'কাপ্তান অব এশিয়া: মাশরাফি বিন মুর্তজা'

অধিনায়কের গর্জন: দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। ছবি: এএফপি
অধিনায়কের গর্জন: দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাশরাফি। ছবি: এএফপি
শিরোপা না জিততে পারলেও টুর্নামেন্টজুড়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স প্রশংসিত হয়েছে। সবচেয়ে প্রশংসিত হয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার অধিনায়কত্ব। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ও বর্তমান ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজার চোখে মাশরাফি হচ্ছেন ‘কাপ্তান অব এশিয়া কাপ’!

শিরোপা যদি সাফল্যের একমাত্র মানদণ্ড হয়, বাংলাদেশ তবে আজ রাতে দেশে ফিরছে শূন্য হাতে! আসলেই শূন্য হাতে? শিরোপাটা বাদে আর সবই তো ঠিকঠাক করেছে বাংলাদেশ। একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হারিয়ে আত্মবিশ্বাসটা যখন টলে যাওয়ার কথা, সেটি ঠিক রেখেছে। টপ অর্ডারের ধারাবাহিক ব্যর্থতা বারবার ব্যাটিং বিপর্যয় সামলেছে। স্পর্শ করতে দেয়নি দুবাই-আবুধাবি-দুবাই ভ্রমণক্লান্তিকে। বাংলাদেশকে জয় করতে হয়েছে কন্ডিশনকেও। আর সবচেয়ে প্রশংসিত হয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার অধিনায়কত্ব। পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেট অধিনায়ক ও বর্তমান ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজার চোখে মাশরাফি হচ্ছেন ‘কাপ্তান অব এশিয়া কাপ’!

এবারের এশিয়া কাপটা কেমন ছিল, কেমন ছিল ফাইনাল—সেটি কাল ম্যাচ শেষে রমিজ বর্ণনা দিলেন এভাবে, ‘অনেক ভ্রমণ হয়েছে। কখনো দুবাই, কখনো আবুধাবি। (খেলা) কখনো গরমে, কখনো সন্ধ্যায়। তবে এ এশিয়া কাপের জবাব নেই। দুটি সেরা দল এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেছে। ভারতকে হারানো কঠিন ছিল। তবুও কী ধ্রুপদি ম্যাচটাই না হলো। বাংলাদেশ ২২২ করেও ভারতকে কী চাপেই না রেখেছিল! লড়াইটা শেষ বল পর্যন্ত পৌঁছেছে। এভাবে চ্যাম্পিয়ন হতে হয়, এভাবেই চ্যাম্পিয়ন দল তৈরি হয়। কী পারফরম্যান্স দেখা গেল। যেমন রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, মোস্তাফিজুর, তেমনি আমার চোখে কাপ্তান অব এশিয়া কাপ হচ্ছে মাশরাফি বিন মুর্তজা।’

কেন মাশরাফিকে টুর্নামেন্টের সেরা অধিনায়ক মনে হয়েছে সেটিরও ব্যাখ্যা দিয়েছেন রমিজ, ‘আমি এ কারণে বলছি, তার হাতে ছিল না তামিম ইকবাল, ছিল না সাকিব আল হাসান। এই রানের পরও দলকে শেষ পর্যন্ত নিয়ে গেছে। দুর্দান্ত লড়াই করেছে ভারতের সঙ্গে।’ রমিজ পরামর্শ দিলেন বাংলাদেশের এই পারফরম্যান্স থেকে পাকিস্তানকেও শিখতে, ‘এ থেকে পাকিস্তানকে শিখতে হবে। পাকিস্তানকে চ্যাম্পিয়ন হতে হলে তাদের অনেক কিছু ঠিক করতে হবে। আপনার অধিনায়কত্ব ঠিক করতে হবে, ওপেনিং জুটি ঠিক হতে হবে। মোস্তাফিজ, ভুবনেশ্বর, বুমরার মতো স্ট্রাইক বোলার লাগবে। ভালো স্পিনার থাকতে হবে। এটা একটা ফাইনালের মতো ফাইনাল হয়েছে, দুর্দান্ত ফাইনাল।’

রমিজ যে যথার্থ বলেছেন, সেটি অধিনায়ক মাশরাফির সাফল্যের পরিসংখ্যান দেখে বোঝা যাবে। অবশ্য নিরেট সংখ্যা অনেক সময় সঠিক ছবিটা তুলে ধরবে না। ধরবে না মাশরাফির আত্মনিবেদন আর আবেগকে। কাল ম্যাচের পর একটা ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে—লিটন দাসের ফিফটির পর অধিনায়ক বারবার বলছেন, ‘ইনিংসটা বড় কর, ইনিংসটা বড় কর’। এরপরই যখন বুকের ওপর হাত দিয়ে সতীর্থকে ইঙ্গিত করছেন, হৃদয় দিয়ে খেলতে, ইঙ্গিত করছেন দেশের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিতে। এ দৃশ্য দেখার পর মাশরাফিকে আর শুধুই অধিনায়ক থাকেন না, হয়ে ওঠেন বাংলাদেশের মুখ!