রোনালদো-মেসিতে পার্থক্য যেখানে

দুই মহাতারকার মাঝে পার্থক্য জানালেন তেভেজ। ছবি: রয়টার্স
দুই মহাতারকার মাঝে পার্থক্য জানালেন তেভেজ। ছবি: রয়টার্স

লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো—এ দুজনের মধ্যে সেরা কে? এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া কঠিন। দুজনের মধ্যে পার্থক্য কী কী, এ প্রশ্নের উত্তর দেওয়া ঠিক ততটাই সোজা। একজন ডান পা নির্ভর, একজন বাঁ পাকে পুঁজি করে খেলেন। একজন ভয়ংকর এক গোলস্কোরার। আরেকজন প্লে মেকার হয়েই খেলতেই বেশি স্বচ্ছন্দ। খেলার ধরন, আকার আকৃতি, ব্যক্তিগত জীবন মিলিয়ে পার্থক্যের কমতি নেই। তবে কার্লোস তেভেজ দুজনের মধ্যে মূল একটি পার্থক্য খুঁজে পেয়েছেন।

স্বল্প কয়েকজন খেলোয়াড়, যাঁরা এ প্রজন্মের সেরা দুজনকে সঙ্গী পেয়েছেন তাঁদের একজন তেভেজ। আর্জেন্টিনার জার্সিতে ২০০৬ সাল থেকেই মেসির সঙ্গী ছিলেন তেভেজ। আবার ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে ওয়েইন রুনি ও রোনালদোর সঙ্গে ভয়ংকর এক ত্রয়ীর অংশও ছিলেন। ১০টি ব্যালন ডি’অর জেতা এ দুজনের মধ্যে পার্থক্য করার অধিকার তাই আছে এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথোপকথনে তেভেজ বলেছেন, ‘লিওনেল মেসিকে আমি কখনো জিমে যেতে দেখেনি। ওকে বল থামানো কিংবা ও ধরনের কোনো অনুশীলনও করতে দেখেনি। এসব ওর স্বভাবগত।’

এটুকু পরেই মনে হতে পরে মেসি তাহলে অনুশীলন করেন না! না, মেসিরও দুর্বলতা আছে এবং সেটা কাটাতে কঠোর পরিশ্রমই করেন আর্জেন্টাইন, ‘পেনাল্টি নেওয়ার জন্য ও অনুশীলন করত। আগে তো ও পেনাল্টি নিত না আর এখন সে সব কোনায় মারে।’

রোনালদোর ব্যাপার উল্টো। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড সবকিছুই নিখুঁত করায় বিশ্বাসী। আর এ জন্য রোনালদো কঠোর পরিশ্রম করেন, ‘ক্রিস্টিয়ানো সব সময় অনুশীলন শেষে জিমে যাবেই। ওর জন্য ব্যাপারটা একদম বাধ্যবাধকতার মতো। সবকিছুতে সেরা হওয়ার প্রতিজ্ঞার মতো। ও সব সময় সবার আগে হাজির হতো মাঠে।’

নিজেকে নিখুঁত করতে রোনালদোর আত্মত্যাগের গল্প করতে যা বলেছেন তেভেজ যা বলেছেন, তা রীতিমতো অবিশ্বাস্য, ‘অনুশীলনের সময় যখন নয়টায় ঠিক করা হতো, আমি আটটায় যেতাম। কিন্তু তখনো রোনালদো মাঠে থাকত। সাড়ে সাতটায় উপস্থিত হলেও ওকে সেখানে দেখতাম। আমি তখন নিজেকে প্রশ্ন করতে শুরু করলাম, “কীভাবে আমি এ লোকটাকে টপকাতে পারি?” তাই একদিন আমি ছয়টায় হাজির হলাম। কিন্তু রোনালদো তখনো অনুশীলন করছিল! চোখেমুখে ঘুম লেগে আছে, তবু সে সেখানে।’

নিজেকে সেরা বানাতে হলে কতটা নিবেদন থাকতে হয়, সেটা আরও একবার জানা গেল তেভেজ ও রোনালদোর সুবাদে।