এ কী অবস্থা জার্মানির!

হল্যান্ডের বিপক্ষে সবচেয়ে বাজে হার জার্মানির। ছবি: এএফপি
হল্যান্ডের বিপক্ষে সবচেয়ে বাজে হার জার্মানির। ছবি: এএফপি
>বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড থেকে বিদায় নেওয়ার পর কোনো পরিবর্তন নেই জার্মানির পারফরম্যান্সে। কাল নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ৩-০ গোল হেরে নতুন বিপর্যয়ের মুখে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

বিশ্বকাপে প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিয়েছিল জার্মানি। সে সময়ই কথা উঠেছিল কোচ জোয়াকিম লোর পদত্যাগের। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জার্মানি জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব পালন করা লোর নতুন করে আর কিছু দেওয়ার নেই—এ ব্যাপারে একমত ছিলেন অনেকেই। কিন্তু কীভাবে যেন লো টিকে গেলেন। জার্মান ফুটবলের শীর্ষ পর্যায়ের আশীর্বাদই ছিল তাঁর সঙ্গে। কিন্তু গত রাতে ইউরোপীয় নেশনস লিগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৩-০ গোলে উড়ে যাওয়ার পর লোর পদত্যাগের দাবিটা উঠেছে নতুন করেই। নতুন শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত কোনো ম্যাচে জয় তো জার্মানি পায়ইনি, করতে পারেনি কোনো গোলও।

আমস্টার্ডামের এই ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের জয়টি মহিমান্বিতই। দীর্ঘ ১৬ বছর পর নেদারল্যান্ডস জার্মানির বিপক্ষে জয় পেল। দীর্ঘ বিরতির পর পাওয়া জয়টা আবার এতটাই একপেশে। লিভারপুল ডিফেন্ডার ভার্জিল ফন ডাইকের হেডের গোলে প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটেই গিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকা ম্যাচটিতে জার্মানি নিজেদের রক্ষণের ভুলে ৮৬ মিনিটে একটি আর যোগ করা সময়ে আরও একটি গোল হজম করে। মেম্সফি ডিপাই আর জর্জিনিয়ো উইনেলডাম গোল দুটি করেন।

কোচ হিসেবে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ জার্মানির ডাগআউটে থাকার রেকর্ডটা দুর্ভাগ্যক্রমে এই ম্যাচেই করেছেন কোচ লো। কিন্তু তাঁর রেকর্ড গড়ার দিনটিই নেদারল্যান্ডস বেছে নিয়েছে জার্মানির বিপক্ষে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয় তুলে নিতে। এর আগে কখনোই জার্মানিকে ৩ গোলের ব্যবধানে হারাতে পারেনি ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে ব্যর্থ কমলা বাহিনী। লোর রেকর্ড গড়ার দিনটি কালো তারিখ হয়েই রইল জার্মান ফুটবলের জন্য।

বিশ্বকাপের পর আর গোল পায়নি জার্মানি। আন্তর্জাতিক ম্যাচে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সবশেষ গোল বিশ্বকাপে সুইডেনের বিপক্ষে টনি ক্রুসের সেই ফ্রি কিকের গোলটি। এরপর ইউরোপীয় নেশনস লিগে ফ্রান্সের বিপক্ষে একটি ম্যাচ গোলশূন্য ড্র করার পর গতকালকের এই হার জার্মান ফুটবলকে নতুন করেই বিধ্বস্ত করেছে। আগাম মঙ্গলবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচটি তাই জার্মানির জন্য বড় পরীক্ষারই। সে ম্যাচে জয় ছাড়া অন্য যেকোনো ফলই জোয়াকিম লোর চাকরি নিয়ে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে জার্মান ফুটবল ফেডারেশনকে।

ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই হারের ব্যাখ্যাই দিয়েছেন লো। জানিয়েছেন তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা, ‘হ্যাঁ, আমি জানি এই হারের পর একটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আমাদের এখন এই বিতর্ক মোকাবিলা করেই এগিয়ে যেতে হবে। পরবর্তী দুই দিন আমি পুরোপুরি ফ্রান্সের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য দলকে প্রস্তুত করায় মনোযোগ দেব। আমি জানি এমন ফলের পর বিতর্ক হতেই পারে। ফুটবলে এটিই স্বাভাবিক। আজকের ম্যাচে আমরা বেশ কিছু গোলের সুযোগ পেয়েছিলাম। কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি।’

ফ্রান্সের বিপক্ষে পরের ম্যাচে জয়ের প্রত্যয়ই ঝরেছে লোর কণ্ঠে, ‘পরের ম্যাচে আমাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে ফ্রান্সের বিপক্ষে লড়তে হবে। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ফিরতি ম্যাচেও ছিনিয়ে আনতে হবে জয়।’