২৪ গোল করা বাংলাদেশের পরীক্ষা নেবে দক্ষিণ কোরিয়া!

বাংলাদেশ দলের রক্ষণভাগের চার সেনানী বাঁ থেকে আঁখি খাতুন, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার ও মাসুরা পারভিন। সংগৃহীত ছবি
বাংলাদেশ দলের রক্ষণভাগের চার সেনানী বাঁ থেকে আঁখি খাতুন, শিউলি আজিম, শামসুন্নাহার ও মাসুরা পারভিন। সংগৃহীত ছবি
>

২৪ অক্টোবর থেকে তাজিকিস্তানে শুরু হবে মেয়েদের এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাইপর্ব। সেখানে বাংলাদেশের গ্রুপে আছে স্বাগতিক তাজিকিস্তানসহ দক্ষিণ কোরিয়া ও চায়নিজ তাইপে।

‘আমার পর্যন্ত তো বলই আসে না’, অনূর্ধ্ব ১৮ মেয়েদের সাফজয়ী বাংলাদেশ দলের গোলরক্ষক রুপনা চাকমা আফসোস করে কথাটা বলতেই পারেন। গোল পোস্টের নিচে দাঁড়িয়ে কোনো পরীক্ষাই যদি না দিতে হয়, তাহলে তো এমন আফসোস করাই যায়! ফাইনালে নেপালের বিপক্ষে কয়েকটি বল ধরতে হলেও পরীক্ষা দেওয়ার মতো তো আর নয়। আপাত দক্ষিণ এশিয়া অধ্যায় শেষ, রুপনার জন্য সামনেই তাজিকিস্তানে অপেক্ষা করছে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাইপর্বের অনেক বড় পরীক্ষা, যেখানে গ্রুপ ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গী স্বাগতিক তাজিকিস্তানসহ শক্তিশালী দক্ষিণ কোরিয়া ও চায়নিজ তাইপে।

দক্ষিণ এশিয়ার বয়সভিত্তিক ফুটবল বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে এখন পানসের মতো লাগে। প্রতিটি ম্যাচেই প্রতিপক্ষের জালে করে মুড়ি মুড়কির মতো গোল। সদ্য সমাপ্ত অনূর্ধ্ব-১৮ মেয়েদের সাফে এক গোল হজমের বিপরীতে মোট ২৪ গোল করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। ম্যাচপ্রতি গড়ে ছয়টি করে গোল—প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঝাঁজ আর কোথায়!

প্রতিপক্ষ দলগুলোর সামনে বাংলাদেশের রক্ষণভাগ যেন চীনের প্রাচীর। তাঁদের ডিঙিয়ে বাংলাদেশের গোলপোস্টের কাছাকাছি যাওয়া বেশ কঠিনই। ৪-৩-৩ ফরমেশনে খেলা লাল-সবুজ রক্ষণভাগের চার সেনানীকে দেখেছেন? উচ্চতায় যেমন লম্বা, ঠিক তেমনি শারীরিকভাবে শক্তিশালী। দুই সেন্টারব্যাক আঁখি খাতুন ও মাসুরা পারভিনের উচ্চতা প্রায় পাঁচ ফুট ছয় ইঞ্চি। রাইটব্যাক শিউলি আজিমেরও তা-ই। সে তুলনায় লেফটব্যাক বড় শামসুন্নাহারের উচ্চতাটা কম। তবে ক্ষিপ্রতায় উচ্চতার ঘাটতিটুকু পুষিয়ে দিতে জানেন কলসিন্দুরের এই মেয়ে।

বাংলাদেশ দলের এই রক্ষণভাগের দৃঢ়তা কেমন, তা কিছুটা বোঝা গিয়েছে নেপালের বিপক্ষে ফাইনালে। ডি-বক্সের সামনে মিডল করিডরে প্রতিপক্ষকে কোনো জায়গা না দেওয়া, সাপোর্টিং পাসগুলো বন্ধ করা এবং ধাঁধায় পড়েও নিজেরা জমাট থাকা। রক্ষণ চরিত্রের প্রধান তিনটি বিষয়ে পুরো বাংলাদেশ দশে দশ। নিচ থেকে খেলা তৈরি করতেও জুড়ি নেই তাঁদের। এই বিষয়গুলো আরও নিখুঁত করে দেখানোর পালা ২৪ তারিখ থেকে দুশানবেতে শুরু হওয়া এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাইপর্বে। দুশানবেতে ২৪ অক্টোবর প্রথম ম্যাচেই প্রতিপক্ষ শক্তিশালী কোরিয়া। এরপর ২৬ অক্টোবর তাইপে এবং ২৮ অক্টোবর তাজিকিস্তানের সঙ্গে খেলা। তাই ভুটান থেকে ফিরে আজ থেকেই আবার শুরু হয়ে গেছে সিরাত জাহান স্বপ্না, আঁখি খাতুনদের অনুশীলন।

তাজিকিস্তানেই মেয়েদের আসল পরীক্ষা হবে বলে মনে করছেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন, ‘তাজিকিস্তানে আমাদের প্রথম লক্ষ্য হবে ভালো খেলা। ওখানে তিনটি দলই শক্তিশালী। কোরিয়া এএফসি অনূর্ধ্ব-১৬ টুর্নামেন্টে রানার্সআপ। ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য আছে। কিন্তু আমাদের মেয়েরা কতটুকু উন্নতি করেছে, এটা দেখার ভালো পরীক্ষা হবে ওখানে।’

ছয় গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন ছয় দলের সঙ্গে সেরা দুই রানার্সআপ যাবে পরের রাউন্ডে। কাজটা কঠিন। কিন্তু তারপরও আশায় রয়েছেন কোচ, ‘আমাদের লক্ষ্য থাকবে তাজিকিস্তান ও চীনা তাইপেকে হারানো। কোরিয়াকে হারানো কঠিন। আমাদের মূল লক্ষ্য সেরা দুই রানার্সআপ দলের একটি হওয়া। মেয়েদের ধারাবাহিক উন্নতির ছাপটা তাজিকিস্তানে ধরে রাখার আশা রাখি।’