ম্যাথুসের 'সব বিভাগে হারে'র গ্লানি

>
শ্রীলঙ্কার অনলাইন পোর্টালে তামিম-ম্যাথুসের সেই ছবি। ফ্রেমে বেঁধে রাখার মতো দৃশ্য। ছবি: দ্যপাপারে.কম
শ্রীলঙ্কার অনলাইন পোর্টালে তামিম-ম্যাথুসের সেই ছবি। ফ্রেমে বেঁধে রাখার মতো দৃশ্য। ছবি: দ্যপাপারে.কম

বাংলাদেশের কাছে ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হেরেছে শ্রীলঙ্কা। এই হারের পেছনে নিজেদের ব্যাটিং ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন লঙ্কান অধিনায়ক। চোট নিয়ে তামিম ইকবালের বীরোচিত মাঠে ফেরারও প্রশংসা করেছেন তিনি

শ্রীলঙ্কার একটি খেলাধুলার অনলাইন পোর্টালের ছবি কাল রাত থেকেই ঝড় তুলেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। দলের প্রয়োজনে চোট নিয়েই মাঠে ফেরা তামিম ইকবালের সামনে হাঁটু মুড়ে কুর্নিশের ভঙ্গিতে কী যেন বলছেন অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। তামিমও জবাবে ডান হাত দিয়ে লঙ্কান অধিনায়কের গা সাপটে দিচ্ছেন। যেন সান্ত্বনা দিচ্ছেন! তামিম কি তাহলে জয়টা আগেই দেখতে পেয়েছিলেন? ম্যাথুসও কি তেমনি টের পেয়েছিলেন হারের ইঙ্গিত? ছবিটাকে প্রতীকী হিসেবে ধরে নিলে এমন সব প্রশ্ন মনে উঁকি দিতেই পারে।

কিন্তু ম্যাথুসের মনে কোনো প্রশ্ন নেই। কাল অন্তত ক্রিকেটের সব বিভাগেই যে বাংলাদেশ তাঁদের পর্যুদস্ত করেছে তা নিয়ে লঙ্কান অধিনায়কের মনে কোনো প্রশ্ন নেই। হারের পর ম্যাথুস নিজেই বলেছেন, ‘কৃতিত্ব বাংলাদেশকে দিতেই হয়। তাঁরা আমাদের সব বিভাগেই পরাজিত করেছে।’

২৬২ রান তাড়া করতে নেমে ১৩৭ রানের হারই বলছে লঙ্কানরা কোনো বিভাগেই বাংলাদেশের সঙ্গে পেরে ওঠেনি। কিন্তু এই হারের ব্যবচ্ছেদ করতে গেলে ১০ম উইকেটে তামিম ও মুশফিকের অবিস্মরণীয় জুটিই সবার আগে চোখে ভাসবে। বিশ্লেষকদের মতে, দুজনের বীরোচিত জুটিতেই লঙ্কানরা মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়েছিল। তা অনূদিত হয়েছে ব্যাটিং ধসে।

সংবাদ সম্মেলনে লঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। ছবি: টুইটার
সংবাদ সম্মেলনে লঙ্কান অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস। ছবি: টুইটার

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে তামিম চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। হাসপাতাল ঘুরে আবার মাঠেও ফিরে গড়েছেন সাহসিকতার অনন্য নজির। আর মুশফিক? ১৪৪ রান করে বাংলাদেশের ইনিংসটা বলতে গেলে তিনি একাই টেনেছেন। চোটগ্রস্ত (এক হাতে ব্যাট করা) তামিমকে সঙ্গে নিয়ে ১০ম উইকেটে তুলেছেন ৩২ রান। এই জুটিকে প্রাপ্য কৃতিত্বটুকু বুঝিয়ে দিলেন ম্যাথুস, ‘সে (তামিম) অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে। মুশিও খুবই ভালো ব্যাট করেছে, আমার তো মনে হয় সে দারুণ খেলেছে। তামিম অনেক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে এক হাতে ব্যাট করতে নেমে। এভাবে ব্যাট করা কখনই সহজ নয়।’

বাংলাদেশের রানটা তাড়া করা সম্ভব ছিল বলে মনে করেন ম্যাথুস। ব্যর্থতার কারণ হিসেবে ১২৪ রানে গুটিয়ে যাওয়া আর কিছু ক্যাচ ফেলাকে টেনে আনলেন লঙ্কান অধিনায়ক, ‘ব্যাটিং আমাদের হারের প্রধান কারণ। আর ফিল্ডিং এর সময় আমরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ফেলেছি। ২৬০ রান এই উইকেটে তাড়া করে জেতার মত স্কোর ছিল। উইকেট খুবই ভালো ছিল। কিন্তু ব্যাটিং এর সময় আমরা অনেক বাজে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এশিয়া কাপের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের কাছে হেরে সামনের পথটা আরও কঠিন করে তুলল শ্রীলঙ্কা। কাল বাঁচামরার ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হবে ম্যাথুসের দল। লঙ্কান অধিনায়ক কিন্তু বিপদটা ভালোই টের পাচ্ছেন, ‘আমরা অবশ্যই এখন চাপের মুখে, আমাদের এখন একটাই লাইফ লাইন আছে। সামনের ম্যাচটা আমাদের জন্য বাঁচা মরার লড়াই।’

সত্যিই বাঁচামরার লড়াই। হারলেই যে বিদায়!