দেশে ফিরলেন সাকিব, মাঠে ফিরবেন কবে?

অস্ট্রেলিয়া থেকে আজ দেশে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। ছবি: শামসুল হক
অস্ট্রেলিয়া থেকে আজ দেশে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। ছবি: শামসুল হক
অস্ট্রেলিয়ায় আঙুলের পরীক্ষা করিয়ে আজ দেশে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। বলেছেন, তাঁর চোট থেকে সেরে ওঠার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা কেউ দিতে পারছেন না। এমনও হতে পারে, তিনি এক মাস পরেই মাঠে নামতে পারছেন। এমনও হতে পারে, মাঠে নামতে তাঁর ছয় মাস লেগে যেতে পারে।

অস্ট্রেলিয়াতে আঙুলের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে আজ দুপুরে দেশে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। বিমানবন্দরে নেমে তাঁর কণ্ঠে ঝরেছে আশাবাদ, আঙুলের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। সেখানে কোনো ব্যথা নেই। আশা করছেন, অস্ত্রোপচার ছাড়াই আবারও নামতে পারবেন মাঠে।

তবে আশার মধ্যেও একটা শঙ্কা তাঁর আঙুল নিয়ে রয়েই গেছে। সেটি ওই অস্ত্রোপচার নিয়েই। অস্ট্রেলিয়ায় চিকিৎসকেরা বলেছেন, অস্ত্রোপচার করানো যাবে না আগামী ৬ থেকে ১২ মাস। বিমানবন্দরে নেমেই জানালেন সাকিব, ‘ইনফেকশন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। কিন্তু সেটি প্রতি সপ্তাহে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে দেখতে হবে ইনফেকশনটা বেড়েছে কি না। এ ছাড়া অন্য কোনো সমস্যাও হতে পারে। ইনফেকশনটা যদি হাড়ের ভেতর থাকে, তাহলে সেটি সেরে ওঠার সম্ভাবনা নেই। হাড়ের ভেতর যেহেতু রক্ত নেই, আর সেখানে যেহেতু অ্যান্টিবায়োটিক পৌঁছায় না, তাই অপেক্ষা করতেই হবে। এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্যই আসলে ৬ থেকে ১২ মাস কোনো অস্ত্রোপচার করানো যাবে না।’

সাকিবকে এখন অপেক্ষা করতেই হবে। তবে কত তাড়াতাড়ি তিনি মাঠে নামতে পারবেন, সেটি নিয়েই ভাবছেন তিনি। তাঁর চোটের সবচেয়ে বড় সমস্যাটা হচ্ছে, এটি কবে ভালো হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা সম্ভব নয়, ‘এটা এমন একটা সমস্যা, যেটা ভালো হওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা কেউ দিতে পারছেন না। এমন হতে পারে, আমি হয়তো পরের মাসেই খেলতে পারব। যেহেতু এই মুহূর্তে আমার হাতে কোনো ব্যথা নেই। এখন ভাবনা হচ্ছে, আমার হাতের শক্তি কখন ফেরে। সেটা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাড়াতাড়ি ফিরেও আসতে পারে। সেটি হলে সামনের মাসেই খেলতে পারি। আবার খেলার পরে যদি কোনো ব্যথা হয়, তাহলে অস্ত্রোপচারের জন্য অপেক্ষা করতেই হবে। পুরো বিষয়টিই অনিশ্চিত। তবে যেহেতু ব্যথা নেই, তাই মনে হচ্ছে অস্ত্রোপচার ছাড়াই খেলতে পারব।’

সাকিব মাঠে ফিরতেই চান, যতটা দ্রুত সম্ভব। তাই অস্ট্রেলিয়াতে থাকতেই হাতের শক্তি ফেরানোর অনুশীলনটা শুরু করে দিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন, ‘হাতের থেরাপিটা যত বেশি করা যাবে, ততই ভালো। আমি আসলে অস্ট্রেলিয়াতে থাকতেই তা শুরু করে দিয়েছি। হাতের আগের শক্তিটা আনারই এখন মূল উদ্দেশ্য।’

অনেকেই বলছেন, সাকিবের বিশ্বকাপটাই নাকি সংশয়ে পড়ে গেছে এই চোটের কারণে। আগামী বছর জুনে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় বিশ্বকাপ নিয়ে সবার সংশয়ের জবাবে সাকিবের কথা একটাই, ‘যেহেতু এই চোট থেকে সেরে ওঠার কোনো নির্দিষ্ট সময়সীমা কেউ দিতে পারছে না, তাই এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারব না। এমনও হতে পারে, আমি পরের মাসেই খেলতে পারি, আবার মাঠে নামতে নামতে ছয় মাসও লেগে যেতে পারে।’

সাকিবের মতো একজন খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। সাকিব নিজে অবশ্য ব্যাপারটি সেভাবে দেখতে চান না। তাঁর মতে, খেলোয়াড়দের চোট থাকতেই পারে। এটি অন্যদের জন্য বড় সুযোগ হয়ে আসতে পারে, ‘আমি না থাকার পরেও তো এশিয়া কাপের ফাইনালে খেললাম। কেবল ক্রিকেট নয়, যেকোনো খেলাতেই খেলোয়াড়েরা চোটে পড়তে পারে। দুই-এক মাসের জন্য মাঠের বাইরে চলে যেতে পারে। তখন কি সেই দলগুলো খেলবে না? তবে এর সুবিধা হচ্ছে, নতুন দুই-একজন খেলোয়াড়ের সুযোগ তৈরি হয় এতে। আশা করি, তারা সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে। সত্যি কথা বলতে কি, কারও জন্য কিছু অপেক্ষা করে না। আমি আশা করি, আমাদের ছাড়াই দল ভালো করবে। আমাকে আর তামিমকে ছাড়া বাংলাদেশ যদি এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলতে পারে, তাহলে জিম্বাবুয়ে ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আমরা জিতব না কেন?’