বাংলাদেশের লড়াই শেষ, কিন্তু লড়ছে শ্রীলঙ্কা

শ্রীলঙ্কার পুরুষ রাগবি দলের কোচ পিটার উডস। ছবি: প্রথম আলো
শ্রীলঙ্কার পুরুষ রাগবি দলের কোচ পিটার উডস। ছবি: প্রথম আলো
>এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের পদক জয়ের আশা শেষ। শ্রীলঙ্কা এখনো পদক জিততে না পারলেও কাবাডিতে আশা আছে। পুরুষ রাগবির কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে তাঁরা

জাকার্তা এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশের পদকের আশা শেষ হয়ে গেছে আগেই। কাবাডিতে আসেনি একমাত্র প্রত্যাশিত ব্রোঞ্জ। দক্ষিণ এশিয়ায় আরেক দেশ পাকিস্তান তবু তিনটি ব্রোঞ্জ জিতেছে। নেপাল প্যারাগ্লাইডিংয়ে তুলে নিয়েছে গেমসে নিজেদের একমাত্র রুপা। পরাশক্তি ভারত এশিয়াডে জিতেছে ১৩টি সোনাসহ ৫৪টি পদক। এর ৭টি সোনাই এসেছে অ্যাথলেটিকস থেকে। পদকশূন্য বাংলাদেশের মতো অভাগার তালিকায় আছে মালদ্বীপ, ভুটান ছাড়াও শ্রীলঙ্কা।

অথচ শ্রীলঙ্কার এশিয়ান গেমস রেকর্ড বাংলাদেশের চেয়ে দশ গুণ ভালো। বাংলাদেশ এই গেমসে একমাত্র সোনা জিতেছে ২০১০ গুয়াংজু এশিয়াডে। আর শ্রীলঙ্কার সেখানে সোনার সংখ্যাই ১১টি। এ ছাড়াও ১১টি রুপা ও ২৪টি ব্রোঞ্জ। তবে একটা জায়গায় শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। ১৯৮৬ সালের পর এশিয়াডে বাংলাদেশ পদকশূন্য এবারই। কিন্তু শ্রীলঙ্কা পদকশূন্য থেকেছে ১৯৮২, ১৯৮৬ ও ২০১০ সালে।

পদকশূন্যতার হতাশা এবারও গ্রাস করে রেখেছে শ্রীলঙ্কাকে। অ্যাথলেটিকস থেকে দু-একটি পদকের আশা ছিল, কিন্তু অ্যাথলেটরা ব্যর্থ। এশিয়াডে সোনাজী দয়মন্তি দারসা, সুশান্তিকা জয়াসিংহদের বিদায়ের পর শ্রীলঙ্কার ট্র্যাক অ্যান্ড ফিল্ডে শূন্যতা চলছে। বাংলাদেশের শেষ সম্বল নারী কাবাডি দলও হারিয়ে ফেলেছে শ্রেষ্ঠত্ব।

তবে বাংলাদেশের যেখানে পদকের আশা শেষ, সেখানে শ্রীলঙ্কার লড়াই এখনো বাকি। সেটি রাগবি মাঠে। পুরুষ রাগবির কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে শ্রীলঙ্কা। সেমিফাইনালে ওঠার পথে তাদের বাধা চীন। তারপরও ২৮টি খেলায় ১৭৩ জনের বিশাল বহর নিয়ে ইন্দোনেশিয়ায় আসা শ্রীলঙ্কা দল রাগবিকেই মানছে এখন ‘হাতের পাঁচ’। অন্তত যদি একটি ব্রোঞ্জ নিয়ে দেশে ফেরা যায়! যদিও রাগবিতে এশিয়াডে শ্রীলঙ্কা কখনো পদক জেতেনি। গতবার পদকের কাছে গিয়ে চতুর্থ হয়ে ফিরেছে।

আজ জাকার্তার গেলোরা বুং কার্নো ক্রীড়া কমপ্লেক্সের রাগবি মাঠে কথা হলো শ্রীলঙ্কার পুরুষ রাগবি দলের কোচ পিটার উডসের সঙ্গে। এই কিউই ছিলেন রাগবিতে অলিম্পিক সোনাজয়ী ফিজির জাতীয় দলের সহকারী কোচ। মিক্সড জোনে এই প্রতিনিধির এক প্রশ্নের উত্তরে উডস বললেন, ‘শ্রীলঙ্কার তো সব আশাই শেষ। তবে রাগবিতে পদকের আশা আমাদের এখনো আছে। কিন্তু ছেলেদের আমি চাপ দিতে চাই না। ওরা চাপমুক্ত হয়ে খেলুক।’

বাংলাদেশে রাগবির প্রচলন হয়েছে মাত্রই। বলতে গেলে এখনো আঁতুরঘরে। অথচ শ্রীলঙ্কার রাগবির ইতিহাস শত বছরেরও পুরোনো। স্কুলগুলোতে রাগবি খেলার চর্চা থাকে সারা বছরই। অনেক খেলোয়াড় তৈরি হচ্ছে সেখানে। তাই রাগবিতে শ্রীলঙ্কার আশাও বেশি। তবে এবার না হোক, পরেরবার রাগবিতে পদকের জন্য আরও ভালোভাবে তৈরি হয়ে আসবে জয়াসুরিয়া-মাহেলা-সাঙ্গাকারাদের দেশ। বাংলাদেশের তো সেই আশাও নেই!