এখনই ইতিহাস, সামনে তো পুরো ভবিষ্যৎ!

৬০ বছর অপেক্ষার পর ফুটবল বিশ্ব পেয়েছে নতুন পেলে। কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: রয়টার্স
৬০ বছর অপেক্ষার পর ফুটবল বিশ্ব পেয়েছে নতুন পেলে। কিলিয়ান এমবাপ্পে। ছবি: রয়টার্স
>পেলের এক কীর্তি তিনি ছুঁয়েছিলেন আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। জোড়া গোল করেছিলেন, এত কম বয়সে বিশ্বকাপের নকআউট ম্যাচে জোড়া গোলের কীর্তি ছিল এত দিন কেবল পেলের। আজ ফাইনালে গোল করে পেলের আরেক কীর্তি ছুঁলেন। ৫৬ বছরে আর কেউ পারেনি...

বয়স মাত্র ১৯। এখনই সর্বকালের সেরার সঙ্গে তুলনা! কিলিয়ান এমবাপ্পে যা করেছেন, তাতে খোদ রেকর্ডই পেলের সঙ্গে উচ্চারণ করবে কিলিয়ান এমবাপ্পের নাম। বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে জোড়া গোলের কীর্তিতে পেলেকে আগেই ছুঁয়েছিলেন। আজ ফাইনালে গোলও করলেন। টিনএজ বয়সে এই দুই কীর্তি করার নজির কেবল পেলের নামের পাশেই ছিল এত দিন!

১৯৫৮ এর ফুটবল বিশ্বকাপ। গ্রুপ পর্বে গোল পাননি কোনো। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে ফুটবল বিশ্ব নতুন এক তারকার সঙ্গে পরিচিত হয়। তিনি পেলে। তাঁর একমাত্র গোলে ওয়েলসকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে যায় ব্রাজিল। সেমিফাইনালে ১৭ বছরের সেই তরুণের হ্যাটট্রিক ব্রাজিলের ফাইনালে ওঠার জন্য যথেষ্ট ছিল।

ফাইনালে সুইডেনকে হারিয়ে নিজেদের প্রথম বিশ্বকাপ জিতেছে সেলেসাওরা। আর সেই ম্যাচেও ছিল পেলের হ্যাটট্রিক। ১৭ বছর ২৪৯ দিন বয়সী পেলের পর ৫৬ বছরে আর কোনো তরুণ বিশ্বকাপের নকআউট পর্বে জোড়া গোল করতে পারেননি। রাশিয়া বিশ্বকাপে ফ্রান্সের কিলিয়ান এমবাপ্পে ভাঙলেন সেই রেকর্ড। শেষ ষোলোতে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে এই তরুণ করেছেন জোড়া গোল।

সেখানেই থামলেন না। পেলের মতো ফাইনালেও করলেন গোল। বয়স উনিশের ঘরে থাকতে আর কোনো খেলোয়াড় ফাইনালে গোল করতে পারেনি। এমবাপ্পে বুঝিয়ে দিলেন, তিনি বড় মঞ্চের জন্য প্রস্তুত। এখনই!

পিএসজির হয়ে গত মৌসুমে খেলছেন দুর্দান্ত। ইউরোপের বড় দলগুলো তাঁকে ক্লাবে নিতে আগ্রহী। বিশ্বকাপে ১৯ বছর বয়সী এই তরুণ কেমন করেন, সেটা নিয়ে আগ্রহ ছিল সবার। ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসরে নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগ হাতছাড়া করেননি তিনি। ৭ ম্যাচে ৪ গোল করেছেন। করিয়েছেন দুটি। বিশ্বকাপ মেসির হবে, নাকি রোনালদোর—এই আলোচনা ছাপিয়ে দৃশ্যপটে ছিলেন নেইমার। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপ হয়ে থাকল বিশ্বমঞ্চে এমবাপ্পের আবির্ভাবের আসর!

মাত্রই তো যাত্রা শুরু, তাতেই জিতে রাখলেন বিশ্বকাপ ট্রফিটাও। কত রথী-মহারথীর অধরা থেকে গেছে এই ট্রফি। খোদ তাঁর দেশের মিশেল প্লাতিনি জেতেননি। জেতেননি ইয়োহান ক্রুইফ, আলফ্রেডো ডি স্টেফানো; জর্জ বেস্টের তো জেতার প্রশ্নই ওঠেনি কখনো। বিশ্বকাপ না জেতা কিংবদন্তিদের তালিকায় হয়তো শেষ পর্যন্ত নিজেদের খুঁজে পেতে হবে মেসিকে, রোনালদোকে। অথচ মাত্র ১৯ বছর বয়সেই সর্বকালের সেরা হয়ে ওঠার একটা শর্ত পূরণ করে ফেললেন এমবাপ্পে। তাতে নিজে রাখলেন বড় ভূমিকাও। পেলের চেয়ে এত কম বয়সে বিশ্বকাপ ট্রফিটাও আর কেউ জেতেনি। এমবাপ্পে কোথায় যাবেন!