এশিয়া কাপ মানেই সেই যন্ত্রণা

মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর কাছে ২০১২ এশিয়া কাপ বড় বেদনার। ছবি: প্রথম আলো
মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহর কাছে ২০১২ এশিয়া কাপ বড় বেদনার। ছবি: প্রথম আলো

নিশ্বাস-দূরত্ব থেকে শিরোপার স্বাদ না পেয়ে ফিরে আসা—ক্রিকেটে এর চেয়ে হৃদয়বিদারক আর কী হতে পারে! ঘরের মাঠে ২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে ওই হার হৃদয় ভেঙে দিয়েছিল বাংলাদেশের মানুষের। সাকিব-মুশফিকদের বুকভাঙা কান্না সংক্রমিত হয়েছিল কোটি সমর্থকদের মধ্যে। কী আশ্চর্য, এশিয়া কাপের স্মৃতি নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ছয় বছর আগের সেই ম্যাচটার কথাই বেশি এল মাশরাফি, মুশফিক, তামিম, মাহমুদউল্লাহদের মুখে!

মাশরাফি বিন মুর্তজা
২ রানে হারাটাই মনে আসে সবার আগে। ওটা খুব হতাশার ছিল। জয়টা একদম হাতে ছিল আমাদের, খুব সহজ ছিল কাজটা। ভারতকে হারানোর ম্যাচেও আমরা বেশ ভালো খেলি। তবে হারের স্মৃতিটাই বেশি নাড়া দেয়। সব মিলিয়ে অবশ্য ওই এশিয়া কাপটা ছিল আমাদের জন্য টার্নিং পয়েন্ট। এরপর থেকেই দলটা আস্তে আস্তে বদলাতে শুরু করল। আমাদের নিজেদের প্রতি আস্থা বাড়ল। আমরা জিততে পারব, জেতা সম্ভব—এই বিশ্বাসটা এল। ২ রানে হারাটা হয়তো অনেক হতাশাজনক ছিল। কিন্তু ওখান থেকে ইতিবাচক অনেক কিছুও পেয়েছি। যেটা পরে কাজে লেগেছে।

মুশফিকুর রহিম
ফাইনালে গিয়ে ২ রানের হারের স্বপ্নভঙ্গ, এর চেয়ে বেদনার আর কিছু হতে পারে না! ২০১২ সালের ওই ম্যাচটার কথাই বেশি মনে পড়ে এশিয়া কাপের প্রসঙ্গ উঠলে। ম্যাচটা সেদিন আমাদেরই জেতা উচিত ছিল। শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার সেই আক্ষেপ আমরা আজও বয়ে বেড়াচ্ছি। অবশ্য ওই এশিয়া কাপেই আমরা ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে হারিয়েছি। চ্যাম্পিয়ন হতে পারিনি বলে ওই জয়গুলো তো মিথ্যা হয়ে যায়নি! ফাইনালে উঠলাম তো ওই দুই জয়ের কারণেই। আমার স্মৃতিতে তাই সেই দুটি ম্যাচও থেকে যাবে আজীবন।

তামিম ইকবাল
২০১২ সালের এশিয়া কাপটাই মনে আসে সবার আগে। তবে সেটা ফাইনালে ২ রানে হেরে যাওয়ার জন্য নয়। ওই এশিয়া কাপ এমন একটা টুর্নামেন্ট ছিল, যেখানে আমাদের সময়ের দলটা প্রথমবার ভালো কিছু বা বিশেষ কিছু করতে পেরেছে। ওই টুর্নামেন্ট আমাদের খেলায় অনেক বড় পরিবর্তন নিয়ে আসে। অনেকে হয়তো বলবে ২০১৫ থেকে আমাদের উন্নতির গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, কিন্তু পুরো একটা সিরিজে বা টুর্নামেন্টে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেট খেলা তো আমাদের সেবারই প্রথম!

মাহমুদউল্লাহ
২০১২ এশিয়া কাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে মাত্র ২ রানে হেরে গিয়েছিলাম আমরা। এশিয়া কাপ বললে মন খারাপ করা ওই ম্যাচটার কথাই মনে পড়ে সবার আগে। অবশ্য ২০১৬ এশিয়া কাপে পাঁচ বল বাকি থাকতে পাকিস্তানকে হারিয়েছিলাম। সেই স্মৃতিটাও টাটকা। ২০১২-এর ফাইনালে হেরে গেলেও ওই ম্যাচ থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার মতো অনেক কিছুই দেখি। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার খুব কাছে চলে গিয়েছিলাম আমরা। হয়তো সেই অনুপ্রেরণা থেকেই টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হওয়া ২০১৬ এশিয়া কাপেও আমরা ফাইনাল খেলি।