শ্রীলঙ্কা-বাংলাদেশের ক্রিকেট সম্পর্কে কেন এত আগুন!

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতে বাড়তি তৃপ্তি পান বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিতে বাড়তি তৃপ্তি পান বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলতে নামলেই দ্বৈরথের আবহ টের পান বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। চন্ডিকা হাথুরুসিংহে লঙ্কানদের কোচ হয়ে যাওয়া কিংবা নিদাহাস ট্রফির সময় লঙ্কান ক্রিকেটার ও দর্শকদের বাজে আচরণের কারণেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় বাড়তি তৃপ্তি দেয় মাশরাফি-মুশফিকদের।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের বাড়তি তৃপ্তি দেয়। অনেকেই বলবেন, চন্ডিকা হাথুরুসিংহে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথে বাংলাদেশের কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে শ্রীলঙ্কার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ব্যাপারটার শুরু। লঙ্কানদের বিপক্ষে বাড়তি রেষারেষিটা হাথুরু তাদের কোচ হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে বটে, তবে এটিতে বাড়তি রসদ নাকি জুগিয়েছে গত মার্চের নিদাহাস ট্রফি। সে কারণেই হয়তো দুবাইয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৩৭ রানের জয়ের পর মুশফিকুর রহিম বললেন, ‘শ্রীলঙ্কাকে যেকোনো মূল্যে হারাতে ইচ্ছা করে।’

এই ‘যেকোনো মূল্যে হারানো’র ইচ্ছার ব্যাপারটিই যেন সেদিন মুশফিকের খেলায় ফুটে উঠছিল বারবার। লঙ্কানদের হারাতে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা কতটা মরিয়া থাকেন, সেটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন তামিম ইকবাল। কবজিতে চোট পেয়ে মাঠ থেকে বেরিয়ে গেলেও দলের প্রয়োজনে তিনি মাঠে ফিরলেন ভাঙা কবজিকে আড়াল করে। ভাঙা হাতেই ব্যাট করে বাংলাদেশ ওপেনার বুঝিয়ে দিয়েছেন, লঙ্কানদের বিপক্ষে জয়ে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের আকুতিটা।

গত শ্রীলঙ্কা সফরে এভাবেই উদ্‌যাপন করেছিল বাংলাদেশ দল। ফাইল ছবি
গত শ্রীলঙ্কা সফরে এভাবেই উদ্‌যাপন করেছিল বাংলাদেশ দল। ফাইল ছবি

কেন এই মরিয়া ভাব! মুশফিক প্রথম আলোকে অকপটে জানিয়েছেন সবকিছু, ‘নিদাহাস ট্রফিতে ওদের মাঠে ওরা আমাদের সঙ্গে যে রকম ব্যবহার করেছে, দর্শকেরা ড্রেসিংরুমের কাছে এসে যে রকম আচরণ করেছে, সফরকারী দলের জন্য সেটি ছিল খুবই অসম্মানজনক।’

গোটা ব্যাপার শ্রীলঙ্কানরাই শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন মুশফিক, ‘আমি যতবার শ্রীলঙ্কায় গেছি, ওদের বিপক্ষে খেলেছি, ওদের দর্শকদের খুব ভালো মনে হয়েছে, খুব বন্ধুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। কিন্তু নিদাহাস ট্রফি খেলতে গিয়ে যা দেখলাম, সেটি আর আগে কখনো দেখিনি। ফাইনালের দিন মনেই হয়নি বাংলাদেশ-ভারত খেলছে। মনে হয়েছে, শ্রীলঙ্কা আর বাংলাদেশ খেলছে। খুব অবাক লেগেছিল আমার। ক্রিকেটপাগল জাতি হিসেবে সবাই যাদের এত শ্রদ্ধা করে, তাদের কাছ থেকে এটা আশা করিনি। এর আগে মাঠে যেটি হয়েছিল, সেটি সারা বিশ্ব জানে, রাগের মাথায় অমন কিছু হতেই পারে। এসবে একদিকে ভালোই হয়েছে, ওদের সঙ্গে যখনই খেলা হয়, ব্যক্তিগতভাবে আমার মধ্যে একটা বাড়তি জেদ কাজ করে। যেকোনো মূল্যে শ্রীলঙ্কাকে হারাতে ইচ্ছা করে।’

হাথুরুসিংহেকে নিয়েও বক্তব্য আছে মুশফিকের। তিনি মনে করেন, ‘কোচ হাথুরু আমাদের সব দুর্বলতা জানেন-বোঝেন বলে বলা হলেও খেলোয়াড়েরা কেন যেন মাঠে সেটি দেখাতে পারছে না। এটাই বারবার প্রমাণিত হচ্ছে।’