রামোস কি ইচ্ছে করেই সে ফাউল করেছিলেন?

মাঠে চোট পেয়ে কাতরাচ্ছেন সালাহ। ছবি: রয়টার্স
মাঠে চোট পেয়ে কাতরাচ্ছেন সালাহ। ছবি: রয়টার্স

সার্জিও রামোসের সঙ্গে বল দখলের লড়াইয়ে কাঁধে চোট পেলেন। মিনিট দু-এক পরই মাঠ ছাড়লেন কান্নাভেজা চোখে। মোহাম্মদ সালাহর সেই কান্না তাঁর ভক্তদের ছাপিয়ে ছুঁয়ে গেছে সাধারণ ফুটবলপ্রেমীদেরও। প্রথম মিসরীয় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনাল খেলতে নামা সালাহ যে এখন বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে পড়ার শঙ্কায়! রামোসের যে ফাউলে মাঠ থেকে ছিটকে গেলেন সালাহ, তা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত ফুটবল বিশ্ব। সমর্থকদের চোখে সেটা ছিল ইচ্ছাকৃত। আসলেই কি এমন কিছু হয়েছিল?

লিভারপুল কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপের কথায় কিন্তু এমন একটা প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত রয়েছে। শিষ্যের চোট প্রসঙ্গে ফাইনাল শেষে ক্লপ বললেন, ‘আমি জানি ম্যাচ হারার পর এমন কিছু বললে মনে হবে হার মানতে কষ্ট হচ্ছে। তবে আমার কাছে এটা বাজে চ্যালেঞ্জ ছিল। অনেকটা রেসলিংয়ের মতো এবং দুর্ভাগ্যজনকভাবে মো কাঁধের ওপর পড়েছে।’
ক্লপ তবু সরাসরি রামোসের দিকে তির ছুড়ছেন না, পেশাদারি চিন্তা থেকেই হয়তো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমর্থকদের তো আর সে দায় নেই। তাই অধিকাংশই শূলে চড়াচ্ছেন রামোসকে। কারও চোখে এটা ইচ্ছাকৃত ফাউল। কারও চোখে আগে থেকেই নাকি পরিকল্পিত ছিল এই ফাউল—সালাহকে মাঠ থেকে বের করার জন্যই। কেউ বা সালাহর বিশ্বকাপ অনিশ্চয়তার দায়ও চাপিয়ে দিচ্ছেন রামোসের ঘাড়ে।

২০১৬ ইউরোর ফাইনালে রোনালদো নিজেই এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছিলেন, কাল সালাহকে চোট পেতে দেখলেন প্রায় একই পরিস্থিতিতে। অশ্রুসিক্ত সালাহকে সান্ত্বনা দিতে তাই রোনালদো এগিয়ে এলেন। ছবি: রয়টার্স
২০১৬ ইউরোর ফাইনালে রোনালদো নিজেই এমন পরিস্থিতির স্বীকার হয়েছিলেন, কাল সালাহকে চোট পেতে দেখলেন প্রায় একই পরিস্থিতিতে। অশ্রুসিক্ত সালাহকে সান্ত্বনা দিতে তাই রোনালদো এগিয়ে এলেন। ছবি: রয়টার্স

বিটি স্পোর্টসের অনুষ্ঠানে দায়িত্বে থাকা ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ড ও রিও ফার্ডিনান্ড অবশ্য এ স্রোতে গা ভাসাচ্ছেন না। ম্যাচের প্রথমার্ধ শেষে চেলসি কিংবদন্তি ল্যাম্পার্ড বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না। সে ওর কাছে গিয়েছিল, একজন ডিফেন্ডারের যেমন করা উচিত। মাঝে মাঝে যখন আপনি ট্যাকল করেন তখন হাতে হাত আটকে যায়। সে (সালাহ) যেভাবে পড়েছে, সেটা দুর্ভাগ্যজনক।’
নিজে ডিফেন্ডার ছিলেন বলেই কি না রিও ফার্ডিনান্ড রামোসের প্রশংসা করলেন ভালো রক্ষণের কারণে, ‘এত আগ্রহের এক ম্যাচে এমন কিছু দেখা খুবই দুর্ভাগ্যের। এভাবে ম্যাচ শেষ হোক কখনো চায়নি সে (সালাহ)। দিনের শেষে এটাই ম্যাচের গতি বদলে দিয়েছে। লিভারপুল খুবই আতঙ্ক জাগিয়ে আক্রমণে যাচ্ছিল। এখন (প্রথমার্ধ শেষে) রিয়াল খেলা নিয়ন্ত্রণ করছে। আমার তো মনে হয় রামোস খুবই ভালো ডিফেন্স করেছে এবং আমার মনে হয় না এটা ইচ্ছাকৃত ছিল।’
ওই অনুষ্ঠানেই ছিলেন লিভারপুল কিংবদন্তি স্টিভেন জেরার্ড। এই ঘটনায় রামোস-বিতর্কে কোনো মন্তব্য করেননি জেরার্ড। শুধু সালাহর চোট যে ম্যাচে প্রভাব ফেলেছে সেটাই বলেছেন তিনি, ‘সালাহর জন্য এটা অনেক বড় ধাক্কা। ব্যক্তিগতভাবে এবং ক্লাবের দিক থেকেও। সে পুরো মৌসুমে দুর্দান্ত খেলেছে। লিভারপুল ওই চোটের আগে ভিন্ন দল ছিল, মাদ্রিদের ওপর দাপট ছিল ওদের।’