ঢাকায় আজ ভারত-পাকিস্তান মহারণ

অনুশীলনে ভারতীয় দল। ছবি: প্রথম আলো
অনুশীলনে ভারতীয় দল। ছবি: প্রথম আলো
>

আজ বিকাল চারটায় প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে নেপাল ও মালদ্বীপ। সন্ধ্যা সাতটায় দ্বিতীয় সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তান।

পঞ্চমবারের মতো সাফ ফুটবলের সেমিফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। কিন্তু ফাইনালে খেলা হয়নি কখনো। আজ আবার নতুন স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নামবে পাকিস্তান। তাদের সামনে বড় বাধা প্রতিবেশী দেশ ভারত। আর অন্য সেমিফাইনালে মালদ্বীপের মুখোমুখি হবে নেপাল।

দুটি সেমিফাইনাল থেকে নেপাল আর পাকিস্তান জিতলে নতুন চ্যাম্পিয়নই এবার পাবে সাফ। সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। নেপালের কথাই ধরা যাক। দলটির রক্ষণ যেমন গোছানো, আক্রমণভাগে বিমল, ভরত খাওয়াসরা তেমনি ভাঙতে পারেন যেকোনো রক্ষণ। বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের শক্তিটা দেখিয়েছেও নেপাল। শেষ চারের আগেই দর্শক বানিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকদের।

বড় কোনো প্রত্যাশা না নিয়ে ঢাকায় পা রাখা পাকিস্তানও উঠে এসেছে সেমিফাইনালে। সেমিতে ওঠা মালদ্বীপই একমাত্র দল, যারা দুই ম্যাচে কোনো গোল না করে এবং মাত্র এক পয়েন্ট নিয়ে উঠে এসেছে সেমিফাইনালে। তবে সবাইকে একপাশে রেখে বলতেই হচ্ছে, বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারতই শিরোপার এক নম্বর দাবিদার।
এটা ঠিক, ভারত-পাকিস্তান ক্রিকেট বা হকি ম্যাচ যতটা যুদ্ধের আবহ ফিরিয়ে আনে, ফুটবল মাঠে তেমন বারুদ পোড়ায় না। তারপরও ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের মেজাজই আলাদা। যদিও ফুটবলের ময়দানে প্রতিবেশীদের বিপক্ষে ভারতের একচ্ছত্র প্রাধান্য। দুই দেশের ২৩ সাক্ষাতে ভারতের জয় ১৪টি। ছয় ড্র আর পাকিস্তান জিতেছে তিনবার।

কাজেই পাকিস্তান মানসিকভাবে অনেকটা পিছিয়ে। কিন্তু তিন বছর আন্তর্জাতিক ফুটবলে নিষিদ্ধ পাকিস্তান ফিরেই এশিয়ান গেমসে চার দশক পর প্রতীক্ষিত জয় পেয়েছে (নেপালে বিপক্ষে)। ঢাকায় এসে সাফের সেমিফাইনালে ওঠাই অনেক প্রাপ্তি পাকিস্তানের। ফাইনালে উঠতে পারলে সেটি হবে বোনাস। দলটি ভীষণ উজ্জীবিত এবং আশাবাদীও।

সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান দলের কোচ ও অধিনায়ক। ছবি: সংগৃহীত
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান দলের কোচ ও অধিনায়ক। ছবি: সংগৃহীত

ডেনমার্কের বিভিন্ন লিগে খেলা ৫ ফুটবলার যোগ দেওয়ায় শক্তি বেড়েছে পাকিস্তানের। শারীরিকভাবে পাকিস্তান দল অনেকটা এগিয়ে অন্যদের চেয়ে। এই দল তারুণ্যনির্ভর ভারতের দ্বিতীয় সারির দলকে হারিয়ে দেবে না কে বলতে পারে!

তবে অভিজ্ঞতা, পেশাদারি, সবকিছু মিলিয়ে ভারত সাফ ফুটবলে বরাবরই ‘বাঘ’। সাফ নিয়ে এখন আর অত ভাবে না ভারত। এ কারণেই কি না ভারতের প্রধান কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন কাল সংবাদ সম্মেলনেই এলেন না।

ভারত যা করার মাঠেই করছে। এই সাফে নিজেদের অনূর্ধ্ব-২৩ দল পাঠালেও শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপকে পরিষ্কার ২-০ গোলে হারিয়ে নিজেদের শক্তি দেখিয়েছে। ভারতের মূল জাতীয় দলে আসা-যাওয়া করা চারজন ফুটবলার আছেন এখানে। সব মিলিয়ে আজ ভারত ফেবারিট হলেও দলটি কিন্তু নিজেদের ফেবারিট বলছে না। বরং কাল সংবাদ সম্মেলনে ভারতের সহকারী কোচ ভেঙ্গকটেশ শান নুগাম ফেবারিট বলে গেছেন নেপালকে।

নেপালও বিশ্বাস করছে সাফ জেতা সম্ভব। কোচ বালগোপাল মহারজনকে প্রত্যয়ী লাগল কাল সংবাদ সম্মেলনে। দলটির এর আগে চার সেমিফাইনালের একটিতে মালদ্বীপের কাছে হেরেছে ২-০ ব্যবধানে। বাংলাদেশের কাছে একবার ও আফগানিস্তানের কাছে দুবার। সেমিতে আর হার নয়, বলে গেছেন নেপালের ডিফেন্ডার বিরাজ মহারজন।

তবে আজ পরিসংখ্যানে এগিয়ে মালদ্বীপ। ফিফার ওয়েবসাইট অনুযায়ী, নেপাল-মালদ্বীপ আগে ১৫ সাক্ষাতে মালদ্বীপ জিতেছে সাতবার। চারবার নেপাল, চারটি ড্র। তবে মালদ্বীপ দলটিকে এবার খুব ক্ষয়িষ্ণু দেখাচ্ছে। দুই ম্যাচে কোনো গোল নেই। এক পয়েন্ট নিয়ে টস–ভাগ্যে শ্রীলঙ্কাকে টপকে ভাগ্যক্রমে উঠে আসা সেমিতে।