মুমিনুল আবার টেস্টের খেলোয়াড়

বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে প্রত্যাবর্তনটা ভালো হয়নি মুমিনুলের । ছবি: প্রথম আলো
বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে প্রত্যাবর্তনটা ভালো হয়নি মুমিনুলের । ছবি: প্রথম আলো
>তিন বছর পর বাংলাদেশ ওয়ানডে দলে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন মুমিনুল। এশিয়া কাপে ২ ম্যাচে ১৪ রান করা বামহাতি ব্যাটসম্যান বাদ পড়েছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। এমনিতে বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলে তাঁর দ্বার উন্মুক্ত নয়। সেটি কি আরও লম্বা সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে গেল?

মুমিনুল হককে সকালে পাওয়া গেল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের ইনডোরে। অনুশীলনে মগ্ন। ‘সামনে তো ওয়ানডে সিরিজ, আপনি এখানে কী করেন?’ সাংবাদিকের এ নিষ্ঠুর রসিকতা গায়ে মাখলেন না বামহাতি ব্যাটসম্যান। বরং মনে হলো ব্যাপারটা তাঁর গা সওয়া! মুমিনুল নিভৃতে কাজ করছেন তাঁর বিকেএসপি কোচ সালাউদ্দীনের সঙ্গে, দুঃসময়ে যাঁর শরণ নেন প্রায়ই। এশিয়া কাপ দলে শেষ মুহূর্তে সুযোগ পেয়েছিলেন। পরে দুটি ম্যাচ খেলার সুযোগও পেলেন। কিন্তু ৩ বছর পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রঙিন পোশাকে তাঁর প্রত্যাবর্তনটা মোটেও ভালো হয়নি। মুমিনুল তাই শুরু করেছেন আরেকটা লড়াই।

ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো খেলেও মুমিনুল যেখানে রঙিন পোশাকে উপেক্ষিত থাকেন দিনের পর দিন, সেখানে দুই ম্যাচে ১৪ রান কীভাবে ‘রক্ষা’ করবে তাঁকে! মুমিনুলকে বাদ দেওয়া হয়েছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে। এশিয়া কাপে ব্যর্থতার তালিকায় মুমিনুল শুধু একাই নন। তবুও তাঁকে মাত্র দুই ম্যাচ সুযোগ দিয়েই বাদ দেওয়া হলো। সেটির ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নির্বাচক হাবিবুল বাশার মুমিনুলের ভাগ্যকে দুষছেন, ‘মুমিনুলের একটু দুর্ভাগা, ওর বিষয়টা বুঝি। আমি মনে করি তাঁর ওয়ানডে ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যায়নি। ওয়ানডেতে তাঁর দেওয়ার অনেক কিছুই আছে। কিন্তু এই সিরিজে আমাদের কিছু ক্রিকেটারকে দেখতে হতো। সাকিব-তামিম থাকলে আমরা আরও খেলোয়াড় দেখতে পারতাম। এখানে আমাদের খুব একটা সুযোগ ছিল না। আমাদের সেরা সমন্বয় ও অভিজ্ঞতার দিকে নজর নিয়ে দল সাজাতে হয়েছে। মুমিনুল এশিয়া কাপে যে দুটি ম্যাচ খেলল, আমি বলব দুটি ইনিংস একজন ব্যাটসম্যানের জন্য যথেষ্ট নয়। যদি ওই দুই ইনিংসে রান করত, তাহলে ওর জন্য ভালো হতো। যেহেতু রান করতে পারেনি, আর আমাদের নতুন দু-একজন খেলোয়াড়কে দেখতে হচ্ছে। এ কারণে সে বাদ পড়েছে।’

চন্ডিকা হাথুরুসিংহের সুনজরে ছিলেন না মুমিনুল। কোচের সুনজরে না থাকায় অনেক ঝড়-ঝাপ্টাও গেছে তাঁর ওপর। গত অস্ট্রেলিয়া সিরিজে মুমিনুলকে দলে না নেওয়ায় কম হইচই হয়নি। দল ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পর বিসিবি সভাপতির হস্তক্ষেপে বামহাতি ব্যাটসম্যানকে দলে নেওয়া হয়। হাথুরুসিংহে বিদায় নিয়েছেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর নতুন কোচ স্টিভ রোডস মুমিনুলের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন সিনিয়র খেলোয়াড়দের কাছে।

মুমিনুল রোডসের সুনজরে আছেন কি নেই, সেটি এখনই বোলার সময় হয়নি। কোচদের সঙ্গে মুমিনুলের রসায়নে আদৌ কোনো সমস্যা হয় কি না, সেটি জানা নেই নির্বাচক হাবিবুলেরও, ‘মুমিনুল যদি রান করতে পারত তাহলে খুব ভালো হতো। ওর ব্যাটিং দেখেছি ওয়ানডেতে। সে এখন সম্পূর্ণ ভিন্ন একজন ব্যাটসম্যান। নিশ্চিত নই, ওয়ানডে ব্যাটিংয়ের ভাবনা তাঁর টেস্টের ব্যাটিংয়ে প্রভাব ফেলছে কি না। টেস্ট ম্যাচে কিন্তু ওর কাছ থেকে প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স পাইনি। টেস্টে কিন্তু সে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। এটা অস্বীকার করার নেই, টেস্টে তাঁর ব্যাটিংটা আমাদের খুব দরকার। ওয়ানডেতে আমরা চালিয়ে নিতে পারছি, বিকল্প আছে। কিন্তু টেস্টে মুমিনুলের বিকল্প খুব কম। এই মুহূর্তে তাঁকে আমরা টেস্টেই বেশি বিবেচনা করছি। আর যখন একটা দলে থাকবেন তখন পছন্দ-অপছন্দ সবারই থাকে। এটা নতুন কিছু না। সব কোচের থাকে। মুমিনুল তাদের পছন্দের তালিকায় পড়ে কি না, জানি না। কিন্তু আমাদের পরিকল্পনার কথা পরিষ্কার করলাম।’