মোস্তাফিজ যেন ছিল ম্যাজিশিয়ান

শেষ ওভারে যেন জাদু দেখালেন মোস্তাফিজ । ছবি: এএফপি
শেষ ওভারে যেন জাদু দেখালেন মোস্তাফিজ । ছবি: এএফপি

এমন একটা জয়ের পরও তাঁর মধ্যে উত্তেজনার রেশ নেই! নাকি ছিল ঠিকই, মাশরাফি আড়াল করে রেখেছেন! কথা বলতে গিয়ে একটু কাঁপলও বোধ হয়। শেষ ওভারে জয়ের জন্য আফগানদের দরকার ছিল মাত্র ৮ রান। আগের তিন ওভারে ১১, ১২, ১১ করে রান তোলা আফগানদের জন্য কাজটা খুব কঠিন কিছু ছিল না। হারলেই এশিয়া কাপ  থেকে একরকম বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেত বাংলাদেশের। কিন্তু এবারের এশিয়া কাপে যাদের যাত্রা হয়েছে উত্থান-পতনের ভেতর দিয়ে, সেই বাংলাদেশ আজকের মতো ম্যাচটাই খেলল নাটকীয় উত্থানে আর পতনে। শেষটা হলো বাংলাদেশের জন্য উত্থানের মধ্যে দিয়েই। ৩ রানের নাটকীয় এক জয় যে বাংলাদেশকে ভালোমতোই টিকিয়ে রাখল দৌড়ে। আগের তিন আসরের দুবারের ফাইনালিস্ট বাংলাদেশ শেষ ম্যাচে পাকিস্তানকে হারালেই চলে যাবে ফাইনালে। যে ফাইনালে এরই মধ্যে উঠে বসে আছে গতবার বাংলাদেশকেই হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ভারত।

পুরস্কার বিতরণী মঞ্চের উপস্থাপক রাসেল আরনল্ডের সামনে বেশ প্রত্যয়ী ভঙ্গিতে হাজির হলেন মাশরাফি। শুরুতেই বললেন মোস্তাফিজের কথা, যিনি বাংলাদেশের ৭ রানের পুঁজিটাকে টিকিয়ে দিয়েছেন অবিশ্বাস্যভাবে। মাশরাফি বললেন, ‌‘শেষ ওভারটায় মোস্তাফিজ যেন ম্যাজিশিয়ান ছিল। এ রকম অনেক কাছাকাছি ব্যবধানের ম্যাচ হেরেছি আমরা। শেষ ওভারে ৮-৯ রান দরকার ছিল, সেটিও করতে পারিনি। তবে আজ আমরা এই রানটাই রক্ষা করতে পারলাম।’

মাশরাফি কি আত্মবিশ্বাসী ছিলেন জয়ের ব্যাপারে? শেষ তিন ওভারে আফগানদের দরকার ছিল ৩১। পরপর দুই ওভারে তারা তুলে ফেলল ২৩ রান। তবুও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন মাশরাফি। সাকিবের করা ৪৯তম ওভারের শেষ চারটি বলে বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। মাশরাফি বলেছেন, ‌‘আমি আশা ছাড়িনি। শেষ তিনটা বল সাকিব আসলে দুর্দান্ত করেছে। এরপর আমরা মোস্তাফিজকে বলেছি ও যেন উইকেট তুলে নেওয়ার দিকেই মনোযোগ দেয়। কারণ, তাতে ওদের মিস করার সম্ভাবনা বাড়বে।’

বোলাররা শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতিয়েছে। তাতে বল হাতে খরুচে হলেও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে দুটি উইকেট তুলে নেওয়া মাশরাফির ভূমিকাও আছে। তবে মাশরাফি ভুললেন না দুই ব্যাটসম্যানের কথা বলতে। ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ যে ম্যাচে ফিরেছে ১২৮ রানের সেই জুটিতেই। মাশরাফি বলেছেন, ‌‘সবার আগে মাহমুদউল্লাহ আর ইমরুল কায়েসকে কৃতিত্ব দিতে হবে।’

বাংলাদেশের জন্য আরব আমিরাতের কন্ডিশনও হয়ে উঠেছে প্রতিপক্ষ। আজ মোস্তাফিজের একটি ওভার অব্যবহৃতই থেকে গেছে। মাশরাফি জানালেন, মোস্তাফিজও নিঃশেষিত হচ্ছিলেন বলে তাঁকে একটু জমিয়ে রাখা হয়েছিল, ‌‘মোস্তাফিজের পেশিতে হালকা টান পড়ছিল। আমরা চাইছিলাম ওকে দিয়ে ১০ ওভার করাতে, কিন্তু পারিনি। ওর ঊরুতে হালকা টান ছিল বলে ইয়র্কারও দিতে পারছিল না।’

এখন তো শেষ ম্যাচটা হয়ে উঠল সেমিফাইনাল। কী ভাবছেন মাশরাফি? বাংলাদেশ অধিনায়কের উত্তর, ‌‘আশা করি, সেমিফাইনাল হয়ে ওঠা ম্যাচটিতেও আমরা ফাটিয়ে দেব।’