরির পর ১২ বলে ৪৬ রান গেইলের। ৭ ছক্কা তাতে, এবার একটি চার।
শেষ ১০ ওভারে এল ১৪৩ রান। এতেই গতকালে গড়া জুটির রেকর্ড ভেঙেচুরে গেল। কালা চার্লস-ম্যাককালামের গড়া ১৫১ রানের জুটিটা টিকল মাত্র এক দিন! গেইলের সঙ্গী হয়ে আজ ২০১ রান তুললেন ম্যাককালাম। তাতে তাঁর অবদান মাত্র ৫১!