রশিদ-ঝড়ে কঠিন লক্ষ্যের সামনে বাংলাদেশ

>এশিয়া কাপে আবুধাবিতে টস জিতে ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে ২৫৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছে আফগানিস্তান। রশিদ খান অপরাজিত ৫৭ রান করে। সাকিব আল হাসান নিয়েছেন ৪ উইকেট।
রশিদ খানই লক্ষ্যটা কঠিন করে দিলেন বাংলাদেশের
রশিদ খানই লক্ষ্যটা কঠিন করে দিলেন বাংলাদেশের

জন্মদিনের উপহারটা পেয়েই গেলেন রশিদ খান! আজ ২০–এ পা দেওয়া আফগান লেগ স্পিনার এখনো বোলিং করতে নামেননি। ব্যাটিংয়েই কাঁপিয়েছে ছেড়েছেন বাংলাদেশকে! তাঁর ৩২ বলে অপরাজিত ৫৭ রানের ঝোড়ো ইনিংসে আফগানিস্তানকে এনে দিয়েছে ৭ উইকেটে ২৫৫ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর। রশিদকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন (৩৮ বলে) ৪২ রানে অপরাজিত গুলবাদিন নায়েব।

বাংলাদেশের সামনে সুযোগ ছিল আফগানিস্তানকে ২০০ রানের নিচে আটকে ফেলার। ৪০.৫ ওভারে ১৬০ রানে ৭ উইকেট ফেলে দেওয়ার পর সেটি নিশ্চয়ই কঠিন ছিল না। কিন্তু তা হতে দেননি আফগানিস্তানের লেজের দুই ব্যাটসম্যান গুলবাদিন ও রশিদ খান। দুজনের অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেটে ৫৬ বলে ৯৫ রানের জুটি আফগানিস্তানকে সহায়তা করেছে ভালো স্কোর পেতে। অষ্টম উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে এটিই সর্বোচ্চ। শেষ ১০ ওভারে আফগানরা তুলেছে ৯৭ রান। ৪০ ওভার পর্যন্ত দারুণ বোলিং করা বাংলাদেশ শেষ দিকে একেবারে ছন্নছড়া! শেষ ১০ ওভারে বাংলাদেশের বোলাররা যত ম্রিয়মান, দুই আফগান ব্যাটসম্যান রশিদ খান–গুলবাদিন ততই উজ্জ্বল। ৪০ ওভার শেষেও যে আফগানিস্তানের রানরেট ছিল ৩.৯৫ । ৫০ ওভার শেষেই সেটি দাঁড়িয়েছে ৫.১।

ওয়ানডে অভিষেকেই দুই অভিজ্ঞতা হলো আবু হায়দারের। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই তাঁর হাতে বল তুলে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। আবু হায়দারকে ওভারের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে টানা দুই বাউন্ডারি মারলেন আফগান ওপেনার ইহসানউল্লাহকে। শুরুটা এমন বাজে—এ ভাবনা যারা ভাবতে শুরু করেছেন তাদের অবাক করে আবু হায়দার ঠিক পরের বলেই তুলে নিলেন ইহসানকে। অবশ্য আফগান ওপেনারের আউটে বোলারের চেয়ে বেশি কৃতিত্ব পাবেন ক্যাচটা দুর্দান্তভাবে লুফে নেওয়া মিঠুন। ৮ রানে প্রথম উইকেট হারানো আফগানিস্তান দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছে ২৮ রানে। সেটিও আবু হায়দারের। অভিষেকটা আরও রঙিন হতো যদি শেষ পর্যন্ত ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারতেন।

শুরুর দিকে আবু হায়দারের সাফল্যের পর থিতু হয়ে যান আহমেদ শেহজাদ ও হাসমতউল্লাহ শাহিদি। দুজনের তৃতীয় উইকেটে এল ৫১ রান। সাকিব আল হাসান বোলিং করেন যে হাতে, সেই হাতের আঙুলে একটা চোট বয়ে বেড়াচ্ছেন গত আট–নয় মাস। চোটাক্রান্ত হাতও যে এত ভেলকি দেখাতে পারে, সেটি আজ দেখালেন তিনি। সাকিব প্রথম ফেরালেন সেট হয়ে যাওয়া শেহজাদকে (৩৭), আবু হায়দারের দেখার মতো এক ক্যাচ বানিয়ে। আসগর আফগান (৮) ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারিকে (১৮) আর ক্যাচ–ট্যাচ নয়, সরাসরি বোল্ডই করে দিলেন সাকিব। বাঁহাতি অলরাউন্ডারের বলে একজন বোল্ড হয়েছেন লাইন মিস করে আরেকজন লাইন না বুঝে চালাতে গিয়ে। অসাধারণ বোলিং করেছেন সাকিব, ৪০ ওভারে যে ৭টি উইকেট পড়েছে আফগানিস্তানের, চারটিই তাঁর। দুইবছর পর পেলেন ৪ উইকেট। ২০১৬ সেপ্টেম্বরে সাকিব সবশেষ যে ৪ উইকেট পেয়েছিলেন সেটিও আফগানিস্তানের বিপক্ষে।

সাকিবের দুর্দান্ত বোলিং তাঁর সতীর্থরা সঠিক মূল্যায়ন করতে পারলেন কই? স্লগ ওভারে অকাতরে রান বিলিয়ে আফগানদের সুযোগ করে দিলেন বড় স্কোর গড়তে। মুশফিকুর রহিম বিশ্রামে, চোটে পড়ে তামিম ইকবালও নেই। আবুধাবির মন্থর উইকেটে বাংলাদেশ পারবে ২৫৬ তাড়া করতে? রশিদ অবশ্য মুচকি হেসে বলতে পারেন, ব্যাটিং তাণ্ডব দেখলেন, লেগ স্পিনের জাদু তো এখনো বাকি!