রাশিয়ায় ফাইনালে মাঠে নামা দর্শককে বিষ খাওয়ানোর অভিযোগ

মাঠে নেমে এমবাপ্পেদের সঙ্গে হাইফাইভ করেছিলেন প্রতিবাদকারীরা। ছবি: রয়টার্স
মাঠে নেমে এমবাপ্পেদের সঙ্গে হাইফাইভ করেছিলেন প্রতিবাদকারীরা। ছবি: রয়টার্স

২০১৮ বিশ্বকাপের ফাইনালে অনেক কিছুই দেখা গেছে। অনেক দিন পর কোনো ফাইনালে গোলের পর গোল হয়েছে। ফাইনালে ট্রফি বুঝিয়ে দেওয়ার সময় টানা বৃষ্টি দেখা গেছে। সে বৃষ্টিতে ভিজতে দেখা গেছে দুইটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানসহ (অবশ্যই ভ্লাদিমির পুতিন বাদে) আরও নানা হোমরাচোমরাকে। এরই ডামাডোলে হয়তো ফাইনালে চার দর্শকের মাঠে নামার ঘটনাটি খুব একটা গুরুত্ব পায়নি।

ফাইনালে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে, ৫২ তম মিনিটে খেলা থামিয়ে দিতে হয়। নিরাপত্তাকর্মীর পোশাকে চার দর্শক নেমে আসেন মাঠে। খেলা থামানোর আসল উদ্দেশ্য তখন বোঝা যায়নি। কারণ তাঁরা মাঠে নেমে ফ্রেঞ্চ খেলোয়াড়দের সঙ্গে হাই ফাইভ করে সাধারণ দর্শকসুলভ আচরণই দেখিয়েছেন। পরে রাশিয়ার প্রতিবাদী গ্রুপ ‘পুসি রায়ট’ টুইট করে জানিয়েছিল, ‘বিশ্বকাপ ফাইনালে আমাদের চার সদস্য।’ ভেরোনিকা নিকুলশিনা, ওলগা কুরাশোভা, পিওতর ভেরজিলফ ও ওলগা পাখতুসোভা—তাঁরা সবাই পুতিনের সামনেই এমন অভিনব কাজ করেছিলেন একটি উদ্দেশ্যে, রাশিয়ায় বাকস্বাধীনতা চান তাঁরা।

এভাবেই মাঠ থেকে বের করে নেওয়া হয়েছিল তাদের। ছবি: রয়টার্স
এভাবেই মাঠ থেকে বের করে নেওয়া হয়েছিল তাদের। ছবি: রয়টার্স

তখন এ চারজনকে ১৫ দিনের জন্য গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছিল। তিন বছর যেকোনো খেলায় দর্শক হিসেবেও জুটেছিল নিষেধাজ্ঞা। এরপর সবাই এ চারজনের কথা ভুলেই গিয়েছিল। কিন্তু নতুন এক খবরে আবার সবাইকে নড়েচড়ে বসতে হয়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় পিওতর ভেরজিলফকে হাসপাতালে নেওয়ার পরই শুরু হয়েছে গুঞ্জন। মিডিয়াজোনা নামের একটি অনলাইন পত্রিকার প্রকাশক ভেরজিলফ। রাশিয়ায় মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সোচ্চার এ পত্রিকা। পুসি রায়ট বুধবার দাবি তুলেছে, ৩০ বছর বয়সী ভেরজিলফকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে। অফিশিয়াল টুইটার পেজে লেখা হয়েছে, ‘আমাদের বন্ধু, ভাই কমরেড পিওতর ভেরজিলফ অসুস্থ। তাঁর জীবন এখন ঝুঁকির মুখে। আমাদের ধারণা তাঁকে বিষ খাওয়ানো হয়েছে।’ অনলাইন পোর্টাল মেডুজা জানিয়েছে, ভেরিজিলফের বান্ধবী ভেরোনিকা নিকুলশিনা জানিয়েছেন মঙ্গলবার প্রথমে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন ভেরসিলফ। ধীরে ধীরে কথা বন্ধ হয়ে যাওয়া ও হাঁটার শক্তি হারিয়ে ফেলার পর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে ভেরজিলফকে।

মিডিয়াজোনার প্রধান সম্পাদক সের্গেই স্মিরনোভ অবশ্য মতামত প্রকাশে সাবধানী নীতি গ্রহণ করেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভেরজিলফের অসুস্থতার কথা জানিয়ে বলেছেন, কেউই তাঁর কী হয়েছে এটা বলতে পারছে না। ফলে আসলেই কী হয়েছে বা হচ্ছে, সেটা বোঝা কঠিন।