মাহমুদউল্লাহর আফসোস...

মাহমুদউল্লাহর কাঠগড়ায় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানেরা। ছবি: এএফপি
মাহমুদউল্লাহর কাঠগড়ায় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানেরা। ছবি: এএফপি
>
  • হারের ব্যাখ্যায় মাহমুদউল্লাহ বললেন, বোলিংয়ে শেষ দিকে একটু বেশি রান দিয়ে ফেলেছেন।
  • অধিনায়কের কাঠগড়ায় টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরাও।
  • মাহমুদউল্লাহর চোখ শুক্রবার ‘সেমিফাইনালে’ রূপ নেওয়া ম্যাচের দিকে।

সাকিব আল হাসানের অনুপস্থিতিতে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দলের অধিনায়কত্বের ভারটা মাহমুদউল্লাহ বইছেন জানুয়ারি থেকে। ভারপ্রাপ্ত অধিনায়কের কপাল, জয়ের খুশি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসতে পারলেন না কোনো ম্যাচেই। পরশু শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জেতার পর সংবাদমাধ্যমের সামনে এসেছিলেন তামিম ইকবাল। মাহমুদউল্লাহর কাজ যেন শুধু পরাজয়ের ব্যাখ্যা দেওয়া!

জয়ের গল্প বলতে ক্লান্তি নেই। সুখের কথা বলা যায় দিনের পর দিন। কিন্তু বিষণ্ন মুখে হারের ব্যাখ্যা আর কত দেওয়া যায়? ভারতের বিপক্ষে ১৭ রানে হারের অনেক ব্যাখ্যাই দিলেন মাহমুদউল্লাহ। মোটা দাগে যার অর্থ দাঁড়ায়, ‘আফসোস আর আফসোস!’

মাহমুদউল্লাহর প্রথম আফসোসটা বোলিং নিয়ে, ‘বোলিংয়ে শুরুটা ভালোই হয়েছিল। কিন্তু শেষ দিকে কিছুটা বেশি রান দিয়ে ফেলেছি। দশটা রানও যদি কম দিতাম, ভালো হতো।’ পরের আফসোসটা ব্যাটিং নিয়ে, ‘ব্যাটিংয়ে ১৬০ রানের ৭২ মুশফিকই করেছে। টপ অর্ডারের আরও কেউ যদি ৩০ রানের মতো করতে পারত, হয়তো সুযোগ ছিল।’

১৪ ওভার শেষে ভারতের রান ছিল ১ উইকেটে ১০৪, বাংলাদেশের সেটি ৪ উইকেটে ১০৯। রানের হিসাবে সমানে সমান লড়াই। উইকেটে তখন মুশফিক-সাব্বিরের মতো থিতু ব্যাটসম্যান। তবু কেন ম্যাচটা নিজেদের মুঠোয় পুরতে পারল না বাংলাদেশ? এবার নিজেকেই কাঠগড়ায় তুললেন মাহমুদউল্লাহ, ‘মাঝে আমার আর মুশফিকের জুটিটা বড় করা দরকার ছিল। আমি বাজে বলে আউট হয়েছি। ওটাকে ছক্কা মারা উচিত ছিল। তবে এই ম্যাচ নিয়ে আর বেশি না ভেবে পরের ম্যাচটা নিয়ে ভাবা উচিত। যে জায়গাগুলোতে কাজ করা দরকার, সেগুলো নিয়ে কাজ করলে, পরিকল্পনা মেনে খেলতে পারলে ভালো কিছু সম্ভব।’

মাঠেও শুধু আফসোস করলেন মাহমুদউল্লাহ। ছবি: এএফপি
মাঠেও শুধু আফসোস করলেন মাহমুদউল্লাহ। ছবি: এএফপি

ভালো কিছু করতে হলে দলের সমন্বয়টা ঠিকঠাক হওয়া জরুরি। ছয় ব্যাটসম্যান আর পাঁচ বোলারের সমন্বয় কতটা কাজে লাগছে, তিন ম্যাচের দুই হারের পর বোঝাই যাচ্ছে। বড় স্কোর তাড়া করতে হলে বা প্রতিপক্ষের সামনে বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিতে হলো একাদশে আরেকজন ব্যাটসম্যানের প্রয়োজনীয়তা অনুভব হচ্ছে ক্রমেই। তবে মাহমুদউল্লাহ পাঁচ বোলার রাখার পক্ষেই বললেন, ‘প্রায় প্রতি ম্যাচেই বড় স্কোর হয়েছে। ১৮০-১৯০ বা ২০০–র মতো রান হচ্ছে। একজন বোলার কম নিয়ে খেললে ঝুঁকিটা আরও বেড়ে যায়। বোলিংয়ে পাঁচটা যথার্থ বিকল্প থাকলে ভরসা করা যায়। আমরা তাই বোলার বেশি নিয়ে খেলছি। বোলিংয়ের ওপর ভরসা ছিল আমাদের। আগের ম্যাচে টপ অর্ডার ভালো করেছে বলেই জিতেছি। আজ হয়নি।’

নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেছে ভারতের। পেন্ডুলামের মতো ঝুলছে বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কার ভাগ্য। শুক্রবারের ম্যাচটা তাই রূপ নিয়েছে সেমিফাইনালে। প্রেমাদাসা সেদিন নিশ্চিত কাঁপবে স্বাগতিক দর্শকদের গর্জনে। সেদিন সিংহের গর্জন ছাপিয়ে বাঘের গর্জন কি শোনা যাবে? মাহমুদউল্লাহ বলছেন, ‘চাপটা বাংলাদেশের নয়, থাকবে শ্রীলঙ্কার ওপরই। ওরা হয়তো কিছুটা চাপ অনুভব করবে। খেলা তাদের মাঠে, তাদের দর্শকের সামনে। আমাদের জন্য এটা নতুন ম্যাচ। শুরু করতে চাইব নতুনভাবে।’

মাহমুদউল্লাহ এও বলতে পারেন, প্রেমাদাসায় কীভাবে নৈঃশব্দ্য নামিয়ে আনতে হয়, সেটি তাঁদের অজানা নয়! কিন্তু সুখস্মৃতির পুনরাবৃত্তি করতে পারবে কি না বাংলাদেশ, সেটিই হচ্ছে কথা।