ভীষণ চাপে বাংলাদেশ

আত্মাহুতি দিয়ে ফিরে এলেন সাকিব। ছবি: এএফপি
আত্মাহুতি দিয়ে ফিরে এলেন সাকিব। ছবি: এএফপি
>দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে তীব্র চাপে বাংলাদেশ। ৬৫ রানে মাশরাফিরা হারিয়ে ফেলেছেন ৫ উইকেট।

১২ ঘণ্টাও বিশ্রামের সময় পায়নি, বাংলাদেশকে ঝটপট মাঠে নেমে পড়তে হয়েছে। যেনতেন ম্যাচ নয়, সুপার ফোরের শুরুতেই প্রতিপক্ষ ভারত। আফগানিস্তানের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হওয়ার ‘হ্যাংওভার’ কাটতে না কাটতেই ভারতীয় বোলারদের চ্যালেঞ্জ সামলাতে গিয়ে রীতিমতো খাবি খাচ্ছেন সাকিব-মুশফিকেরা! স্কোরবোর্ডে ৬৫ রান যোগ না হতেই ৫ উইকেট হারিয়ে তীব্র চাপে বাংলাদেশ। এই চাপ সামলে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে মাশরাফিরা লড়াইয়ের পুঁজি পাবেন কি না, সেটিই প্রশ্ন।

টস হারায় আজও প্রতিপক্ষ অধিনায়কের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করেছে বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাটিং না ফিল্ডিং করবে। টস জিতে ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা বাংলাদেশকে ব্যাটিং করতে পাঠিয়ে যে ঠিকই করেছেন, সেটি বোলাররা ভালোভাবেই প্রমাণ করে চলেছেন। অবশ্য ভারতীয় বোলারদের যতটা কৃতিত্ব, বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের দায়ও কম নয়। পঞ্চম ওভারের তৃতীয় বলে ভুবনেশ্বর কুমারকে পুল করতে গিয়ে স্কয়ার লেগে কেদার যাদবের ক্যাচ লিটন দাস ফিরলেন ৭ রান করে।

ওপেনিং জুটি ভেঙে গেছে ১৫ রানে। পরের ওভারেই নাজমুল হোসেনের কী দরকর ছিল অতি চঞ্চল হওয়ার? উদ্বোধন সঙ্গীকে হারিয়ে তাঁর যেন আর উইকেটে থাকতে ভালো লাগছিল না! পরের ওভারের প্রথম বলেই শরীর থেকে অনেক বাইরের বলটা চালাতে গিয়ে স্লিপে দাঁড়ানো শিখর ধাওয়ানের ক্যাচ! লিটনের মতো তাঁর অবদান ৭ রান! ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ওয়ানডেতেই নাজমুলের স্কোর ৭। ‘৭’ যে একজন ব্যাটসম্যানের জন্য পয়া স্কোর নয়, সেটি তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যানও নিশ্চয়ই বোঝেন।

তরুণেরা পারেন না, কিন্তু অভিজ্ঞরা পারেন—এই ছবিটাই বাংলাদেশ দলে দেখা যাচ্ছে অনেক দিন ধরে। চিত্রটা আজও দেখতে আশায় বুক বেঁধেছিলেন দুবাই স্টেডিয়ামে উপস্থিত হাজারো বাংলাদেশি দর্শক। তৃতীয় উইকেটে ২৬ রানের জুটি গড়ে সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিম ভালো কিছুর ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। কিন্তু হায়, সাকিবেরও যে ‘মরিবার হল সাধ’! রবীন্দ্র জাদেজাকে এক ওভারে দুবার বাউন্ডারি মারলেন। কিন্তু বাউন্ডারি মারার নেশা তাঁর এতটাই পেয়ে বসল তৃতীয়টিও মারতে চাইলেন সুইপ শটে। একবারও কি তাঁর ভাবনায় এল না, বারবার সুইপ শট খেলছেন বলে মহেন্দ্র সিং ধোনির বুদ্ধিতে স্লিপ থেকে সরিয়ে ওই বলেই স্কয়ার লেগে আনা হয়েছে শিখর ধাওয়ানকে? ঠিক শিখরের হাতেই ক্যাচটা তুলে দিলেন বাঁহাতি অলরাউন্ডার। অন্যদের কী বলবেন, এই ভুলে সাকিব নিজেই ভীষণ হতাশ! জমল না মুশফিক-মিঠুনের চতুর্থ উইকেট জুটিও (১৮)। জাদেজার বলে এলবিডব্লু হয়ে মিঠুনের একই পরিণতি—ড্রেসিংরুমে ফিরলেন ৯ রান করে।

তবুও বাংলাদেশের আশা, লড়াকু মুশফিক তো আছেন। কিন্তু আজ বুঝি বাংলাদেশের কারও বীরত্ব দেখার দিন নয়। জাদেজাকে অহেতুক রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে শর্ট থার্ডম্যানে চাহালের ক্যাচ হয়ে ফিরে এলেন থিতু হয়ে যাওয়া মুশফিক (২১)। ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশকে উদ্ধার করবেন কে? মান বাঁচাতে উইকেটে আছেন ময়মনসিংহের দুই ‘ম’—মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেক। এই জুটি ভাঙলেই লেজ বেরিয়ে পড়বে বাংলাদেশের। টপ-মিডল অর্ডার কিছু করতে পারেনি। লোয়ার অর্ডারে আর কতটা ভরসা করা যায়!