'আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গোল করা কঠিন কিছু না'

আর্জেন্টিনাকে হুমকি দিচ্ছেন নাইজেরিয়ার মুসা। ছবি: এএফপি
আর্জেন্টিনাকে হুমকি দিচ্ছেন নাইজেরিয়ার মুসা। ছবি: এএফপি
>আইসল্যান্ডকে হারিয়ে আর্জেন্টিনাকে জীবন দিয়েছেন নাইজেরিয়ার আহমেদ মুসা। পরের ম্যাচেই সেই জীবনটা কেড়ে নিতেও তৈরি

ভোলগাগ্রাদে আহমেদ মুসার গোল, গ্যালারিতে নাইজেরিয়ান–সমর্থকদের উচ্ছ্বাস। সেই উচ্ছ্বাসের ঢেউ আবুজা থেকে ছড়িয়ে গেছে সম্ভবত বুয়েনস এইরেস পর্যন্ত। মুসার জোড়া গোলে আইসল্যান্ডকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে নাইজেরিয়াই তো এই বিশ্বকাপে একটা জীবন দিল আর্জেন্টিনাকে।
পরের ম্যাচটায় কী হবে?

ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নটা শুনে মুচকি হাসেন মুসা। ওই হাসিটা ধরে রেখেই বললেন, ‘হতে পারে যেকোনো কিছু। তবে আমরা জেতার জন্যই খেলব।’
পরের ম্যাচটা ওই আর্জেন্টিনার বিপক্ষেই, ২৬ জুন সেন্ট পিটার্সবার্গে। নাইজেরিয়া ড্র করলেও ক্রোয়েশিয়া-আইসল্যান্ডের মধ্যে অন্য ম্যাচটার ফল পক্ষে গেলে শেষ ষোলোয় চলে যেতে পারে। কিন্তু আর্জেন্টিনাকে পরের রাউন্ডে যেতে হলে জিততেই হবে। মুসা অবশ্য নাইজেরিয়ার জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না, ‘আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গোল করা আমার জন্য কঠিন কিছু না। আর এই ম্যাচের গুরুত্বও আমি জানি। এটা আমাদের জন্য বাঁচা-মরার ম্যাচ।’

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে গোল করা কঠিন কিছু না—মুসার এই দাবিটা আপাতত উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ব্রাজিল বিশ্বকাপেও পোর্তো অ্যালেগ্রেতে গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। আর্জেন্টিনার ৩-২ গোলের জয়ে নাইজেরিয়ার দুটি গোলই মুসার। তারপর পরশু আইসল্যান্ডের বিপক্ষে আরও দুটি গোল করে দুর্দান্ত এক কীর্তিও গড়েছেন সিএসকেএ মস্কোর ফরোয়ার্ড। দুই বিশ্বকাপে গোল করা প্রথম নাইজেরিয়ান তিনি, ৪ গোল নিয়ে বিশ্বকাপে নাইজেরিয়ার সর্বোচ্চ গোলদাতাও। কেমন লাগছে, প্রশ্ন হওয়ার পর দুষ্টুমির হাসিতে বলে দিলেন, ‘রেকর্ড ভাঙার কাজটা আমি খুব ভালো পারি।’

পরশু তাঁর গোল দুটিও তো চোখে লেগে থাকার মতো। বিশেষ করে ৭৫ মিনিটে করা দ্বিতীয় গোলটা এখন পর্যন্ত টুর্নামেন্টের অন্যতম সেরা গোল তো অবশ্যই। এর মিনিট খানেক আগের শটটা বারে না লাগলে হয়ে যেত হ্যাটট্রিকও। এমন পারফরম্যান্সের পর আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচে তাঁকে ঘিরেই তো আশার জাল বুনবে নাইজেরিয়া।

সংবাদ সম্মেলনেই অন্য একজন প্রশ্ন করলেন, আর্জেন্টিনা দলে তো লিওনেল মেসির মতো একজন আছেন। তাঁকে কি আপনি দেখিয়ে দিতে পারবেন, আপনি তাঁর চেয়ে ভালো? এবার মুসার হাসি আরও চওড়া। যেন বোঝাতে চান, এটা আর দেখিয়ে দেওয়ার কী আছে, আমিই তো সেরা। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপে দুজনের পারফরম্যান্স তুলনা করলেও মুসাকেই এগিয়ে রাখতে হবে। আইসল্যান্ডের বিপক্ষে তো ম্যাচসেরাই হয়েছেন, ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচটায় দল হারলেও বদলি নেমে দারুণ কিছু ঝলক দেখিয়েছেন।

সিএসকেএ মস্কোতে অনেক বছর ধরে খেলার সুবাদে রাশিয়া এক অর্থে তাঁর ঘরই হয়ে গেছে। আর মেসির দলের বিপক্ষে গোল করাটাও তাঁর জন্য নতুন কিছু নয়। গত বিশ্বকাপের ওই ম্যাচ তো আছেই, এরপর বছর দুয়েক আগে লেস্টার সিটির হয়ে প্রাক্-মৌসুম একটা ম্যাচেও মেসির বার্সেলোনার বিপক্ষে আরও দুই গোল করেছিলেন নাইজেরিয়ান এই ফরোয়ার্ড।

হাসতে হাসতেই প্রশ্নকর্তা সাংবাদিককে এ তথ্যগুলো মনে করিয়ে দেন মুসা, ‘দুই বছর আগের যখন ব্রাজিলে মুখোমুখি হয়েছিলাম, মেসির দলের বিপক্ষেই তো দুই গোল করেছি। লেস্টারের হয়ে বার্সেলোনার বিপক্ষেও দুই গোল আছে। আমার তো মনে হয়, এবার যখন মুখোমুখি হব, আমি আবার দুই গোল করব।’
শেষ কথাটা কিন্তু মেসির আর্জেন্টিনা সতর্কবার্তা হিসেবে নিতে পারে।