নিন্দুকদের কথা গিলতে বাধ্য করেন তিনি

লিসবনে বর্ষসেরার অনুষ্ঠানে বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজের সঙ্গে রোনালদো। ছবি: রয়টার্স
লিসবনে বর্ষসেরার অনুষ্ঠানে বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজের সঙ্গে রোনালদো। ছবি: রয়টার্স
>
  • টানা দ্বিতীয় বছর পর্তুগালের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতলেন রোনালদো
  • বর্ষসেরার পুরস্কার জয়ের পর সমালোচকদের ধুয়ে দেন রিয়াল তারকা।

তাঁর শোকেসে ট্রফির অভাব নেই। কিন্তু তাতেও ক্ষুধা মিটছে না। সেরা খেলোয়াড়দের সাফল্যক্ষুধা বলে কথা! গত ডিসেম্বরে দুবাইয়ে গ্লোব সকার অ্যাওয়ার্ডস জেতার পর যেমন বলেছিলেন, ‘দুশ্চিন্তা করবেন না, ট্রফি রাখার জন্য এখনো অনেক জায়গা পড়ে আছে।’ ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর শোকেসে সেই খালি জায়গা কাল একটু হলেও পূরণ হলো—পর্তুগালের বর্ষসেরা (২০১৭) খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন রোনালদো।

লিসবনে এক জমকালো অনুষ্ঠানে এ নিয়ে টানা দ্বিতীয় বছর দেশের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার নেন রোনালদো। ব্যক্তিগত সাফল্য অর্জনের এ লড়াইয়ে রিয়াল তারকার কাছে হেরেছেন স্পোর্টিং সিপির গোলরক্ষক রুই প্যাত্রিসিও ও ম্যানচেস্টার সিটির মিডফিল্ডার বের্নার্দো সিলভা। রোনালদো পেয়েছেন ৬৫ শতাংশ ভোট। ১৮ ও ১৭ শতাংশ হারে ভোট পেয়েছেন যথাক্রমে প্যাত্রিসিও এবং সিলভা।

গত বছর রিয়ালকে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতানোর সঙ্গে উয়েফা সুপার কাপ, স্প্যানিশ সুপার কাপ ও ক্লাব বিশ্বকাপও জিতেছেন রোনালদো। দেশের জার্সিতে ১১ গোল করার পাশাপাশি রিয়ালের হয়ে করেছিলেন ৪২ গোল। এই দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের সুবাদে গত ডিসেম্বরে পঞ্চমবারের মতো ব্যালন ডি’অর জিতে রোনালদো ভাগ বসিয়েছেন লিওনেল মেসির রেকর্ডে। ব্যালন ডি’অর জয়ের পর ৩৩ বছর বয়সী এ ফরোয়ার্ড বলেছিলেন, ‘আমিই ইতিহাসের সেরা খেলোয়াড়।’
পর্তুগালের বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতে রোনালদো কিন্তু এই পুরোনো কথাটাই স্মরণ করিয়ে দিলেন।

রোনালদোর কথাটা অবশ্যই সমালোচকদের উদ্দেশে। এবার মৌসুমের শুরুতে তেমন একটা ফর্মে ছিলেন না। সবাই বলতে শুরু করেন, রোনালদো ফুরিয়ে গেছেন, আগের সেই ঝলক আর নেই...ইত্যাদি। কিন্তু মৌসুমের এ পথ পর্যন্ত আসার পর দেখা যাচ্ছে সব ধরনের প্রতিযোগিতা মিলিয়ে তাঁর গোলসংখ্যা ৩৫ ম্যাচে ৩৭—যা ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের খেলোয়াড়দের মধ্যে সর্বোচ্চ। সর্বশেষ জিরোনার বিপক্ষে রিয়ালের ৬-৩ গোলে জয়ের ম্যাচেও একাই করেছেন চার গোল। দেশ ও ক্লাবের হয়ে তুলে নিয়েছেন নিজের ৫০তম ক্যারিয়ার হ্যাটট্রিক।

অর্থাৎ এর আগে রোনালদো যে নিজেই নিজেকে ‘সেরা’র তকমা দিয়েছিলেন, সেটা কিন্তু প্রমাণ করে চলছেন। তাঁর ক্লাব রিয়াল এবার লিগে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও রোনালদোর গোলক্ষুধা ঠিকই আছে। পর্তুগিজ বর্ষসেরার পুরস্কার জয়ের পর রোনালদো তাই সমালোচকদের উদ্দেশে তোপ দাগলেন, ‘আমি সব সময় বিশ্বাস করি এবং বলি যে ওরা (নিন্দুকেরা) যা-ই বলুক না কেন, আমিই সেরা এবং সেটা মাঠেও প্রমাণ করছি। বছরের পর বছর ধরে চলছে আমাদের এ লড়াই।’

সমালোচকদের সঙ্গে রোনালদোর এই লড়াইয়ে এক নারীও তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি রোনালদোর মা ডলোরেস আভেইরো। সমালোচকেরা এর আগে বলেছিলেন, রোনালদোর ৩৩ বছর বয়সেই অবসর নেওয়া উচিত। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারিতে ৩৩ পূর্ণ করা রোনালদো এ বছর যেন আরও বেশি ক্ষুরধার—পরিসংখ্যানই তার প্রমাণ।
রোনালদোর সমালোচকদের উদ্দেশে ডলোরেস তাই নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে লিখেছেন, ‘এখন তাঁদের বলতে দাও রোনালদোর ৩৩ বছর বয়সে অবসর নেওয়া উচিত।’