বেল-বেনজেমা ছুটছেন...

জোড়া গোল করেছেন বেনজেমা। ছবি: রয়টার্স
জোড়া গোল করেছেন বেনজেমা। ছবি: রয়টার্স
>লা লিগায় লেগানেসকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। জোড়া গোল করেছেন করিম বেনজেমা। একটি করে গোল করেছেন রামোস ও গ্যারেথ বেল। পেনাল্টি থেকে লেগানেসের হয়ে একমাত্র গোলটি করেন কেরিয়ো।

গত ম্যাচে ‘বেল-বেনজেমা’র ৩ গোল। এই ম্যাচেও একই স্কোরলাইন। তাঁরা তো ছুটছেনই...

জিরোনার বিপক্ষে ম্যাচটির কথা মনে আছে? না থাকলে লেগানেসের বিপক্ষে আজকের ম্যাচের স্কোরলাইনটা জেনে নিতে পারেন; রিয়াল ৪-১ লেগানেস। জোড়া গোল করেছেন বেনজেমা। রামোস ও বেল একটি করে গোল করেছেন। অ্যাসেনসিও একটি পেনাল্টি আদায় করে নিয়েছেন। জিরোনার বিপক্ষে ম্যাচের চিত্রটা এমনই ছিল। ওই ম্যাচটাতে অ্যাসেনসিও দুটি পেনাল্টি আদায় করেছিলেন, এ–ই যা!

বার্নাব্যুতে শনিবার রাতে আরও একটি ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সেটা রিয়ালের নয়া গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার। অবশ্য মৌসুমের প্রথম ম্যাচে গোল হজমের এই গোলকধাধাঁ থেকে নিশ্চিতভাবে বের হতে চান বেলজিয়ান এই গোলরক্ষক। ঘটনা আর কিছু নয়; কোর্তোয়া তাঁর ক্যারিয়ারে একবারই শুধু ‘ক্লিন শট’ রাখতে পেরেছেন। রিয়াল যেভাবে চেপে খেলছিল, মনে হচ্ছিল, তিন কাঠির নিচে কোর্তোয়া আজ অলস সময় কাটাবেন। বের হবেন অভিষেক ম্যাচে গোল খাওয়ার ‘কুচক্র’ থেকে। কিন্তু পারলেন কই! ম্যাচের ১৭তম মিনিটে বেলের গোলে এগিয়ে থেকেও ২৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল আদায় করে নেয় লেগানেস। কে জানে কোর্তোয়া আছেন বলেই লেগানেস একটা গোল পেয়েছে হয়তো! সে যা-ই হোক। লেগানেসকে হারিয়ে লা লিগার পয়েন্ট টেবিলে শীর্ষে আছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

বেলের গোলে শুরুতেই ১-০তে এগিয়ে যায় রিয়াল। ছবি: রয়টার্স
বেলের গোলে শুরুতেই ১-০তে এগিয়ে যায় রিয়াল। ছবি: রয়টার্স

ম্যাচের শুরু থেকেই তেড়েফুঁড়ে আক্রমণে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। দখলে ছিল মাঝমাঠও। তবে প্রথমার্ধে লেগানেসও ছিল গোছালো। রিয়ালের আক্রমণ সামলেছে বেশ ভালোভাবেই। বলের দখল নিয়ে খেলতে না পারলেও পাল্টা-আক্রমণে বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল অতিথিরা। ষষ্ঠ মিনিটেই গোলের সুযোগ পায় রিয়াল মাদ্রিদ। অ্যাসেনসিওর শট গোলপোস্টের ওপর দিয়ে চলে গেলে রক্ষা পায় লেগানেস। চোখ রাঙিয়ে লেগানেসের রক্ষণে বারবার ভয় ধরিয়ে দিচ্ছিলেন বেনজেমা-বেলরা। মাঝমাঠ থেকে মডরিচের নিখুঁত পাস আর মার্সেলোর মাঠজুড়ে দাপিয়ে বেড়ানো ছিল উপভোগ্য। রিয়াল প্রথম গোলের দেখা পায় ১৭তম মিনিটে এসে। রামোসের লম্বা ক্রসে মাথা ছুঁয়ে বেলের দিকে দেন কার্ভাহাল। বলটা রিসিভ করে জোরালো শটে জালে পাঠান ওয়েলস ফরোয়ার্ড । ২৪তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতায় ফেরে লেগানেস। রিয়ালের ডি-বক্সে লেগানেসের খেলোয়াড় এরাসোকে ফাউল করে বসেন ক্যাসামিরো। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কেরিয়োর পেনাল্টি শট আটকাতে পারলে কোর্তোয়া তাঁর বৃত্ত থেকে বের হতে পারতেন নিশ্চিত। সেটা তিনি পারেননি। কেরিয়োর গোলে ১-১-এ সমতায় ফেরে লেগানেস। 

প্রথামার্ধের শেষ মহূর্তে এসে গোল ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ পায় রিয়াল মাদ্রিদ। বেলের ক্রস থেকে পাওয়া বল দুর্দান্ত ভলি করেন বেনজেমা। লেগানেসের গোলরক্ষক বেনজেমার শট আটকে দিয়ে দলকে রক্ষা করেন।

দ্বিতীয়ার্ধে এসে গোল উৎসবে মেতে ওঠে রিয়াল। ৪৮তম মিনিটেই বেনজেমার গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল। অ্যাসেনসিওর ক্রস থেকে নিখুঁত হেডে বল জালে জড়ান ফরাসি এই তারকা। এরপর খানিকটা ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় লেগানেস। ৬২তম উল্টো গোল হজম করে ম্যাচ হাতছাড়া করে ফেলে তাঁরা। লুক মডরিচের কাছ থেকে বল পেয়ে আড়াআড়ি শটে লা লিগার এই মৌসুমে ব্যক্তিগত চার নম্বর গোলটি করেন বেনজেমা। ৬৬তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে লেগানেসের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠোকেন রামোস। অ্যাসেনিসওকে নিজেদের সীমানায় ফাউল করেন লেগানেসের খেলোয়াড় বাসতিনসা। এই মৌসুমে এ নিয়ে ৩টি পেনাল্টি পেয়েছে রিয়াল। ৩টিই আদায় করেছেন অ্যাসেনসিও। 
ম্যাচের শেষ মুহূর্তে আরও একটা গোল পেতে পারত স্বাগতিকেরা। ইসকোর শট অল্পের জন্য বেপথু হলে ৪-১ গোলের ব্যবধান নিয়েই মাঠ ছাড়ে রিয়াল মাদ্রিদ।