এশিয়া কাপ সূচি-বিভ্রান্তির মূলে আইসিসি?
>কোয়ালিফায়ার ওয়ান, কোয়ালিফায়ার টু কিংবা এ-১, এ-২, বি-১, বি-২ নিয়ে দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি। এ-২ বা বি-২ মানে এই গ্রুপের রানার্স আপ নয়, বিষয়টি এসিসি ব্যাখ্যা করেনি দলগুলোর কাছে। এর থেকেই বিভ্রান্তি। আর সেই বিভ্রান্তিতে জ্বালানি জোগাচ্ছে আইসিসির ওয়েবসাইটে দেওয়া এশিয়া কাপের সূচি
টুর্নামেন্টটি আইসিসির নয়, এসিসির। মানে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের। কিন্তু আইসিসির কারণেই দেখা দিয়েছে বিভ্রান্তি। শেষ ম্যাচ জিতলেও বাংলাদেশ কেন গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নয়, এমন একটা প্রশ্ন, বিতর্কই বলা ভালো, চলছে বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যমে। সামাজিক মাধ্যমেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। তবে এসিসি বলতে পারে, তারা কখনোই ঘোষণা দেয়নি গ্রুপ পর্বে চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স আপ থাকবে। তারা বলেছিল থাকবে কোয়ালিফায়ার ওয়ান, কোয়ালিফায়ার টু। কিন্তু আইসিসি এখনো তাদের ওয়েবসাইটে যে সূচি রেখেছে, তাতে বলা আছে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন ও গ্রুপ রানার্স আপের কথা।
আইসিসির এই সূচিকে তথ্যের উৎস ধরে উইকিপিডিয়াসহ আরও অনেক ওয়েবসাইট ও তথ্যমাধ্যম এমনভাবেই সূচি করেছিল। আজ তো বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার কথা শুনে মনে হলো, দলের টিম ম্যানেজমেন্টও ভেবেছিল বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারে। সেভাবে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ ও ম্যাচের ভেন্যু ভেবেছিল বাংলাদেশ। গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলেও বাংলাদেশকে একই দিনে খেলতে হতো। মানে পরপর দুদিন ম্যাচ হতোই। তবে ভেন্যু হতো আবুধাবি, প্রতিপক্ষ হতো পাকিস্তান। এখন ভেন্যু দুবাই, প্রতিপক্ষ ভারত।
এশিয়া কাপের এবারের ফরম্যাটে পরিবর্তন আনার কারণেও বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। এশিয়া কাপ এবার তিন ধাপে হবে। গ্রুপ পর্ব, সুপার ফোর ও ফাইনাল। দলগুলোর কথা শুনেও মনে হচ্ছে, ফরম্যাটের ব্যাপারে দলগুলোকে পরিষ্কার ধারণা দেওয়া হয়নি। বলা হয়নি, গ্রুপের কোনো চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স আপ নেই। সুপার ফোরে যেহেতু সবাই সবার বিপক্ষে খেলবে, গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স আপ ভিন্ন কোনো অর্থ বহন করে না।
এসিসি তাই এর পরিবর্তে কোয়ালিফায়ার ওয়ান, কোয়ালিফায়ার টু ব্যবহার করেছিল। সংক্ষেপে এ-১, এ-২, বি-১, বি-২। এই ফরম্যাটে এ গ্রুপে ভারতকে আগে থেকেই এ-১, পাকিস্তানকে এ-২ ধরা হয়েছে। বি গ্রুপে শ্রীলঙ্কাকে বি-১, বি-২ ধরা হয়েছিল। শ্রীলঙ্কা বাদ পড়েছে। তাদের বদলে জায়গা করে নেওয়া আফগানিস্তান বি-১। ভারত বাদ পড়লে যেমন হংকং হয়ে যেত এ-১।
ক্রিকেটে এর আগেও এভাবে সূচি করা হয়েছে। ২০০৭ বিশ্বকাপের সুপার এইটেও এমনভাবে সূচি করা হয়েছিল। এই সূচির সুবিধা হলো, বাংলাদেশ দল বা এর সমর্থকেরা আগে থেকেই জানতে পারবে দল পরের রাউন্ডে গেলে কোন কোন ম্যাচ কোন কোন ভেন্যুতে কবে কবে হবে। যেহেতু বি-২ দলের সূচিগুলো আগেই জানার উপায় ছিল। সমর্থকেরা সেভাবেই ম্যাচ দেখার টিকিট আগে থেকে কাটতে পারছেন। না হলে শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ জানত, পরদিন তাদের প্রতিপক্ষ ভারত নাকি পাকিস্তান। ম্যাচটি দুবাইয়ে নাকি আবুধাবিতে।
খুবই ঠাসা সূচির মধ্যে এশিয়া কাপ করতে হয়েছে, ফলে এটাই সবচেয়ে সেরা উপায় ছিল এসিসির কাছে। সমস্যা হলো, এসিসি খুব সম্ভবত এ ব্যাপারে পরিষ্কার করে কাউকে কিছু বলেনি। বি-২ মানে যে বি গ্রুপের রানার্স আপ নয়, এ-১ মানে যে এ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন নয়, এই ব্যাপারটি পরিষ্কার করা দরকার ছিল। তাহলে এত বিতর্ক হতো না। আর আইসিসি কীভাবে এই ভুল করল, এই প্রশ্ন অবশ্যই তোলা উচিত।
আর এই প্রশ্নও করা যায়, বাংলাদেশকে কোন বিবেচনায় এসিসি এ-২ হিসেবে ধরল? র্যাঙ্কিং বা বর্ণমালার ক্রমানুসারে হলেও তো বাংলাদেশের বি-১ হওয়া উচিত ছিল। তবে এসব প্রশ্ন তুলে বিতর্ক না বাড়িয়ে খেলায় মন দেওয়াটাই ভালো।
সুপার ফোরের সূচি:
শুক্রবার | ২১ সেপ্টেম্বর | ভারত-বাংলাদেশ | দুবাই |
|
| পাকিস্তান-আফগানিস্তান | আবুধাবি |
রোববার | ২৩ সেপ্টেম্বর | ভারত-পাকিস্তান | দুবাই |
|
| আফগানিস্তান-বাংলাদেশ | আবুধাবি |
মঙ্গলবার | ২৫ সেপ্টেম্বর | ভারত-আফগানিস্তান | দুবাই |
বুধবার | ২৬ সেপ্টেম্বর | পাকিস্তান-বাংলাদেশ | আবুধাবি |
শুক্রবার | ২৮ সেপ্টেম্বর | ফাইনাল | দুবাই |
*প্রতিটি ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টা