ওরা ঠিক থাকলে সব ঠিক

মাশরাফি বিন মুর্তজা
মাশরাফি বিন মুর্তজা

এক শ্রীলঙ্কাই যেন ওলটপালট করে দিল সব! গত কয়েক বছর বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে রকম বসন্ত বাতাস বইছিল, সেটা যেন থেমে গেল শ্রীলঙ্কান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে চলে যাওয়ার পর। নিয়তির কী পরিহাস! হাথুরুর নতুন আশ্রয় শ্রীলঙ্কার সামনেই ঘরের মাঠে একের পর এক হোঁচট খেল বাংলাদেশ দল!

এরপর বিদেশ সফর, সেটাও শ্রীলঙ্কায়। মানসিক চাপ আর কাকে বলে! চারদিকে সমালোচনার যে লু হাওয়া, সেটি থামাতে শ্রীলঙ্কাই যেন সময়ের সবচেয়ে কঠিন জায়গা! এ রকমই এক পরিস্থিতিতে শ্রীলঙ্কায় গিয়ে শ্রীলঙ্কাকে বেমক্কা এক হার ‘উপহার’ দেওয়ার পর একটু স্বস্তি তো পাওয়াই যায়। কলম্বোয় বাংলাদেশ দল তো বটেই, দেশে বসে স্বস্তিটা টের পাচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজাও। কাল মুঠোফোনে ওয়ানডে অধিনায়ক বলছিলেন, ‘আমাদের এ রকম একটা জয় খুব দরকার ছিল। সবাই যে রকম সমালোচনামুখর হয়ে উঠেছিল, সেটাকে থামাতে এ রকম কিছুরই দরকার ছিল। আমরা ভালো কিছু আশা করছিলাম। তবে এত ভালোভাবে জিতব, দলও বোধ হয় এতটা আশা করেনি।’

তবে মাশরাফি আশাবাদী হয়ে উঠেছিলেন বাংলাদেশের ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারের পরই। তখনই নাকি তাঁর মনে হচ্ছিল বাংলাদেশ জিতবে, ‘প্রথম ৬ ওভারে আমরা প্রায় ৮০ রান করে ফেলি। আমার ও রকম মনে হওয়ার এটাই কারণ। প্রথম ৬ ওভারে এত রান হয়ে গেলে জেতার সুযোগ থাকেই। পরের দিকে আমাদের ভালো ব্যাটসম্যান ছিল।’

মাশরাফির আশাটা খুব ভালোভাবেই পূরণ করে দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। তাঁর ৩৫ বলে অপরাজিত ৭২ রানের ইনিংসটি মাশরাফির দৃষ্টিতে টি-টোয়েন্টিতে কোনো বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানের সেরা ইনিংস। মাশরাফির কণ্ঠে প্রশংসা তামিম ইকবাল আর লিটন দাসেরও, ‘তামিম অনেক পরিণত ব্যাটিং করেছে। সে জন্য লিটনও সুযোগ পেয়েছে রান বাড়ানোর।’

মাশরাফির বিশ্বাস, পরশুর জয় দলকে আবার আগের মতো আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে। ফাইনালে চোখ রেখে তাঁর আশাবাদ, ‘পরবর্তী ম্যাচগুলোয় যে পরিস্থিতিই আসুক না কেন, আমাদের খেলোয়াড়েরা প্রস্তুত থাকবে। কালকের (পরশু) জয়টা সবার জন্যই একটা বার্তা।’
আশার মধ্যে আছে ভয়ের চোরাস্রোতও। সমালোচনার পর এবার যদি প্রত্যাশার চাপ জেঁকে বসে দলের ওপর! শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে রকম দুর্দান্ত জয় এসেছে, সবাই না আবার এটাকেই স্বাভাবিক ধরে বসে! বাংলাদেশের ক্রিকেট অনুরাগীদের প্রত্যাশার যে কোনো সীমা-পরিসীমা থাকে না, সেটি মাথায় রেখে মাশরাফি বলছিলেন, ‘প্রত্যাশা এমন এক জিনিস, টানা ১০ ম্যাচ হারার পরও দেখা যাবে ১১ তম ম্যাচে সবাই জয় আশা করছে। এটাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা যেন কারও নেই! তবে একটাই ভালো লক্ষণ-খেলোয়াড়েরা শান্ত আছে। তারা যে পথটা খুঁজছিল, সেটা পেয়ে গেছে। ওরা ঠিক থাকলে সব ঠিক।’