মাটিতে পা রেখে আকাশে ওড়ার স্বপ্ন বাংলাদেশের

>
একটি জয়ই বদলে দিয়েছে গোটা দলের চেহারা। ছবি: প্রথম আলো
একটি জয়ই বদলে দিয়েছে গোটা দলের চেহারা। ছবি: প্রথম আলো
• এক ম্যাচ জিতেই বাংলাদেশ মনে করছে না, তারা অনেক কিছু করে ফেলেছে।
• মাহমুদউল্লাহ বললেন, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে যে ‘বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের’ ক্রিকেটটা খেলেছেন, সেটি ধরে রাখতে চান সামনেও।
• তবে নতুন চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের বোলিং

দুপুর ১২টার দিকে বৃষ্টি থামলে উইকেটটা একবার দেখতে গেলেন মুশফিকুর রহিম। উইকেটের দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে খানিকক্ষণ অদৃশ্য ব্যাটে শ্যাডোও করলেন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুর্দান্ত ইনিংস এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। কাল ভারতের বিপক্ষে সেটির পুনরাবৃত্তির লক্ষ্য মুশফিকের।

কলম্বোর প্রেমাদাসায় পরশু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ শুধু জেতেইনি; ক্রিকেটে একটি নতুন ধারার গোড়াপত্তনও করেছে, তামিম ইকবাল যেটির নাম দিয়েছেন ‘বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের ক্রিকেট’। দলে মহেন্দ্র সিং ধোনির মতো দুর্দান্ত ফিনিশার নেই, ক্রিস গেইলের মতো পাওয়ার হিটার নেই। তবে স্মার্ট ক্রিকেটার আছে।
তামিমের কথায় একমত মুশফিক। সহমত মাহমুদউল্লাহরও। বাংলাদেশ দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক আজ সংবাদ সম্মেলনে বললেন, কলম্বো থেকেই যাত্রা শুরু নতুন এ ব্র্যান্ডের ক্রিকেট, ‘শ্রীলঙ্কা সফরে আসার আগে আমাদের প্রথম লক্ষ্যই ছিল ফাইনাল খেলা। আমরা চাই ফাইনাল খেলতে। একটি ম্যাচ জিতে অনেক কিছু করে ফেলেছি, সেটি নয়। পা আমাদের মাটিতেই আছে। আগের দিনে তামিম বলেছে, এটা আমাদের শুরু। টি-টোয়েন্টিতে আমাদের নিয়ে অনেক প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছিল। এই চিহ্ন আমরা যেন ধীরে ধীরে সরাতে পারি, দল হিসেবে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের ক্রিকেট খেলতে পারি, সে চেষ্টাই থাকবে।’
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা জিতলেও বাংলাদেশের নতুন চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বোলিং। বিশেষ করে, পেসাররা ভীষণ হতাশ করেছেন এ ম্যাচে। তবে সিরিজে মাঝে বোলারদের পারফরম্যান্স নিয়ে কোনো প্রশ্ন তুলতে চান না মাহমুদউল্লাহ, ‘এখনই বোলারদের নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। (ভারতের বিপক্ষে) প্রথম ম্যাচে তারা ভালো বোলিং করেছে, যেটা আমাদের আত্মবিশ্বাস দিয়েছে। পরের ম্যাচে ঠিক সময়ে নিজেদের দক্ষতা কাজে লাগাতে পারেনি বলে হয়তো রানটা বেশি হয়েছে। এ ধরনের উইকেটে যত কম রান দেবেন, ব্যাটসম্যানদের জন্য তত সহজ হবে। এটা নিয়ে কিছুটা চিন্তার বিষয় আছে, কোন পরিস্থিতিতে কতটা কম রান দেওয়া যায়।’
ধীরে ধীরে কাজল কালো মেঘ সরে পরিষ্কার হতে শুরু করেছে কলম্বোর আকাশ। বৃষ্টি-বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়েরা একে একে ড্রেসিংরুম থেকে নেমে এসেছেন প্রেমাদাসার নেটে। অনুশীলন শুরুর আগে তাসকিন আহমেদের কাছে জানতে চাওয়া হলো, সমস্যাটা কোথায়? শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে কেন অমন ছন্নছাড়া বোলিং? ‘সমস্যা নেই, ঠিক হয়ে যাবে’—শুধু তাসকিন নন, বাংলাদেশের সব বোলারের চাওয়াই এটা। যেভাবে সময়ের সঙ্গে মেঘ কেটে বেরিয়ে আসে আশার আলো, একইভাবে বাজে সময় কাটিয়ে ছন্দে ফিরতে চান তাঁরা। বাংলাদেশি ব্র্যান্ডের ক্রিকেট প্রতিষ্ঠা করতে হলে এটা যে খুব জরুরি।