মাশরাফিদের মনোবিদের ক্লাস করতে হচ্ছে কেন?

২০১৪ সালে মনোবিদের ক্লাসে মাশরাফিরা। ফাইল ছবি
২০১৪ সালে মনোবিদের ক্লাসে মাশরাফিরা। ফাইল ছবি
>মাশরাফি-মুশফিকদের জন্য মনোবিদের ক্লাস আয়োজন করছে বিসিবি। চার বছর আগেও এমন আয়োজন করেছিল বিসিবি, যখন বাংলাদেশ টানা ব্যর্থতায় দিশেহারা। এখন ছবিটা তেমন নেই। দল ভালো খেলছে। তবুও কেন বিসিবি মনোবিদের শরণ নিচ্ছে?

২০১৪ সালের প্রথম চারটা মাস বাংলাদেশ ক্রিকেট হাবুডুবু খেয়েছে ধারাবাহিক ব্যর্থতায়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হার, এশিয়া কাপে বাজে খেলা এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবি—টানা ব্যর্থতায় দিশেহারা বাংলাদেশ ক্রিকেট। ছিল আফগানিস্তান ও হংকংয়ের মতো দলের বিপক্ষে হারের লজ্জাও। মাশরাফি-মুশফিকেরা মানসিকভাবে বিরাট ধাক্কাই খেয়েছিলেন। বেশির ভাগ ক্রিকেটার ছিল না ছন্দে। ক্রিকেটাররা ছন্দ হারিয়ে ফেলায় দল হিসেবে আত্মবিশ্বাসটাও চলে গিয়েছিল তলানিতে।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে টানা ব্যর্থতার পর হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পেতে তখন ক্রিকেটারদের জন্য মনোবিদের ব্যবস্থা করেছিল বিসিবি। ক্রিকেটারদের মনস্তত্ত্ব নিয়ে কাজ করতে এসেছিলেন কানাডা প্রবাসী মনোবিদ আলী আজহার খান। তাঁকে আবারও নিয়ে আসছে বিসিবি। এবার জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে দুই সেশন মনোবিদের সঙ্গে বসবেন মাশরাফিরা। বুধ ও বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মাশরাফি-মুশফিকদের মনের ক্লাস নেবেন আলী খান।

২০১৪ সালে খেলোয়াড়েরা মনস্তাত্ত্বিকভাবে ধাক্কা খেয়েছিলেন বলে বিসিবি মনোবিদ এনেছিল। এখন ছবিটা তো বদলেছে। বাংলাদেশ ধারাবাহিক সাফল্য পাচ্ছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর এশিয়া কাপেও ভালো করেছে। তবুও কেন মনোবিদ আনা হচ্ছে মাশরাফিদের জন্য? বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান বললেন, ‘আমাদের অনেক খেলোয়াড় আলাদাভাবে কাজ করেন তাঁর সঙ্গে। এর আগেও কাজ করেছেন আমাদের সঙ্গে। এবার খেলোয়াড়েরা সবাই চেয়েছে তাঁর সঙ্গে কাজ করতে। আর জুনিয়র যারা দলে আসছে ওদের টেকনিক ভালো। কিন্তু মানসিকভাবে আরও শক্ত হতে হবে। ক্রিকেটে মানসিক শক্তিটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ। মানসিকভাবে শক্ত থাকলে সাফল্য বেড়ে যায়। মনোবিদ যেহেতু বাংলাদেশি, খেলোয়াড়েরা স্বচ্ছন্দে নিজের বিষয় তাঁকে খুলে বলতে পারবে। সব বিবেচনা করে তাঁকে আনছি। আর কানাডায় মনোবিদ হিসেবে অনেক ভালো করছেন।’

মনোবিদের দুই সেশনে আপাতত জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরাই শুধু থাকবেন। তবে জাতীয় লিগের খেলা না থাকলে বাংলাদেশ দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররা আলী খানের ক্লাসে যোগ দিতে পারবেন। আকরাম শুধু মানসিক শক্তির কথা বলছেন, কীভাবে আরও সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা যায় সে বিষয়েও নিশ্চয়ই মনোবিদের পরামর্শ পাবেন তরুণ খেলোয়াড়েরা। স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে শেষ মুহূর্তে আটকে যাওয়ার যে অভ্যাস, সে মানসিক বাধাটাও উতরে যাওয়ার টনিক মিলবে এখানে।