ছেলের রসিকতা সইতে হবে, রান আউট নিয়ে আজহার

রান আউট হওয়ার আগে দারুণ কিছু শট খেলেন আজহার আলী। ছবি: টুইটার
রান আউট হওয়ার আগে দারুণ কিছু শট খেলেন আজহার আলী। ছবি: টুইটার
>

আবুধাবি টেস্টে কাল হাস্যকর সেই রান আউট নিয়ে মুখ খুলেছেন আজহার আলী। জানালেন, উইকেটের মাঝে দাঁড়িয়ে সতীর্থের সঙ্গে তখন কি নিয়ে আলাপ করছিলেন। ওভাবে রান আউট হওয়ায় ছেলের কৌতুকের পাত্র হওয়ার শঙ্কার কথাও জানিয়েছেন পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যান

আজহার আলীর ভাগ্য ভালো। কাল তিনি আউট হওয়ার পর স্টেডিয়ামে এসেছিলেন ইবতিশাম। হাস্যকর সেই রান আউটের সময় ইবতিশাম গ্যালারিতে থাকলে নিশ্চিতভাবেই আজহারের দুঃখটা আরও বাড়ত। ছেলের সামনে অমন শিশুসুলভ ভুলের খেসারত গুণে রান আউট হতে চাইবে না কোনো বাবাই।

তা না ঘটায় আজহারের দুঃখ যে কমেছে তা নয়। ইবতিশাম তাঁর ১০ বছর বয়সী ছেলে। আজহার জানেন, ওই আউটের জন্য দীর্ঘদিন ছেলের সরস কৌতুকের শিকার হতে হবে। ক্রিকেট নিয়ে ছেলেকে কিছু বলতে গেলেই হয়তো সে ওই দুঃস্বপ্ন টেনে আনবে! কাল আবুধাবি টেস্টে তৃতীয় দিনের খেলা শেষে নিজের এই শঙ্কার কথাই জানালেন পাকিস্তানের এই ব্যাটসম্যান, ‘আমার ছেলে এ নিয়ে অনেক দিন রসিকতা করবে। তাঁকে ক্রিকেট নিয়ে কিছু বলতে গেলে নিশ্চিতভাবেই প্রসঙ্গটা টেনে আনবে।’

আবুধাবি টেস্টে কাল তৃতীয় দিনে হাস্যকর সেই রান আউটের জন্ম দিয়েছেন আজহার ও আসাদ শফিক। দিনের খেলার তখন নবম ওভার চলছিল। ব্যক্তিগত ৬৪ রান নিয়ে স্ট্রাইকে আজহার। উইকেটেও বেশ সেট হয়ে গেছেন। পিটার সিডলের তৃতীয় ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে পাঠালেন গালি অঞ্চলে। বাউন্ডারি সীমানার দিকে বলটি যেতে দেখে দুই ব্যাটসম্যানই নিশ্চিত ছিলেন ৪ রান আসবেই। আর তাই উইকেটের মাঝে দাঁড়িয়ে নন স্ট্রাইকের ব্যাটসম্যান আসাদ শফিকের সঙ্গে খোশগল্প (!) করছিলেন আজহার।

দুই ব্যাটসম্যানের কেউ-ই খেয়াল করেননি বলটা বাউন্ডারি সীমানার একেবারে কাছে গিয়ে থেমে গেছে। মিচেল স্টার্ক দৌড়ে গিয়ে বলটা কুড়িয়ে ফেরতও পাঠিয়েছেন উইকেটরক্ষক টিম পেইনের কাছে। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক সম্ভাব্য সুযোগটা আন্দাজ করতে পেরেছিলেন। আর তাই দৌড়ে চলে এসেছিলেন স্টাম্পের কাছে। বলটা গ্লাভসে জমা পড়া মাত্রই তিনি স্টাম্প ভেঙেছেন। আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, আজহার ও শফিক এই দৃশ্য দেখার পরও তাঁদের মধ্যে ক্রিজে ফেরার কোনো তাগাদা ছিল না।

কেন তাগাদা ছিল না? কী এমন কথা বলছিলেন দুজন? হাস্যরস আর তির্যক মন্তব্যের সঙ্গে এসব প্রশ্নও উঠেছে। আজহার তাঁর জবাব দিলেন, ‘আমরা বলের লেট সুইং নিয়ে কথা বলছিলাম। কেউ-ই ভাবতে পারিনি এমন কিছু ঘটতে পারে। স্টার্ক বলটা থ্রো করার সময়েও মাথায় ছিল না কিছু একটা ঘটতে যাচ্ছে। কিন্তু বলটা উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে জমা পড়ার পর বুঝতে পারি মজার কিছু ঘটতে যাচ্ছে।’

আজহার মেনে নিচ্ছেন, ‘অমন রান আউট নিয়ে কোনো অজুহাত চলে না। আমরা দুজনেই বলের ওপর চোখ রাখিনি। স্বাভাবিকভাবেই এভাবেই আউট হওয়ায় খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে দিনটা ভালোভাবে শেষ হওয়ায় এ নিয়ে সতীর্থদের সঙ্গে মজাও হয়েছে।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছিল, নিশ্চিত বাউন্ডারি ভেবে দুই ব্যাটসম্যানের উইকেটের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকার সুযোগ নিয়ে রান আউট করাটা খেলার স্পিরিটের সঙ্গে যায় কিনা? আজহার এই প্রশ্নেরও জবাব দিয়েছেন প্রতিপক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে, ‘মনে হয় না এটা ক্রীড়াসুলভ মানসিকতার বাজে উদাহরণ। সব দায়-দায়িত্ব আমার। নিজের ভুল ছিল। অস্ট্রেলিয়া ঠিক কাজটাই করেছে।’