কীভাবে মেসিকে আটকেছেন ফ্রান্স কোচ?

মেসিকে আটকে রেখেছে ফ্রান্স। ছবি: এএফপি
মেসিকে আটকে রেখেছে ফ্রান্স। ছবি: এএফপি
আর্জেন্টিনাকে ৩-৪ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে পা রেখেছে ফ্রান্স। ম্যাচে কীভাবে মেসিকে আটকে রেখেছিলেন, সে রহস্যই শুনিয়েছেন ফ্রান্স কোচ


লিওনেল মেসি নামটি রাশিয়া বিশ্বকাপে এখন সদ্য অতীত। গতকাল ফ্রান্সের বিপক্ষে একটিবারও পাখা মেলে উড়তে দেখা যায়নি আর্জেন্টাইন জাদুকরকে। আসলে তাঁকে চেনা মেসির মতো বল পায়ে ওড়ার সুযোগই দেওয়া হয়নি। প্রতিপক্ষ কোন কোচই-বা চাইবেন, মাঠে মেসি ‘মেসি’ হয়ে উঠুক!

শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামতে হবে, তা নিশ্চিত হওয়ার পরেই অঙ্ক কষতে শুরু করে দিয়েছিলেন ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশম। পুরো আর্জেন্টিনা দল নিয়ে তেমন ভাবতে হয়নি ফ্রান্স কোচকে। তাঁর ট্যাকটিকস বোর্ডের কাটাছেঁড়ার পুরো জায়গাজুড়ে ছিলেন মেসি। তাঁকে কোথায় থামাতে হবে, কোথায় ছাড় দিলেও চলবে। এ নিয়েই অনুশীলনে শিষ্যদের নিয়ে বারবার মহড়া দিয়েছেন দেশম। আর তাত্ত্বিক ক্লাসে আলোচনার পুরোটা জুড়ে মেসি তো ছিলেনই। মোদ্দা কথা, যদি কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট চাও, মেসিকে থামাও—শিষ্যদের প্রতি দেশমের বার্তাটা ছিল এমনই।

গতকাল রাতেই চুকে গেছে মেসি–অধ্যায়। কীভাবে মেসিকে বোতলবন্দী করে রেখেছিলেন, এখন আর সেটা গোপন রেখে কী লাভ! তাই মেসিকে বন্দী করে রাখার গল্পটাই শুনিয়েছেন দেশম, ‘আমার মনে হয়, মেসি আমাদের মিডফিল্ডারদের পেছনে আরও একটু বেশি স্বাধীনতা চেয়েছিল। কিন্তু আমরা তাকে নিষ্ক্রিয় করে রাখতে পেরেছি। তার পেছনে কান্তে সব সময় লেগে ছিল।’

আর্জেন্টিনার বিপক্ষে মাঠে নামার আগে দেশম ভালো করেই পড়ে নিয়েছিলেন মেসির কারিশমা। মেসির পায়ে বল গেলে কী করতে হবে আর বল না থাকা অবস্থায় কী করতে হবে, দুটি বিষয়ই শিষ্যদের ভালো করে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন দেশম, ‘আমাদের কাছে দুটি উপায় ছিল। প্রথমত, সে যেন বল না পায়, সে ব্যবস্থা করা। যা আমরা বারবার করেছি। দ্বিতীয়ত, বল পায়ে গেলে তাঁকে একজন বাধা দেবে, আরেকজন পেছনে থাকবে।’ উমতিতিরা যে পেরেছেন, তা তো গত রাতেই প্রমাণ হয়ে গেছে। ডি মারিয়া, আগুয়েরো, মারকাদো গোল পেলেও মেসি একবারের জন্য ভীতিকর হয়ে উঠতে পারেননি।

মিডফিল্ডার হাভিয়ের মাচেরানো ও এভার বানেগার সঙ্গে মেসির বোঝাপড়াটা যে ভালো, তা ভালোই জানা ছিল দেশমের, ‘আমরা জানতাম, মাচেরানো ও বানেগার সঙ্গে মেসির বোঝাপড়াটা ভালো। ফলে, মেসিকে থামাতে হলে ওই দুজনকেও আটকাতে হবে।’

বোঝাই যাচ্ছে, দেশমের সব পরিকল্পনায় গতকাল খেটে গেছে। মেসিকে তো থামানোর পরিকল্পনা ফাঁস করলেন দেশম। কিন্তু নিজেরা কীভাবে আক্রমণের পরিকল্পনা সাজিয়েছেন, তা কিন্তু বলেননি ফ্রান্স কোচ। সামনে যে আবারও প্রতিপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।