ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে ম্যাচের আসল নায়ক মাহমুদউল্লাহ

দুর্দান্ত এক মাহমুদউল্লাহকে আজ দেখা গেল। ছবি: এএফপি
দুর্দান্ত এক মাহমুদউল্লাহকে আজ দেখা গেল। ছবি: এএফপি

অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের সংজ্ঞা কী? অন্তত আজকের জন্য উত্তরটা মাহমুদউল্লাহ! চাপের মধ্যে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন। ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার পরও যখন প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানরা ফের লম্বা জুটি গড়ার চেষ্টা করেছেন, অসাধারণ এক ক্যাচ নিয়ে সেটিও ভেঙেছেন—ম্যাচের নায়ক কে, নামটা বলার দরকার আছে? মাহমুদউল্লাহ আজ আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে একাই তিনজনের কাজ করেছেন। ম্যাচসেরার পুরস্কার তাঁর হাতেই তো মানায়!

ব্যাটিংয়ে যখন নামেন, বাংলাদেশ ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে। ষষ্ঠ উইকেটে ইমরুল কায়েসকে নিয়ে গড়েছেন মহামূল্যবান ১২৮ রানের জুটি। আফতাব আলমের বলে ৭৪ রানে আউট হলেও বাংলাদেশকে বড় স্কোর এনে দেওয়ার কাজ ততক্ষণে সেরে ফেলেছেন। কীভাবে ইমরুলকে নিয়ে এগিয়েছেন, ইনিংস বিরতিতে সেটি জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ, ‘আমি আর ইমরুল একেকটি বল ধরে এগোতে চেয়েছি। কোনো তাড়াহুড়ো করতে যাইনি। যখন জুটি জমতে শুরু করল, তখন একে অপরকে বললাম আমাদের ভালোভাবে শেষ করে আসতে হবে। ইমরুল একজন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান। কিন্তু ওকে আজ মিডল অর্ডারে নামানো হয়েছে, যাতে এখানে বাড়তি অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। আমরা চাইছিলাম মিডল অর্ডার আজ একটু শক্তিশালী হোক।’

ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও সমান উজ্জ্বল মাহমুদউল্লাহ। খণ্ডকালীন বোলার হিসেবে যতটুকু করার দরকার, তার চেয়েও বেশি করলেন। থিতু হয়ে যাওয়া মোহাম্মদ শেহজাদকে বোল্ড করে ব্রেক থ্রুটা এনে দিলেন। ৫ ওভারে ১৭ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট। মাহমুদউল্লাহ সাফল্য পেলেও বিশেষজ্ঞ বোলাররা উইকেট বের করতে অনেক সময় নিয়ে ফেললেন। ততক্ষণে আসগর আফগান ও হাসমতউল্লাহ চতুর্থ উইকেটে ৭৮ রান যোগ করে ফেলেছে। ব্যাটিং-বোলিং অসাধারণ হয়েছে। বাকি ছিল ফিল্ডিং। সেটিও দেখালেন। মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে আসগরের (৩৯) দেখার মতো এক ক্যাচে নিয়ে আরেকবার ব্রেক থ্রু এনে দেওয়ার কাজটা করলেন মাহমুদউল্লাহ।

অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ম্যাচসেরার পুরস্কার স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে তাঁর হাতে। তবে মাহমুদউল্লাহ আলাদাভাবে কৃতিত্ব দিলেন শেষ ওভারে অসাধারণ বোলিং করা মোস্তাফিজুর রহমানকে। কীভাবে চাপকে জয় করেছেন তাঁরা, বললেন সেটিও, ‘আজ অনেক গরম ছিল। কিছুটা পানিশূন্যতায় ভুগেছি। তবে শেষটা ভালোভাবে করেছি। মোস্তাফিজকে কৃতিত্ব দিতে হবে। জানতাম, ওদের ভালো কিছু মারকুটে ব্যাটসম্যান আছে। তারা চাপকে জয় করতে পারে। শেষ পর্যন্ত আমরাই চাপকে জয় করেছি। অসাধারণ এক দলীয় প্রচেষ্টা ছিল। দলের জন্য অবদান রাখতে পারলে সব সময়ই ভালো লাগে। ইমরুলের সঙ্গে আমার ভালো একটা জুটি হয়েছে। আমরা শেষ করে আসতে চেয়েছি। আমাদের বোলাররা শেষ পর্যন্ত ওদের আটকে ফেলতে পেরেছে। ফাইনালে যেতে আমাদের এখন জিততে হবে পাকিস্তানের বিপক্ষে।’