যে ৭ কারণে চোটে পড়েন ফুটবলাররা

লম্বা মৌসুমে খেলোয়াড়দের মূল লক্ষ্য থাকে চোট থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা যায়।
লম্বা মৌসুমে খেলোয়াড়দের মূল লক্ষ্য থাকে চোট থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকা যায়।
>২৭ নভেম্বর ফেডারেশন কাপ দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে নতুন ফুটবল মৌসুম। লম্বা মৌসুমে কীভাবে খেলোয়াড়েরা চোট থেকে দূরে থাকতে পারেন, এ প্রতিবেদনে সে বিষয়গুলোই তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে

‘ইনজুরি ইজ দা পার্ট অব গেম’, চোট খেলারই একটি অংশ—ক্রীড়াঙ্গনে পরিচিত কথা। বাংলাদেশের ফুটবলারদের চোট আক্রান্ত হওয়ার রেওয়াজটা আরও বেশি। কিন্তু চোটে পড়ার কারণগুলো কী কী, সাধারণত তা জানা থাকে না দেশের ফুটবলারদের। নতুন মৌসুম শুরুর আগে খেলোয়াড়দের জন্য চোট নিয়ে প্রথম আলোর এই আয়োজন।

দেশের ফুটবলের শীর্ষ কয়েকজন কোচের মতে সাধারণত যে কারণগুলোতে চোটে পড়েন ফুটবলাররা:

১. ওয়ার্ম আপ ও কুল ডাউন
অনুশীলন বা ম্যাচ শুরুর আগে ওয়ার্ম আপের গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। কিন্তু দেশের ফুটবলারদের মধ্যে সচরাচর দেখা যায় ওয়ার্ম আপের প্রতি অনীহা। এবার শীত মৌসুমে শুরু হতে যাচ্ছে ফুটবল। সাধারণত যে কোন সময়ের চেয়ে ঠান্ডা আবহাওয়ায় ওয়ার্মআপের গুরুত্ব আরও বেশি। এর মাধ্যমেই শরীর ও মন দুটোকেই অনুশীলন বা পরবর্তী ধাপের জন্য তৈরি করা হয়। এর কাজ শরীরে ধীরে ধীরে রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে পরবর্তী ধাপের জন্য নিজেকে তৈরি করা। এতে মাংস পেশিগুলোতে অক্সিজেন ও রক্ত সরবরাহ বাড়বে এবং কাজ করার গতিও বাড়ে। অনুশীলন শেষে আবার কুল ডাউনের গুরুত্বও অপরিসীম।

২. খাদ্য এবং পুষ্টি

একজন ফুটবলার মাঠে যে শ্রম দেয়, সে অনুপাত খাবার গ্রহণ না করলেই শরীরে ঘাটতি দেখা যায়। আর আমাদের দেশের বেশির ভাগ ক্লাবেরই খাবার মান সম্মত নয়। অর্থাৎ পুষ্টিসম্মত খাবার খাওয়ার তালিকায় থাকে না।

৩. আবহাওয়া এবং জলবায়ু

সাধারণত গরমের সময়ে ফুটবলারদের চোট পাওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। কারণ অল্প পরিশ্রমেই শরীর ঘেমে যায় আর ঘামের সঙ্গে বের হয়ে যায় প্রচুর পরিমাণে খনিজ লবণ। যা খেলোয়াড়কে দ্রুত ক্লান্ত করে ফেলে। আর শরীর ক্লান্ত হলেই মাসল পুলের মতো চোটে ভোগেন খেলোয়াড়েরা।

৪. খেলোয়াড়ের সাজ সরঞ্জাম

ফুটবলারেরা যে বুট ব্যবহার করে থাকেন, সে বুটের কারণেও চোট পেতে পারেন তারা। সাধারণত বুটের শুকতলা শক্ত হলে গোড়ালির ইনজুরিতে পড়েন খেলোয়াড়েরা। মাঠের ওপরেও নির্ভর করে কম না বেশি স্পাইকযুক্ত বুট পড়ে খেলা উচিত।

৫. মানসিক প্রস্তুতি
মানসিক প্রস্তুতির অভাবেও হতে পারে বড় ধরনের চোট। অনেক সময় অনুশীলন করার ইচ্ছে না থাকলেও চাপে পড়ে বা অনিচ্ছা চেপে থেকে অনুশীলনে নামেন ফুটবলাররা। যা ভয়াবহ চোটের কারণ হতে পারে। মন সায় না দিলে কখনো অনুশীলন বা ম্যাচ খেলা ঠিক নয়।

৬. শারীরিক সক্ষমতার অভাব

শারীরিক ভাবে প্রস্তুতি না থাকলে বড় ধরনের ইনজুরি হতে পারে। বাংলাদেশে সাধারণত প্রাক মৌসুম প্রস্তুতি নেওয়া হয় না। অল্প কয়েক দিনের প্রস্তুতিতেই মাঠে নেমে পড়েন ফুটবলাররা। এ ক্ষেত্রে হাঁটুর ইনজুরিতে বেশি পড়েন ফুটবলাররা।

৭. জীবনযাত্রা
সুশৃঙ্খল জীবন যাপনে অভ্যস্ত হতে হয় ফুটবলারদের। অনুশীলন করে পর্যাপ্ত বিশ্রাম না নিলে ও সময় মতো খাবার গ্রহণ না করলে পারফরমেন্সের ওপর প্রভাব তো পড়েই, চোটে পড়ার প্রবণতাও বেড়ে যায়।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই কারণগুলোর সঙ্গে আরও একটি বিশেষ কারণ আছে—খারাপ মাঠ। উঁচু-নিচু ও এবড়োখেবড়ো মাঠের কারণেও অনেক ফুটবলাররা চোটে পড়ে থাকেন।