রামোসের পেনাল্টি মিস ও আত্মঘাতী গোলে হার রিয়ালের

হতাশায় নিমজ্জিত রামোস। রিয়ালের হারে যে তাঁর অবদানই বেশি! ছবি: এএফপি
হতাশায় নিমজ্জিত রামোস। রিয়ালের হারে যে তাঁর অবদানই বেশি! ছবি: এএফপি
>
  • সেভিয়ার কাছে ৩-২ গোলে হেরেছে রিয়াল
  •  রামোসের পেনাল্টি মিস, আত্মঘাতী গোলও করেছেন

সানচেজ পিজুয়ানে ১৪ বছর আগে সেভিয়ার হয়ে অভিষেক ঘটেছিল সার্জিও রামোসের। লা লিগায় কাল রাতে সেই সেভিয়ার জালেই গোল করেছেন। রিয়াল মাদ্রিদ অধিনায়ক তাই পিজুয়ান ছাড়ার সময় দু হাত তুলে ক্ষমা চাইলেন। তবে শুধু সেভিয়া সমর্থক নয়, রিয়াল সমর্থকদের উদ্দেশেও রামোসের এই ক্ষমা প্রার্থনা। সেভিয়ার কাছে রিয়ালের হারের মূল ‘নায়ক’ তো রামোস!

কী করেননি রামোস! ৫৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করতে ব্যর্থ, ৮৪ মিনিটে দেখলেন হলুদ কার্ড, ঠিক তারপরই করলেন আত্মঘাতী গোল! এরপর যোগ করা সময়ে সেই পেনাল্টি থেকেই রিয়ালকে গোল এনে দিলেন। কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। রিয়ালকে ৩-২ গোলে হারিয়েছে সেভিয়া।

রিয়াল রামোসের প্রাণের ক্লাব হলেও বেড়ে উঠেছেন সেভিয়ার বয়সভিত্তিক দলে। আন্দালুসিয়ান এই ক্লাবটির জন্যও তাঁর অগাধ ভালোবাসা। গত বছর একবার বলেছিলেন, ‘আমাকে কবর দেওয়ার সময় সঙ্গে রিয়াল ও সেভিয়ার পতাকা থাকবে।’ কিন্তু এই রামোস আবার নির্মম পেশাদারও। লা লিগায় সেভিয়ার বিপক্ষে তাঁর গোলসংখ্যা (৭) অন্য যে কোনো ক্লাবের চেয়ে বেশি। আবার এই লা লিগাতেই রামোস যে দুটি আত্মঘাতী গোল করেছেন, তা শুধুই সেভিয়ার সুবিধা করে দিয়েছে!

বার্সা লিগ শিরোপার নিষ্পত্তি করে দেওয়ায় বোধ হয় নিয়মিত একাদশ খেলাননি রিয়াল কোচ জিনেদিন জিদান। তা ছাড়া সামনে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালও আছে। গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের মাঠে নামিয়ে চোটের ঝুঁকি নেননি জিদান। বার্সার বিপক্ষে আগের ম্যাচে খেলানো একাদশে বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন রিয়াল কোচ। শুধু বেনজেমা, কাসেমিরো ও রামোস মাঠে নেমেছেন ম্যাচের শুরু থেকে। রোনালদো, ক্রুস, মডরিচ, নাভাস, মার্সেলো, ভারানেদের মাদ্রিদে রেখে এসেছিলেন জিদান।

ফলটাও পেয়েছেন হাতেনাতে। সেভিয়া যে তিনটি গোল করেছে তা আসলে রিয়ালের ভুলের ফসল। প্রথমার্ধে বেন ইয়েদ্দার ও মিগুয়েল লেয়ুনের গোল এগিয়ে যায় স্বাগতিক দলটি। ২৬ মিনিটে জেসাস ভ্যালেয়োকে ফাঁকি দিয়ে লুই মুরিয়েলের বাড়ানো পাস থেকে গোল করেন বেন ইয়েদ্দার। রামোস তাঁকে থামাতে পারেননি। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে সেভিয়ার স্তেভেন জোনজির শট রুখে দিয়েছিলেন রিয়াল গোলরক্ষক কাসিলা; কিন্তু বিপদমুক্ত করতে পারেননি। সুবিধাজনক জায়গায় বল পেয়ে ফিরতি শটে গোল করেন লেয়ুন। প্রথমার্ধে সেভিয়ার গোলপোস্টে মাত্র একটি শট নিতে পেরেছে রিয়াল।

বিরতির পর ৫৭ মিনিটে পেনাল্টি পায় মাদ্রিদের ক্লাবটি। কিন্তু রামোসের জোরালো শট ক্রসবারে লেগে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। নির্ধারিত সময়ের ৫ মিনিটে লেয়ুনের শট বিপদমুক্ত করতে পারেননি রামোস। বল তাঁর পায়ে লেগে জালে জড়ায়। কাকতালীয় ব্যাপার, রামোস গত মৌসুমেও আত্মঘাতী গোল করেছিলেন এই সেভিয়ারই বিপক্ষে, ৮৫তম মিনিটে!

এর দুই মিনিট পর রিয়ালকে গোল এনে দেন বোরহা মায়োরাল। যোগ করা সময়ে আবারও পেনাল্টি পেয়েছিল রিয়াল। রামোস এবার আর গোল করতে কোনো ভুল না করলেও দলের হার এড়াতে পারেননি। স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ জানিয়েছে, লা লিগায় কোনো ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করা ও ব্যর্থ হওয়ার সঙ্গে আত্মঘাতী গোলও করা প্রথম খেলোয়াড়টি রামোস!

স্বাভাবিকভাবে এই রেকর্ড রামোসের ভালো লাগার কথা নয়। ম্যাচ শেষে জিদান তাঁর শিষ্যের ব্যাপারে এতটুকু বলেছেন, ‘সে খুশিমনে মাঠ ছাড়েনি এবং সেটাই স্বাভাবিক।’ ৩৬ ম্যাচে ৭২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় রিয়াল। তাঁদের সমান ম্যাচে ৭৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ ও ৯০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা।