অবিশ্বাস্য, সত্যি অবিশ্বাস্য!

রটারডাম ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনাল জিতেই উঠে গেলেন র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। টুর্নামেন্টের মাঝপথে বাড়তি হিসেবে পেয়ে গেলেন ‘এক নম্বরের’ এই ট্রফি।  ছবি: এএফপি
রটারডাম ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনাল জিতেই উঠে গেলেন র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে। টুর্নামেন্টের মাঝপথে বাড়তি হিসেবে পেয়ে গেলেন ‘এক নম্বরের’ এই ট্রফি। ছবি: এএফপি

রটারডাম ওপেনের শিরোপা থেকে এখনো দুই ম্যাচ দূরে। আজ ফাইনাল। কাল রাতে সেমিফাইনাল জিতে থাকলে আজ ক্যারিয়ারের ৯৭ তম শিরোপার জন্য নামবেন রজার ফেদেরার। কিন্তু পরশু কোয়ার্টার ফাইনাল জিতেই নতুন উচ্চতায় নিজেকে তুলে নিলেন টেনিসের মহাতারকা। হয়ে গেলেন ইতিহাসের সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ এক নম্বর।
এদিন ফেদেরারের বয়স ছিল ৩৬ বছর ১৯৫ দিন। এই বয়সে বিশ্ব টেনিসে ছড়ি ঘোরানোর কথা ভাবা যায়! অথচ মৌসুমজুড়ে সেটাই করে গেছেন সুইস কিংবদন্তি। গত ১৩ মাসে জিতেছেন তিনটি গ্র্যান্ড স্লাম। ধারাবাহিক এই সাফল্যেরই স্বীকৃতি আবার র‍্যাঙ্কিংয়ের একে ফেরা। যেটিকে বিশেষ অর্জন বলছেন ফেদেরার, ‘কী অবিশ্বাস্য যাত্রা। আবার এক নম্বর হতে পারাটা আমার কাছে অনেক কিছু। এটা অবিশ্বাস্য এক অর্জন। আমি খুবই খুশি। সত্যিই আমি কখনো ভাবিনি যে আবার এক নম্বর হতে পারব। এ মুহূর্তটি আমার ক্যারিয়ারে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
২০০৩ সালে ৩৩ বছর ১৩১ দিন বয়সে আন্দ্রে আগাসি উঠেছিলেন র‍্যাঙ্কিং-শীর্ষে। সবচেয়ে বেশি বয়সে এক নম্বর হওয়ার এত দিন সেটাই ছিল রেকর্ড। সেই রেকর্ডকে তো ভাঙলেনই, আরও অনেক সম্ভাবনার সামনে ফেদেরার দাঁড় করালেন নিজেকে। সবচেয়ে বেশি ৩০২ সপ্তাহ শীর্ষে থাকার নিজের রেকর্ডটি নিয়ে যেতে পারবেন নতুন উচ্চতায়। সেসব নিয়ে অবশ্য এখন ভাবার সময় নেই ফেদেরারের। এখন সময় যে তাঁর উদ্যাপনের। এক নম্বর হওয়ার আনন্দে ভেসে যাওয়ার, ‘টেনিসে এক নম্বর হওয়াটাই চূড়ান্ত অর্জন। আর আপনার যখন বয়স হয়ে গেছে, তখন তো আপনাকে দ্বিগুণ পরিশ্রম করতে হয়। যারা কঠোর পরিশ্রম করে আপনার লড়াইটা তো তাদের সঙ্গেই। তাই আবার এক নম্বর হতে পারাটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতোই ব্যাপার।’
আসলেই তো। গত বছরের জানুয়ারিতেই তো নেমে গিয়েছিল ১৭ নম্বরে। আগের চার বছরে ফাইনাল সেমিফাইনালে উঠলেও থেকেছেন গ্র্যান্ড স্লাম শিরোপাশূন্য। কেউ কেউ তো বলতেও শুরু করেছিলেন, ফাইনাল-সেমিফাইনালের খেলোয়াড় হয়ে গেছেন। সেই ফেদেরারই কী অবিশ্বাস্যভাবেই না ঘুরে দাঁড়ালেন। সেটিও মধ্য ত্রিশে পা রাখার পর! সবকিছু ফেদেরারের কাছে যেন একটা ঘোরের মতো, ‘জানি না আমি এত ওপরে উঠলাম কীভাবে। সত্যি এটা আমার জন্য বড় অর্জন। বিশেষ করে দীর্ঘদিন পর আবার এক নম্বর হওয়ার ব্যাপারটা।’ আর এতে আনন্দটা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে ফেদেরারের, ‘ভালো লাগাটা দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে বয়সের কথা চিন্তা করলে। এর জন্য অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে আমাকে।’
ফেদেরারের অর্জনটা কত বড়, তা পরিষ্কার আন্দ্রে আগাসির কথাতেই। কোয়ার্টার ফাইনালটা শেষ হতে না-হতেই টুইট করেছেন সাবেক এক নম্বর, ‘৩৬ বছর ১৯৫ দিন...। রজার ফেদেরার আমাদের খেলার মানদণ্ডটা আরও ওপরে নিয়ে গেলেন। আরেকটি অসাধারণ কীর্তির জন্য অভিনন্দন।’

র‍্যাঙ্কিংয়ের ফেদেরার

৩৬

বছর বয়সে আবার র‍্যাঙ্কিং-শীর্ষে ফেদেরার। সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ এক নম্বর

 

৬৩

মাস বিরতি দিয়ে শীর্ষে ফেরা। এটিও নতুন রেকর্ড

 

৩০২

সবচেয়ে বেশি সপ্তাহ র‍্যাঙ্কিং-শীর্ষে থাকার রেকর্ডটিও ফেদেরারের। যেটিকে এবার নেবেন নতুন উচ্চতায়

 

২৩৭

 ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রেকর্ড টানা ২৩৭ সপ্তাহ র‍্যাঙ্কিং-শীর্ষে ছিলেন ফেদেরার