কেভা যেন পেরুর মেসি!

আকাশে বল পাঠাচ্ছেন কেভা। ছবি: রয়টার্স
আকাশে বল পাঠাচ্ছেন কেভা। ছবি: রয়টার্স

আজকের দিনটা যেন পেনাল্টির দিন! প্রথম তিন ম্যাচেই চার পেনাল্টি। বিশ্বকাপের ইতিহাসে একদিনে এর চেয়ে বেশি পেনাল্টি দেখা গেছে মাত্র একদিন। ১৯৯৮ বিশ্বকাপে ২৪ জুন ৬টি পেনাল্টি দেখা গিয়েছিল। আজ অবশ্য পেনাল্টি ব্যর্থতার দিনও। চার পেনাল্টির দুটো থেকেই গোল আসেনি।

প্রথমটা তো এ টুর্নামেন্টের বাকি কটা দিনই আলোচিত হবে, মেসির গোল হাতছাড়া করা। পরেরটি করেছেন ক্রিস্টিয়ান কেভা। তবে কেভার মিসে পেরুকে ভুগতে হয়েছে আরও বেশি। তাঁর দল যে ডেনমার্কের কাছে ১-০ ব্যবধানে হেরে গেছে!

প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে পেনাল্টি আদায় করেছিলেন কেভা নিজেই। তাঁকে ফেলে দিয়েছিলেন ইউসুফ পুলসেন। রেফারি পেনাল্টির দাবি প্রথমে উড়িয়ে দিলেও ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারিংয়ের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত বদলেছেন। সে পেনাল্টি নিতে এসে বল আকাশে পাঠালেন কেভা। অথচ পেনাল্টি দেওয়া সেই পুলসেনই পরে নায়ক। ৫৯ মিনিটে ডেনমার্ককে এগিয়ে দিতে দারুণ এক গোল করেছেন এই স্ট্রাইকার। সে গোল নিয়েই ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছে ডেনমার্ক।

অথচ ম্যাচে প্রাধান্য ছিল পেরুর। গোলের সুযোগ সৃষ্টিতে, আতঙ্ক জাগানোতেও। কিন্তু কোনোভাবেই গোল পায়নি দক্ষিণ আমেরিকান দেশটি। ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের সুযোগ সৃষ্টিতে এগিয়ে ছিল পেরু। কিন্তু ডেনিশ গোলরক্ষক কাসপার স্মাইকেল দাঁড়ালেন চীনের প্রাচীর হয়ে। ৬টি দারুণ সেভ করেছেন স্মাইকেল। ১৯৯৮ সালের পর ডেনিশ কোনো গোলরক্ষকের বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ সেভ। সেবার ফ্রান্সের বিপক্ষে ৯টি সেভ করে রেকর্ড গড়েছিলেন কাসপারের বাবা পিটার! সব মিলিয়ে ১৭টি শট নিয়েছে পেরু, আর ডেনমার্কের গোল করার চেষ্টা ছিল ১০টি। কিন্তু আসল কাজটা পুলসন করতে পেরেছেন, যেটা পেরুর হয়ে গেরেরো কিংবা কেভা—কেউই করতে পারেননি।

ম্যাচের একমাত্র গোলদাতা পুলসেন। ছবি: রয়টার্স
ম্যাচের একমাত্র গোলদাতা পুলসেন। ছবি: রয়টার্স

৫৯ মিনিটে পুলসনের গোলের পর তো রীতিমতো ঝড় বইয়ে দিয়েছিল পেরু। ৬১ ও ৬৪ মিনিটে ফ্লোরেস ও গুরেরোর দুটো চেষ্টা মাথা কুটে পড়েছে স্মাইকেলের কাছে। ৬৯ মিনিটে আলবের্তো রদ্রিগেজের হেড স্মাইকেলকেও ফাঁকি দিয়েছিল, সেবার ভাগ্য বাধা হলো। বাঁ পোস্ট ঘেঁষে বল চলে গেল বাইরে।

৭৮ মিনিটেও একই দৃশ্য। পাওলো গুরেরোর দারুণ এক শট গোলে যাওয়ার পথে একদম শেষ মুহূর্তে বাঁক কেটে বেরিয়ে গেল ডান পোস্ট দিয়ে। পরের মিনিটেই কেভাকেও দেখতে হলো একই দৃশ্য। ৮৪ মিনিটে জেফারসন ফারফানকেও যখন স্মাইকেলের কাছে হার মানতে হলো, তখনই ম্যাচের ভাগ্য বোঝা গিয়েছে।

৮৬ মিনিটে উল্টো ব্যবধান বাড়িয়ে নিচ্ছিল ডেনমার্ক। ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন গোলরক্ষককে একা পেয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু পেদ্রো গায়েসের দারুণ এক সেভে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়নি পেরু। যোগ করা সময়ের চতুর্থ মিনিটেও আরেকটি সুযোগ পেয়েছিল পেরু। কিন্তু একের পর এক ডান পোস্ট ঘেঁষা শটের জন্য আজকের দিনটিকেই যেন বেছে নিয়েছিলেন গুরেরো।