যৌন হয়রানি করেছেন ভারতীয় ক্রিকেটের প্রধানও?

যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে জোহরির বিরুদ্ধে। ফাইল ছবি
যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে জোহরির বিরুদ্ধে। ফাইল ছবি
>‘হ্যাশট্যাগ মি টু’ এর সুবাদে তারকাদের নানা সময়ের নানা কলঙ্ক উঠে আসছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। তারকাদের কাছে যৌন হেনস্তার কথা জানিয়ে ভারমুক্ত হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। ক্রিকেটের রথী-মহারথীদের নামও আসছে এসব অভিযোগে

গত বছর হলিউড চমকে উঠেছিল একের পর এক যৌন হয়রানির অভিযোগে। এ বছর বলিউডে শুরু হয়েছে ‘হ্যাশট্যাগ মি টু’র ঝড়। নানা তারকার নাম আসছে এ অভিযোগগুলোয়। এর মাঝেই মামলা হয়েছে, অনেক প্রকল্প আটকে যাচ্ছে অভিযুক্তদের সংশ্লিষ্টতায়। এরই মধ্যে শ্রীলঙ্কার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ও বর্তমান মন্ত্রী অর্জুনা রানাতুঙ্গার বিরুদ্ধে তোলা হয়েছে যৌন হেনস্তার অভিযোগ। লাসিথ মালিঙ্গার বিপক্ষেও ভয়ংকর অভিযোগ উঠেছে। এবার ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাহীর বিরুদ্ধেও উঠেছে যৌন হয়রানির অভিযোগ।

সংবাদমাধ্যম এএনআই দাবি করেছে ভারতীয় ক্রিকেটের প্রশাসক কমিটি (সিওএ) বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাহী রাহুল জোহরির কাছে যৌন হয়রানির ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে। ২০১৬ সালে বিসিসিআইয়ে যোগ দেওয়া জোহরিকে বলা হয়েছে এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে হবে।

‘মি টু’ আন্দোলনের মাঝেও এখনো অনেকেই আছেন যাঁরা সরাসরি নিজেদের নাম প্রকাশ করতে ভয় পাচ্ছেন। অনেকেই সামাজিক হেনস্তার ভয়ে নিজেদের ঘটনা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। তাঁদের সুযোগ করে দিয়েছেন লেখিকা হারনিধ কৌর ও প্লেব্যাক গায়িকা চিন্ময়ী শ্রীপদ। যৌন হেনস্তাকারীদের নাম জানিয়ে সে ঘটনা টুইটারে মেসেজ হিসেবে পাঠিয়ে দিচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। আর সেটা প্রকাশ করছেন তাঁরা। এমনই একটি স্ক্রিনশট দেখিয়েছেন কৌর। সেখানে একজন ভুক্তভোগী দাবি করেছেন, চাকরির কথা বলে বাসায় ডেকে তাঁকে হেনস্তা করেছেন জোহরি। জোহরি তখন এখন শীর্ষ স্যাটেলাইট চ্যানেলের বিক্রয় বিভাগের প্রধান ছিলেন। টুইটারে লেখা সে অভিযোগে বলা হয়েছে,

‘রাহুল জোহরি: বিসিসিআইয়ের বর্তমান প্রধান নির্বাহী, ডিসকভারি চ্যানেলের সাবেক কর্মকর্তা। রাহুল সাবেক সহকর্মী ছিলেন। রাজের বাসায় পার্টিতে, মিডিয়াতে সফল ব্যবসা গড়ার সময় এবং বিভিন্ন চ্যানেলে কাজ করার পুরো সময়টায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।’

মেসেজে দাবি করা হয়েছে, একবার একটি চাকরি নিয়ে আলোচনার সময় জোহরি তাঁকে বাসায় যাওয়ার প্রস্তাব দেন। অভিযোগ দেওয়া নারীর দাবি, জোহরির স্ত্রীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। এর আগে দেখা করেছেন, দুজনকে বাসায় দাওয়াত করে খাইয়েছেন। দুজনে যখন বাসার কাছে পৌঁছালেন, তখন জোহরি পকেট থেকে চাবি বের করতেই সন্দেহ হয়েছিল তাঁর। জিজ্ঞাসা করেছিলেন, স্ত্রী বাসায় নেই এটা কেন জানাননি জোহরি। জবাবে বর্তমান ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তা বলেছিলেন, এটা জানানোর মতো কিছু না। বাসায় ঢুকে পানি চাইলে প্যান্ট নামিয়ে জোহরি এগিয়ে আসেন এবং হয়রানি করেন—এমনটাই অভিযোগ করা হয়েছে।

‘সে ঘটনার দায় এখনো বহন করছি আমি, নিজেকে দোষ দিয়েছি—ভেবেছি আমিই হয়তো নিজেকে আগ্রহী দেখিয়েছি, কিন্তু আমার সেটা মনে হয় না। আমি এখনো এ নিয়ে বিভ্রান্তিতে আছি। বছরের পর বছর আমি নিজেকে ছোট বলেছি। কিন্তু সত্য হলো, এত দ্রুত সে ঘটনা ঘটেছে এবং এত বিশ্রী ছিল ঘটনাটি যে আমার বোঝার উপায়ই ছিল না কী হচ্ছে।’

এ ঘটনায় জোহরি কী ব্যাখ্যা দেন, এর অপেক্ষায় ভারতের ক্রিকেট অঙ্গন।