লিগে রিয়ালের 'অশুভ' নববর্ষ!

জোড়া গোল করে বেল আলো ছড়ালেও জেতেনি রিয়াল। ছবি: এএফপি
জোড়া গোল করে বেল আলো ছড়ালেও জেতেনি রিয়াল। ছবি: এএফপি

নতুন বছরে লা লিগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেয়েছে বার্সেলোনা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের মতো রিয়াল মাদ্রিদও চেয়েছিল নতুন বছরে লিগের প্রথম ম্যাচটা জয় দিয়ে শুরু করতে। সবচেয়ে বেশি চেয়েছিলেন বোধ হয় গ্যারেথ বেল। ইনজুরি থেকে রিয়ালের প্রথম একাদশে ফিরেই ২ মিনিটের ব্যবধানে করেছেন দুই গোল। কিন্তু তারপরও সেল্টা ভিগোর মাঠে জিততে পারেনি রিয়াল!

বার্সার সঙ্গে ১৭ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে থাকার চাপ নিয়ে মাঠে নেমেছিল জিনেদিন জিদানের দল। মনস্তাত্ত্বিক এই চাপের বৃত্ত কেটে শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারেননি তাঁর শিষ্যরা। ম্যাচের ৮১ মিনিট পর্যন্ত ২-১ গোলে এগিয়ে ছিল রিয়াল। কিন্তু পরের মিনিটেই রিয়ালের রক্ষণভাগে ‘আনমার্কড’ ম্যাক্সি গোমেজের হেড অতিথি সমর্থকদের জন্য শুধু গোল নয়, বুকে শূল হয়েও বিঁধেছে! ২-২ গোলে এ ম্যাচটা ড্র করে লিগ শিরোপা জয়ের দৌড় থেকে আরও পিছিয়ে পড়ল রিয়াল। লিগে তাদের নতুন বছরটাও শুরু হলো ‘অশুভ’ ইঙ্গিতে। বার্সার কাছে বোধ হয় এবার শিরোপাটা হারাতে হয়!

‘লস ব্লাঙ্কোস’ সমর্থকেরা সে জন্য রিয়ালের রক্ষণভাগকে দুষতেই পারেন। ম্যাচের দুই অর্ধেই সেল্টার খেলোয়াড়দের আক্রমণের ফাঁকা জায়গা দিয়েছেন রাফায়েল ভারানে-মার্সেলোর মতো অভিজ্ঞ ডিফেন্ডাররা। চোটের কারণে এ ম্যাচে সার্জিও রামোসের অনুপস্থিতিটা ভীষণভাবে টের পেয়েছেন তাঁরা। তবে আক্রমণভাগের দায়িত্ব একাই কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন বেল।

ম্যাক্সি গোমেজের হেড এবং গোল। রিয়াল সমর্থকদের জয়ের আশা পণ্ড। ছবি: এএফপি
ম্যাক্সি গোমেজের হেড এবং গোল। রিয়াল সমর্থকদের জয়ের আশা পণ্ড। ছবি: এএফপি

ইনজুরির কারণে ওয়েলশ ফরোয়ার্ড এ মৌসুমে সেভাবে মাঠে নামতে পারেননি। লিগে রিয়াল যেখানে ১৭ ম্যাচ খেলে ফেলেছে, সেখানে বেলের নামের পাশে মাত্র ৬ ম্যাচ। গত ২০ সেপ্টেম্বরের পর প্রথমবারের মতো জিদানের প্রথম একাদশের হয়ে এ ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন বেল। ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সময় নিয়েছিলেন মাত্র দুই মিনিট।

৩৩ মিনিটে ড্যানিয়েল ওয়াসের দারুণ ‘চিপ’ শটে এগিয়ে যায় সেল্টা। এর দুই মিনিট পরই বেলের ‘ম্যাজিক’ দেখানো শুরু—৩৫ মিনিটে রিয়ালের অর্ধে বল হারায় সেল্টা। সেখান থেকে টনি ক্রুসের নিখুঁত পাস পেয়ে কোনাকুনি শটে কোচ জিদানের অধীনে লিগে রিয়ালকে ২০০তম গোল এনে দেন বেল। ১ মিনিট পরই ইসকোর ক্রস থেকে ২০১তম গোল আসে সেই বেলের পা থেকেই!

লা লিগায় এ পর্যন্ত ১২ ম্যাচে ৭৯ শট নিয়ে ৪ গোল করেছেন রোনালদো। সেখানে মাত্র ৬ ম্যাচেই তাঁর সমান গোল করতে বেলের লাগল মাত্র ১৮ শট! সত্যিই সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না রোনালদোর। তবে বেলের জন্য ভিন্ন প্রেক্ষাপট। ব্রিটেনের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে লা লিগায় পঞ্চাশের বেশি গোলের রেকর্ড গড়েছেন তিনি এ ম্যাচে। ১০৬ ম্যাচে ৫৬ গোল সঙ্গে ৩৭ ‘অ্যাসিস্ট’। তবে দল জিতলে বেলের কাছে এসব অর্জন নিশ্চয়ই আরও মধুর লাগত।

সেটা তো হয়নি, বরং রিয়াল হারতেও পারত! ৭১ মিনিটে সেল্টার লাগো আসপাসকে বক্সে ফেলে দেন রিয়াল গোলরক্ষক কেইলর নাভাস। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু আসপাসের শট রুখে দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত সেরেছেন নাভাস। তা না হলে টেবিলের শীর্ষে থাকা বার্সার সঙ্গে আরও বেশি পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ত রিয়াল। শেষ পর্যন্ত ড্র করে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে ১৬ পয়েন্ট ব্যবধানে পিছিয়ে রইল রিয়াল। ১৮ ম্যাচে বার্সার সংগ্রহ ৪৮ পয়েন্ট। ১৭ ম্যাচে ৩২ পয়েন্ট নিয়ে চারে রিয়াল।