মাহমুদউল্লাহ দেখালেন, রশিদকে খেলা যায়
>রশিদ খানের বিপক্ষে আগের ম্যাচে রীতিমতো খাবি খেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। কিন্তু কাল মাহমুদউল্লাহ-ইমরুলের জুটির সামনে নিষ্ক্রিয় ছিলেন এই আফগান লেগ স্পিনার। তাঁকে স্বাচ্ছন্দ্যে খেলার রহস্য ভাঙলেন মাহমুদউল্লাহ
ক্রাইসিস ম্যান? তা নয় তো কী! দল বিপদে পড়লে তিনি ভরসার অপর নাম। কথাটা প্রমাণিত সত্য। কাল মাহমুদউল্লাহ তা প্রমাণ করলেন আবারও। সেটিও আবার বিশ্বমানের স্পিনারসমৃদ্ধ দলের বিপক্ষে বাঁচামরার লড়াইয়ে। এই আফগানিস্তান দলেরই স্পিনার রশিদ খানকে এই এশিয়া কাপে ‘বিশ্বসেরা’ তকমা দিয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক সরফরাজ আহমদ। কিন্তু মাহমুদউল্লাহ জানালেন, রশিদকে খেলা যায় না এমন নয়।
আফগানদের বিপক্ষে হারলেই বাদ—এমন সমীকরণের মুখে ৮৭ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল বাংলাদেশ। এই ভীষণ চাপের মধ্যে ইমরুল কায়েসকে সঙ্গে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ১২৮ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়ার পথে ফিফটি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ। তাঁর ৮১ বলে ৭৪ আর ইমরুলের ৮৯ বলে ৭২* রানের ইনিংস দুটি বাংলাদেশের আড়াই শ ছুঁই ছুঁই স্কোরের ‘নিউক্লিয়াস’। রশিদের ঘূর্ণিজালকে যেভাবে সামলেছেন, সেটি মাহমুদউল্লাহর ইনিংসে সবচেয়ে দর্শনীয় দিক। ইমরুলও ভালোই সামলেছেন আইসিসি ওডিআই র্যাঙ্কিংয়ে দ্বিতীয় এই লেগ স্পিনারকে।
নিজেদের ইনিংসের শুরুর দিকে তাঁরা রশিদের ওপর চড়াও হননি। স্বাভাবিক ব্যাটিং করেছেন। অদল-বদল করেছেন স্ট্রাইক। তাতে রশিদ যেমন আর উইকেট পাননি, তেমনি ঘুরেছে রানের চাকাও। ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহ জানান, রশিদকে খেলার ব্যাপারে তাঁদের পরিকল্পনার কথা। ‘খুব বেশি অনুশীলন করিনি (রশিদের বৈচিত্র্য নিয়ে)। চার দিনের ব্যবধানে তিনটি ম্যাচ খেললাম, তাই হাতে সময় ছিল না। মাথা থেকে সবকিছু ঝেড়ে ফেলে তাঁকে খেলার চেষ্টা করেছি। আমরা জানি, উইকেট নেওয়ায় সে বিশ্বের অন্যতম সেরা। কিন্তু তাঁকে খেলা যায় না, এমন নয়।’
কাল ১০ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে ১ উইকেট পেয়েছেন রশিদ। আর গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ৯ ওভারে মাত্র ১৩ রান দিয়ে পেয়েছিলেন ২ উইকেট। রশিদকে কাল বাংলাদেশ কত ভালো খেলেছে তা ‘ডট’ বলের হিসেবে পরিষ্কার। আগের ম্যাচে রশিদের ৪৪টি ডেলিভারি ‘ডট’ দিয়েছিল বাংলাদেশ। আর কাল ‘ডট’সংখ্যা ছিল ৩৪। মাহমুদউল্লাহ-ইমরুলের উইকেট না দেওয়ার মানসিকতা আর শুরুতে সিঙ্গেলস নিয়ে খেলার জন্যই যে রশিদকে নিষ্ক্রিয় রাখা গেছে, তা বলাই বাহুল্য। আবার শেষ দিকে এসে দুটি ছক্কাও হজম করতে হয়েছে রশিদকে। সেই দুটি ছক্কাই মাহমুদউল্লাহর। রশিদের গুগলিকে স্কয়ার লেগ অঞ্চল দিয়ে সীমানাছাড়া করেন তিনি।
অথচ আগের ম্যাচে এই রশিদের বিপক্ষেই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানেরা রীতিমতো খাবি খেয়েছেন। কিন্তু কাল তাঁকে সহজেই খেলার ব্যাপারে মাহমুদউল্লাহর উক্তি, ‘আমরা যেভাবে খেলতে (আগের ম্যাচে) চেয়েছি সেভাবে হয়তো পারিনি। আমাদের পরিকল্পনা ছিল রশিদকে উইকেট না দেওয়া। উইকেটে থিতু হয়ে শেষ পর্যন্ত থাকতে চেয়েছি।’