এশিয়া কাপ শেষে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের দামামা বাজছে

আগামী পরশু সিলেটে শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল। ছবি: বাফুফে
আগামী পরশু সিলেটে শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল। ছবি: বাফুফে
>আগামী পরশু সিলেটে শুরু হচ্ছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল

কয়েক দিন ধরে পুরো দেশ মেতেছিল এশিয়া কাপ ক্রিকেট নিয়ে। শত শত মাইল দূরে মরুর বুকে ব্যাট-বলে ছড়ানো উত্তেজনার পারদ ছড়িয়ে পড়েছিল দেশের কোনায় কোনায়। গতকাল রাতে রোমাঞ্চের সর্বোচ্চ রেণু ছড়ানো ম্যাচে বাংলাদেশের হার দিয়ে শেষ হয়েছে যার রেশ। এবার ব্যাট-বল ছেড়ে ফুটবলে নজর দেওয়ার পালা। আগামী পরশু দেশে শুরু হচ্ছে ছয় দেশের জাতীয় দল নিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ ফুটবল। চোখ ধাঁধানো টুর্নামেন্টের জন্য সবকিছুই প্রস্তুত।

এবারই প্রথম দেশের তিন ভেন্যুতে মাঠে গড়াবে আন্তর্জাতিক এই আসরটি। ১ অক্টোবর সিলেটে শুরু হবে গ্রুপ পর্বের ম্যাচ। কক্সবাজারে হবে সেমিফাইনাল পর্ব এবং সব শেষে ১২ অক্টোবর ঢাকায় শিরোপার লড়াই।

দল বাছাইয়ের ক্ষেত্রে এবার সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে আয়োজক বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। কারণ ছয় দলের মধ্যে র‍্যাঙ্কিংয়ে সবার নিচে বাংলাদেশ (১৯৩)। সবার ওপরে আছে ১০০ তে অবস্থান করা ফিলিস্তিন। এর পর আসিয়ান অঞ্চলের দেশ ফিলিপাইনের অবস্থান ১১৪তে। ১২০ এ অবস্থান করছে মধ্য এশিয়ান দেশ তাজিকিস্তান। ১৫০-এর এদিকে আসরের বাকি দুই দল-নেপাল ১৬০, লাওস ১৭৯। ‘বি’ গ্রুপে স্বাগতিক বাংলাদেশের সঙ্গী ফিলিপাইন ও লাওস। ‘এ’ গ্রুপে ফিলিস্তিন, তাজিকিস্তান ও নেপাল।

বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে খেলতে বাংলাদেশে আসতে শুরু করেছে বিদেশি দলগুলো। সবার আগে গতকাল সন্ধ্যায় এসেছে বাংলাদেশের গ্রুপসঙ্গী লাওস। পরশু টুর্নামেন্টের প্রথম দিনেই লাওসের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। উদ্বোধনী ম্যাচ সামনে রেখে গতকাল বিকেলে সিলেট পৌঁছেছে বাংলাদেশ দল। আর লাওস যাবে আজ দুপুরে। নেপাল বাদে বাকি তিন দলেরই আজ ঢাকায় আসার কথা। ফিলিপাইন দুপুরে ঢাকায় নেমেই বিকেলে চলে যাবে সিলেটে। রাতে এসে ফিলিস্তিন দল সিলেট যাবে আগামীকাল। তাজিকিস্তানও ঢাকায় কয়েক ঘণ্টা থেকে আগামীকাল দুপুরে সিলেট যাবে। আগামীকাল সবার শেষে আসছে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নেপাল।

বাংলাদেশের ফুটবলের সব গন্তব্য এখন আসলে সিলেট। কেননা ছয় জাতি বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের গ্রুপ পর্বের সব ম্যাচই (৬ টি) সিলেটে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৬ সালের শুরুতে হওয়া বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের খেলাও হয়েছিল সিলেটে। এর আগে বাংলাদেশ-নেপাল প্রীতি ম্যাচ হয়েছে এখানেই। সেদিন দর্শক চাপে ভেঙে পড়েছিল সিলেট স্টেডিয়ামের গেট। দুটি সেমিফাইনালের ভেন্যু নির্বাচনে চমক দিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। এই প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনে বেছে নেওয়া হয়েছে কক্সবাজার স্টেডিয়ামকে। ৯ ও ১০ অক্টোবর সেখানেই হচ্ছে দুটি সেমিফাইনাল। ঢাকায় রাখা হয়েছে শুধু একটি ম্যাচ—ফাইনাল। ১২ অক্টোবর যেটির ভেন্যু বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম।

সাফের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায়ের পর বাংলাদেশ কোচ জেমি ডে বলেছিলেন, তার লক্ষ্য বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের সেমিফাইনালে খেলা। শক্তি ও সামর্থ্য একই রকম হওয়ায় লাওসের বিপক্ষে ম্যাচটিকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন বেশি। এ ছাড়া এশিয়ান গেমসে কাতারের বিপক্ষে জয় এবং সাফে ভুটান ও পাকিস্তানকে হারানোয় ফুটবলপ্রেমীরা মনে করে, টুর্নামেন্টে সেমিফাইনাল খেলার যোগ্যতা রাখে বাংলাদেশ। এর আগে ২০১৬ শেষ টুর্নামেন্টে কাতার যুব দলের বিপক্ষে হেরে ফাইনাল খেলা হয়নি স্বাগতিকদের। আর ২০১৫ ফাইনালে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ফাইনালে দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও দুই গোল করে ম্যাচে ফিরেছিল লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।